শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০

আমাদের সন্তানদেরকে নীতি-নৈতিকতা ও দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ করতে হবে
বিমল চৌধুরী ॥

চাঁদপুর জেলা শহরের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বিদ্যাপীঠ ডিএন (দ্বারকানাথ) উচ্চ বিদ্যালয়ের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে কৃতী শিক্ষার্থী কর্তৃক মা-বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন অনুষ্ঠান। ‘আমার প্রতিষ্ঠান আমার ভালোবাসা’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে গতকাল ৫ ডিসেম্বর সকালে বিদ্যালয় মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসন অলঙ্কৃত করেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভপতি বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ এসএম সহিদউল্যাহর সভাপ্রধানে প্রধান অতিথি অঞ্জনা খান মজলিশ শিক্ষার্থীদেরকে পড়ালেখার পাশাপাশি মানবিক শিক্ষাগ্রহণে উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে আয়োজকদের এমন সুন্দর আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, আমি আমার দায়িত্ব পালনে অনেক জেলায় কাজ করেছি। কিন্তু সন্তানদেরকে বাবা-মায়ের প্রতি করণীয় সম্পর্কে অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তাদেরকে উৎসাহিত করা কোথাও দেখিনি। অনুষ্ঠানটি সত্যিই খুবই প্রশংসনীয়। তিনি আরো বলেন, আমরা আমাদের ছেলে-মেয়েদেরকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, জজ-ব্যারিস্টার, আইনজীবী বানাবার লক্ষ্যে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে চলছি। কখনো কি তাকে ভালোমানুষ বানাতে শিক্ষা দিচ্ছি? আমরা তাকে উচ্চশিক্ষিত করলাম। অথচ সে সন্তান বাবা-মায়ের প্রতি, শিক্ষকদের প্রতি, বড়দের প্রতি সম্মানবোধ দেখালো না, তার দেশের প্রতি দেশাত্মবোধ জাগ্রত হলো না, দেশের মানুষের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা রইলো না। তাহলে তাদের এ শিক্ষা গ্রহণের মূল্য কোথায়?

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে আরো বলেন, আজ অনেক ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাচ্ছি, বাবা-মায়ের স্থান হচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমে। পরিবার-পরিজনদেরকে ছেড়ে বৃদ্ধাশ্রমে থাকার জন্যেই কি বাবা-মা তাদের সন্তানদেরকে উচ্চশিক্ষিত করেছেন? তাদেরকে মানুষ করার চেষ্টা করেছেন? তাহলে কেন এমন হচ্ছে তা আমাদেরকে ভাবতে হবে। চিন্তা করতে হবে এজন্যে দায়ী কে? আর এক্ষেত্রে আমি বলবো, এজন্য দায়ী বাবা-মা, শিক্ষক, অভিভাবক। কারণ তারা সন্তানদেরকে শিক্ষিত করতে শিক্ষা দিয়েছেন, উচ্চ ডিগ্রি গ্রহণে সহায়তা করেছেন, কিন্তু মানুষ হতে শিক্ষা দেননি। যদি দিতেন তাহলে হয়তো এমনটা হতো না। তিনি সন্তানদেরকে নীতি-নৈতিকতা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধকরণ শিক্ষাদানে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, সন্তানদেরকে শুধু উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করলেই হবে না, তাদেরকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। ভালো মানুষ হওয়ার প্রেরণা যোগাতে হবে, বড়দের সম্মান ও দেশের মানুষের প্রতি করণীয় সম্পর্কে জ্ঞাত করতে হবে। যদি তা পারি তাহলে আমি, আপনি, দেশ-দেশের মানুষ সকলেই উপকৃত হবে। সন্তান যদি দেশপ্রেমিক মানুষ হয়, তাহলেই সোনার বাংলা গড়ে উঠবে। এজন্যে বাবা-মাকে সচেতন হতে হবে সর্বাগ্রে। কারণ আমি-আপনি কারো না কারো বাবা-মা। তাই আমাদের করণীয় অনেক অনেক বেশি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ কামাল হোসেন। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও গীতা পাঠের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা শেষে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহম্মদ হোসেন।

অতিথিদের মাঝে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা স্কাউট সম্পাদক ও মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক অজয় কুমার ভৌমিক, চাঁদপুর গণি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্বাসউদ্দীন ও চাঁদপুর লেডী দেহলভী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইলিয়াস মিয়া। অনুভূতি প্রকাশ করে শিক্ষার্থীদের মাঝে বক্তব্য রাখেন মোঃ ইয়াছিন বেপারী, মোঃ রায়হান ও অভিভাবক শাহনাজ বেগম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিদ্যালয়ের ছাত্র মোঃ খালেদ হাসান রাফি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সহকারী শিক্ষক সুজিত চক্রবর্তী, উত্তম কুমার দাস, মোঃ আমিনুল ইসলাম, মোঃ ওসমান গনী পাটওয়ারী, রুমানা বারী, সেলিনা সুলতানা, জান্নাতুল ফেরদৌস, কৃতী খেলোয়াড় সেলিম আহম্মদ টুকু, বাপ্পী পালসহ শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে বৃক্ষরোপণ কার্যকক্রম, পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন, সুশৃঙ্খলাবোধ, মুক্তিযোদ্ধা কর্নার নির্মাণে সহযোগিতা প্রদান করায় বিশেষত ভালো কাজে উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়।

প্রধান অতিথি অঞ্জনা খান মজলিশ অনুষ্ঠানস্থলে আসলে প্রধান শিক্ষকসহ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি তাঁকে স্বাগত জানান। প্রধান অতিথি বিদ্যালয়ে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু কর্নার ঘুরে ফিরে দেখে দেখেন এবং সন্তোষ প্রকাশ করেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়