মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২২ জুলাই ২০২২, ০০:০০

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে ব্যাপক অপপ্রচার চলছে
অনলাইন ডেস্ক

শিক্ষামন্ত্রী ডা” দীপু মনি বলেছেন, সত্যতা যাচাই না করে আবেগের বশবর্তী হয়ে আমরা কোনো একটি তথ্য অন্যের সঙ্গে শেয়ার করি বা কমেন্ট করি। আমরা হয়তো চিন্তাও করতে পারছি না, এই শেয়ার কিংবা কমেন্টের কারণে কোনো ব্যক্তি, তার পরিবার, কোনো একটি প্রতিষ্ঠান বা সম্প্রদায়ের জীবন, সম্মান, সম্পদ মুহূর্তে বিনষ্ট হয়ে যেতে পারে। কাজেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

২১ জুলাই বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এতোদিন আমরা সংখ্যার দিকে নজর দিয়েছি। এখন আমরা গুণগত মানের দিকে নজর দিচ্ছি।

নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে এক শ্রেণি অপপ্রচারে ব্যস্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে ব্যাপক অপপ্রচার চলছে। বলা হচ্ছে, নতুন শিক্ষাক্রমে ধর্ম শিক্ষাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আমরা দায়িত্ব নিয়েই বলছি, যে অপপ্রচার চলছে, সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা, মূল্যবোধ শেখাতে চাই। ধর্মকে বাদ দিয়ে তো নয়। কাজেই ধর্মশিক্ষা বাদ দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। এটা নিয়েও অপপ্রচার চলছে। অবশ্য আমাদের দেশে অপপ্রচার করতে হলে বিশেষ করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে যদি হয়, প্রায়ই ধর্মকে ব্যবহার করা হয়। এখানেও তার ব্যতিক্রম নয়।

দীপু মনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক বিষয় পড়ানো হয়। তবে আমি মনে করি, একজন শিক্ষার্থী যে কোনো ডিসিপ্লিনে পড়ুক না কেন, কয়েকটি বিষয় অবশ্যই পড়া দরকার; সেগুলো হলো- ভাষা, সাহিত্য, আইসিটি, দর্শন এবং ইতিহাস, বিশেষ করে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস। কারণ একজন শুধুমাত্র একটিমাত্র ডিসিপ্লিনে পড়লে তার মধ্যে মানবিকতা, সৃজনশীলতা, সংবেদনশীলতার জায়গাগুলোতে ঘাটতি থেকে যায়।

সমাবর্তন বক্তার বক্তব্যে খ্যাতনামা পদার্থবিদ, লেখক ও কলামিস্ট অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেছেন, যে প্রযুক্তিটি তোমার কাজকর্মের জন্য ব্যবহার করা প্রয়োজন অবশ্যই তুমি সেটি ব্যবহার করবে, কিন্তু উল্টোটি যেন না হয়। প্রযুক্তি যেন তার প্রয়োজনে কখনও তোমাকে ব্যবহার না করে।

তিনি বলেন, আমাদের চার পাশে তথ্য প্রযুক্তির অতিকায় দানবরা সবাইকে তাদের নেটওয়ার্কের আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলেছে। ইন্টারনেটের কানাগলিতে আমাদের একাধিক প্রজন্ম হারিয়ে গেছে। চার পাশে তথ্য এবং তথ্য। হয় আমি দিচ্ছি না নিচ্ছি। আমার নিজের সম্পর্কে আমি যতটুকু জানি তথ্যপ্রযুক্তির অতিকায় প্রতিষ্ঠান তার চাইতে বেশি জানে।

তিনি বলেন, সোশ্যাল নেটওয়ার্ক নামে বিচিত্র মাদকে সবাই আসক্ত। কোভিডে ঘরে বসে অনলাইন ক্লাস করতে গিয়ে অসংখ্য শিশু স্মার্ট ফোনে আসক্ত হয়ে গেছে। ডাইনিং টেবিলে বসে ছোট ছেলেটি সিগারেট খেলে আমরা আতংকে চমকে উঠবো, কিন্তু স্মার্ট ফোনে ইউটিউব-ফেসবুকে মগ্ন হয়ে থাকলে আমরা কিছুই মনে করবো না, যদিও দুটোর মাঝে মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই, দুটিই আসক্তি। কাজেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যে আমি বিষয়টি তোমাদের হাতেই ছেড়ে দিচ্ছি। তোমরা কী স্মার্ট ফোন নোটবুক এবং টেলিভিশনের স্ক্রিনের দিকে তাকাবে নাকি তোমার পাশে রক্ত মাংসের জীবন্ত একজন মানুষের দিকে তাকাবে?

জাফর ইকবাল বলেন, এখন পৃথিবীতে তথ্য সবচেয়ে বেশি মূল্যবান বস্তু তাই সফটওয়্যারের দানবেরা এখন তাদের সমস্ত শক্তি ব্যবহার করছে তোমার ভেতর থেকে শেষ তথ্যটি বের করে নেওয়ার জন্য! শুধু তোমার ব্যক্তিগত তথ্য হয়তো আলাদাভাবে এমন কিছু মূল্যবান নয় কিন্তু যখন তোমার মতো লক্ষ কোটি মানুষের তথ্য তাদের হাতে পৌঁছে যায় তখন পৃথিবীটাকে ওলট পালোট করে ফেলা যায়।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি ও সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য কর্তৃক প্রদত্ত ক্ষমতাবলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম এবং উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম মফিদুল ইসলাম। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মেজর জেনারেল (অবঃ) কাজী ফখরুদ্দীন আহমেদ। সূত্র : ঢাকা পোস্ট।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়