প্রকাশ : ২৬ আগস্ট ২০২২, ০০:০০
মতলব উত্তরে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের আওতায় দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টিতে আউশ ধান রোপণের ব্যর্থতায় উপজেলার কৃষকরা যখন নিঃস্ব হওয়ার পথে, তখন এ বিষয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। দীর্ঘদিন ধরে কৃষি উদ্যোক্তা পরিষদ মতলব উত্তরের সদস্যরা অনাবৃষ্টিতে আউশ ও আমন মৌসুমের সেচ প্রদানের দাবি তুলে আসলেও কোনোরূপ ফল না পেয়ে ২৫ আগস্ট উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এদিকে উপজেলা সেচ কমিটি ২৪ আগস্ট কৃষকদের আমন মৌসুমে পানি দেয়ার লক্ষ্যে এক সভার আয়োজন করে। সভায় কৃষকদের যৌক্তিক দাবি ও বাস্তবিক প্রয়োজনীয়তার কথা উপলব্ধি করে পানি দেয়ার জন্যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ‘কৃষি উদ্যোক্তা পরিষদ মতলব উত্তর উপজেলা, চাঁদপুর’ সভার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করা হয়। পরদিন সকালে স্বপ্নবিলাস পানি ব্যবস্থাপনা দল ও মতলব উত্তর উপজেলা সিআইজির সভাপতি মোঃ নাসির উদ্দিন সরকার ও কৃষি উদ্যোক্তা পরিষদ মতলব উত্তর উপজেলা, চাঁদপুর-এর আহ্বায়ক মোঃ আতাউর রহমান সরকারের উদ্যোগে এলাকার কৃষকদের নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে সেচ নালা পরিষ্কার করা হয়।
স্বেচ্ছাশ্রমে অংশগ্রহণ করেন ওটারচরের কৃষক ও স্বেচ্ছাসেবী মোঃ কাইয়ুম সরকার, আরিফ সরকার, ইব্রাহিম দেওয়ান, মিলন ভূঁইয়া, খাককান্দা গ্রামের মালেক প্রধান, আবদুর রউফ প্রধান, দুলাল প্রধান, আবদুল হক, হান্নান মিয়া, বৈদ্যনাথপুর গ্রামের কৃষক প্রমুখ।
তাদের সবার একটাই দাবি, আমরা স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করতে রাজি। তবুও আমার এলাকার কৃষক ভাইরা পানি সংকট থেকে উত্তরণ হয়ে দেশের খাদ্য উৎপাদনে ভূমিকা রাখুক এটাই আমাদের সার্থকতা।
এ সময় কৃষি উদ্যোক্তা মোঃ আতাউর রহমান সরকার বলেন, বাংলাদেশের জলবায়ু আকস্মিক পরিবর্তনের ফলে বৃষ্টিপাতের মাত্রা কখনো তীব্র হয়ে ফসল তলিয়ে যায়, আবার কখনো অনাবৃষ্টিজনিত জমি ফেটে চৌচির হয়ে যায়। গত বছর এমন সময়ে অতিরিক্ত বৃষ্টির জন্যে আমরা জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে নিঃস্ব হয়েছিলাম। আর এবার প্রখর খরায় আউশ রোপণ অনেকেই করতে পারিনি। যতটুকু করেছে তাণ্ডও পানির অভাবে সুবিধা হয়নি। এখন আমন নিয়ে সঙ্কটে। এসব কারণে আমরা কৃষকরা সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে শস্য উৎপাদন করতে পারছি না। তবে বৈশ্বিক খাদ্য সঙ্কটে খাদ্যদ্রব্যের দাম ঠিক রাখার জন্যে যে সব অঞ্চলে এমন সেচ প্রকল্প আছে সেসব এলাকায় জরুরি সেচ সুবিধা প্রদানের জন্যে অনুরোধ জানাচ্ছি। আমাদের সেচ কমিটির কার্যক্রমকেও আমরা সাধুবাদ জানাই। সেই সাথে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প জরুরি কর্যক্রম সবসময় চালু রাখার অনুরোধ জানাই।