রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জের লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩ : এলাকায় আতঙ্ক
  •   শিক্ষা খাতে নজিরবিহীন রদবদল: একযোগে চার বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওএসডি
  •   মধ্যরাতের আতঙ্ক
  •   চীনা সেনাদের ভারতের অরুণাচলে অনুপ্রবেশ: বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে
  •   আপনার টাকা কোথায় গেল?

প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০

চান্দ্রায় নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বী আনারস ও হাতপাখা

চান্দ্রায় নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বী আনারস ও হাতপাখা
মিজানুর রহমান ॥

আগামী ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠেয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চাঁদপুর সদর উপজেলার ১২নং চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করছেন ভোটপ্রার্থীরা। তবে এ নির্বাচনে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি না আসায় তেমন জমে উঠছে না নির্বাচনী আমেজ। আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান খান জাহান আলী কালু পাটওয়ারীর নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা, গণসংযোগ ও কর্মীসভা বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইউনিয়নবাসী। নৌকার প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ জানাতে এবারও চেয়ারম্যান পদে লড়াই করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা আবদুর রহমান বেপারী। তিনি নির্বাচন করছেন আনারস প্রতীক নিয়ে।

চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে আরো আছেন চরমোনাই পীরের বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন মনোনীত হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মাওঃ মজিবুর রহমান মিয়াজী। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আছেন মোঃ মুকবুল মাঝি, তার মার্কা ঘোড়া।

ভোটারদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ৪ জন থাকলেও মূলত নৌকার সাথে লড়াই হবে স্বতন্ত্র প্রার্থীর আনারস ও চরমোনাই পীরের হাতপাখার।

নির্বাচনকে ঘিরে ইউনিয়নের হাটে-ঘাটে, চা স্টলে চলছে জানা আলাপ-আলোচনা। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্যরাও ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভোট প্রার্থনা করছেন। প্রতিটি গ্রামের অলি-গলিতে সব প্রার্থীরই ব্যানার, পোস্টার ও লিফলেট চোখে পড়ছে। সব মিলিয়ে জমে উঠছে প্রচারণা।

চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, চান্দ্রা ইউনিয়নের মোট ভোটার ২৪ হাজার ৬৫২। এর মধ্যে পুরুষ ১৩ হাজার ২১৬ এবং নারী ভোটার ১১ হাজার ৪৩৬।

এ ইউনিয়নটি হানারচর, ১০নং লক্ষ্মীপুর ও বালিয়া ইউনিয়নের পাশে অবস্থিত। পার্শ্ববর্তী হাইমচর ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা ঘেঁষে এ ইউনিয়ন। এর উপর দিয়েই হাইমচর যেতে হয়। চাঁদপুর-শরীয়তপুর ফেরি অভিমুখী সড়ক এ ইউনিয়ন হয়ে ফরিদগঞ্জে গিয়ে মিলিত হয়েছে। চান্দ্রার বাখরপুর গ্রামটি মেঘনার ভাঙ্গনকবলিত। কৃষিসমৃদ্ধ এলাকা হিসেবে এ গ্রামটি ইউনিয়নের প্রাণ।

চান্দ্রা অনেক পুরানো ইউনিয়ন হলেও আধুনিক ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে এ যাবৎ গড়ে ওঠেনি। চান্দ্রা বাজারের পুরাতন একতলা একটা বিল্ডিংয়ের মধ্যেই চলে আসছে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম।

এই ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক দেয়া হয় খান জাহান আলী কালু পাটওয়ারীকে। তিনি শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। চান্দ্রা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এর আগের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বিএনপি সরকারের সময়েও তিনি চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। ২০০৬ সালে নির্বাচিত হন জেলার শ্রেষ্ঠ ইউপি চেয়ারম্যান।

এবার তার হ্যাট্রিক করার পালা। দীর্ঘদিন চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ ও দ্বন্দ্ব রয়েছে তার প্রতি। অপরদিকে সাধারণ ভোটাররা আছেন অনেকেটাই নিশ্চুপ। নির্বাচন নিয়ে তাদের নেই কোনো মাথাব্যথা।

খান জাহান আলী কালু পাটওয়ারী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও দেশরতœ শেখ হাসিনা আমাকে আবারো নৌকা প্রতীক দিয়েছেন। আমি প্রধানমন্ত্রী এবং আমার প্রাণপ্রিয় নেত্রী শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপির প্রতি কৃতজ্ঞ। নির্বাচিত হলে ইউনিয়নবাসীর কল্যাণে এবং এলাকার উন্নয়নে অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্ন করবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি আরো বলেন, এলাকার উন্নয়ন, সন্ত্রাস, মাদক, ইভটিজিংমুক্ত সুন্দর চান্দ্রা ইউনিয়ন গড়াই আমার প্রধান লক্ষ্য।

অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রহমান বেপারী বলেন, আমার বাড়ি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডস্থ মদনা গ্রামে। আমি এ নিয়ে তিনবার নির্বাচন করছি। এলাকার জনগণ আমাকে আবারো প্রার্থী করেছে। কারণ ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ড নিয়ে মদনা গ্রাম। বিগত ৪০/৪১ বছরে তারা তাদের এলাকার চেয়ারম্যান পায়নি। তবে ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে যদি পারে এবং সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন যদি হয়, তবে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হওয়ার আশা ব্যক্ত করেন এ প্রার্থী।

তিনি সুষ্ঠু ও সুন্দর একটি নির্বাচন উপহার দেয়ার জন্যে জেলা-উপজেলা প্রশাসন এবং চান্দ্রার দায়িত্বে থাকা নির্বাচনী কর্মকর্তাদের প্রতি জোর দাবি জানান।

অপর প্রার্থী ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখার প্রার্থী মাওলানা মজিবুর রহমান বলেন, ইউনিয়নবাসী চায় সুন্দর একটি নির্বাচন। ভোটাররা যেনো নির্বিঘেœ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে সেই পরিবেশ তৈরির দায়িত্ব প্রশাসন এবং নির্বাচন কর্মকর্তাদের।

তিনি আরো বলেন, চান্দ্রাবাসী পরিবর্তন চায়। তারা অন্যায়-অনিয়মের বিরুদ্ধে শান্তি ও শৃঙ্খলার প্রতীক হাতপাখার দিকে তাকিয়ে আছে।

ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুকবুল মাঝি বলেন, আমি ইউনিয়নের দক্ষিণ বালিয়া এলাকা থেকে প্রার্থী হয়েছি। তরুণ প্রার্থী হিসেবে জনগণ ঘোড়া মার্কায় ভোট দিবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়