প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১:৫৭
ফরিদগঞ্জে সড়কের কাজে ধীরগতি, অন্তহীন জনদুর্ভোগ
ফরিদগঞ্জ ওনুআ চত্বর দিয়ে ফরিদগঞ্জ বাজার বা রূপসা সড়কে যেতে জনভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কারণ গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটির অবস্থা খুবই খারাপ। আবার রূপসা রাস্তার মোড় থেকে ফরিদগঞ্জ বাজারের মূল সড়কের মধ্যে ক্রস ড্রেন নির্মাণ হয়েছিল। তবে নির্মাণের পর মাটি ভরাট না করায় এই অংশ দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে যাত্রীদের রূপসা-ব্রহ্মপাড়া সড়কে যেতে হলে ওনুআ চত্বরের ভাঙ্গাচুরা অংশ দিয়েই যেতে হয়। একই অবস্থা কালিরবাজার চৌরাস্তা অংশেও। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কারণে ফরিদগঞ্জ পৌরসভায় চলমান উন্নয়ন কাজের ধীরগতির খেসারত গুনছে পৌরবাসী ও ব্যবসায়ীরা। গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর বেহাল অবস্থার কারণে প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটার সাথে সাথে বাড়ছে অন্তহীন দুর্ভোগ। বছরজুড়ে চলা এই উন্নয়ন কাজ দ্রুত শেষ করার আশ্বাস দিলেও কবে নাগাদ শেষ হবে তার সঠিক সময় বলতে পারছেন না কেউ।
|আরো খবর
জানা গেছে, পৌরসভার নগর উন্নয়ন প্রকল্পের দু’টি প্যাকেজে ২০ কোটি টাকার বেশ কয়েকটি সড়কের ড্রেন নির্মাণ, স্ট্রিট লাইটসহ উন্নয়ন কাজ গত বছর শুরু হয়। কিন্তু প্রথম থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ধীরগতিতে কাজ করছে। বর্তমানে ওনুআ চত্বর থেকে ফরিদগঞ্জ আবিদুর রেজা পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মোড় পর্যন্ত ড্রেন নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখনো সড়কের কাজ শুরু করেনি। অন্যদিকে কালিরবাজার চৌরাস্তার থেকে কালিরবাজার অভিমুখী অংশে ড্রেন নির্মাণের কাজ একমাসের বেশি হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কের কাজ শুরুই করেনি।
স্থানীয়রা জানায়, এই দু’টি সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন, চাকুরিজীবী, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যান। তাদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। এছাড়া কচ্ছপ গতিতে চলমান কাজের মান নিয়েও অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করছে। ৫/৬ জন শ্রমিক দিয়ে এত বড় নির্মাণ কাজ কবে শেষ হবে তা বলা মুশকিল। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসিনতাকেও দায়ী করেন তারা।
ব্যবসায়ীরা জানান, এই দুটি সড়কের কাজ রমজানের পূর্বে শেষ না করলে আমাদেরকে চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। এমনিতেই নানা কারণে ক্রেতারা ফরিদগঞ্জ বাজারমুখি নয়। সড়কের দুর্দশা থাকলে ক্রেতারা এই বাজারে আসবে না।
ফরিদগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সাবেক সভাপতি ফারুকুল ইসলাম বলেন, আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনেই কাজ চলছে। কিন্তু ঢালাই দেয়ার পর কিউরিংয়ের কোনো বালাই নেই। তাছাড়া কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান জানান, সড়কের দুর্ভোগ লাঘব না হলে রমজানে ব্যবসায়ীরা পথে বসবে। আমরা পৌর প্রশাসকের সাথে কথা বলেছি। নির্মাণ কাজের কারণে সড়কের প্রশস্ততা কমে গেছে। তাই দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার দাবি জানাই।
এ ব্যাপারে পৌরসভার নগর প্রকৌশলী সোহেল প্রধান জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজের ধীরগতির জন্য চিঠি দিয়েছি। নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে, তবে জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে চেষ্টা চলছে। পৌর প্রশাসক আমাদের ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে নিয়ে বৈঠক করেছেন। দ্রুত কাজ শেষ করার তাগাদা দিয়েছেন। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুততম সময়ে সড়কগুলোকে যানচলাচল উপযোগী করে তোলার জন্য।
পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভুমি) এ. আর. এম জাহিদ হাসান বলেন, দ্রুত নির্মাণ কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এবং প্রকৌশল বিভাগকে তাগিদ দেয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা জানান, বিষয়টি আমারও দৃষ্টিগোচর হয়েছে। পৌর প্রশাসককে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি।