শনিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জের লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩ : এলাকায় আতঙ্ক
  •   শিক্ষা খাতে নজিরবিহীন রদবদল: একযোগে চার বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওএসডি
  •   মধ্যরাতের আতঙ্ক
  •   চীনা সেনাদের ভারতের অরুণাচলে অনুপ্রবেশ: বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে
  •   আপনার টাকা কোথায় গেল?

প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০

কচুয়ার গৃহহীনদের স্বপ্নপূরণ হলেও অনেকেই কর্মহীন
স্টাফ রিপোর্টার ॥

কচুয়ার বিভিন্ন এলাকায় বেশ ক’টি পরিবার যাদের কেউ বিধবা, কেউ তালাকপ্রাপ্ত, কারো স্বামী অসুস্থ, সন্তানদের নিয়ে অতি কষ্টে কাটছিল যাদের জীবন, সামান্য আয়-রোজগার করতে পারলেও থাকা-খাওয়ার জায়গার নিশ্চয়তা ছিল না তাদের। এমন ৪৮টি পরিবার যাদের নিজস্ব সামান্য জায়গা আছে অথচ তাদের ঘর নেই, সেসব পরিবারের হয়েছে স্বপ্ন পূরণ। তারা পেয়েছে টেকসইভাবে তৈরি করা চমৎকার ঘর। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের মাধ্যমে কচুয়া উপজেলা প্রশাসন এই গৃহগুলো নির্মাণ করে দেয় তাদের। তারা ঘর পেয়ে খুশি, তবে অনেকে বেকার। চলতি সময়ে কাজ না থাকায় পরিবার নিয়ে কিছুটা কষ্টে আছে বলে অনেকে জানান। তারা এখন স্বপ্ন দেখছে সামান্য কর্মসংস্থানের। তাহলে আর তাদের কোনো দুঃখ থাকবে না।

সরজমিনে উপজেলার নলুয়া, সাতবাড়িয়া, মনপুরা, কাদলা গ্রাম ঘুরে ও নিবাসীদের সাথে কথা বলে তাদের বেশ খুশি দেখা যায়। দুই শতাংশের ভূমিতে প্রতি পরিবারকে দেয়া ঘরগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে গাঢ় লাল কালারের উন্নত মানের টেকসই টিন। এসব বাড়িতে রয়েছে একটি রান্নাঘর, শৌচাগার। রয়েছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও। নিজেদের মত করে ঘর সাজিয়ে নিয়েছেন তারা। সাতবাড়িয়া গ্রামের মিন্টু মিয়া জানান যে, এতোদিন ঘর ছাড়া ছেলে-মেয়েদের নিয়ে খুব কষ্টে কাটিয়েছেন। বিনা খরচে ঘর পেয়ে তার কষ্টের অবসান হওয়ায় তিনি মহাখুশি। নলুয় গ্রামের নিবাসী হুমায়ুনের স্ত্রী নার্গিসের স্বামী হকারি করেন। ছোট দুই ছেলে নিয়ে সংসার। এতদিন অন্যের ঘরে থাকতেন। এখন নিজের ঘর হয়েছে। খুব খুশি হয়ে মহান আল্লাহর কাছে শোকরিয়া আদায়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান।

ওই গ্রামের নবম শ্রেণির ছাত্রী সুখতারা সূত্রধর আবেগআপ্লুত হয়ে বলেন, দুই বোন এক ভাইসহ আমাদের পরিবারটি ঘর না থাকায় খুবই কষ্টে কাটছিল এতেদিন। এখন খুব সুন্দর একটা ঘর পেয়ে সেখানে ছোট ভাই-বোন নিয়ে পড়ালেখা করতে পারছি। একই এলাকার প্রয়াত দিলীপ সূত্রধরের স্ত্রী রিনা রাণী সূত্রধর বলেন, ঘর না থাকায় এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে কেটেছে এতদিন। তিনি বলেন, জীবনে অনেক কষ্ট করেছি। বঙ্গবন্ধু কন্যা ঘর কইরা দিছে। আমার একটা ঠিকানা হইছে এখন। প্রধানমন্ত্রীর জন্য ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি। এভাবে সাতবাড়িয়া গ্রামের মিন্টু মিয়া, পালাখালের আঞ্জুমান বেগম, বিতারা গ্রামের নাসির, কাদলা গ্রামের জিসান, মাছনিগাছা গ্রামের ছায়ারাণীসহ বিভিন্ন গ্রামের অন্যরাও চমৎকার একটি ঘরের মালিক হতে পেরে বেশ আনন্দিত। ঘর পাওয়া নিবাসীদের আকুতি সামান্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিলে তাদের না খেয়ে আর থাকতে হবে না। দেশের নানা স্থানে ঘর নিয়ে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিলেও কচুয়ায় এ পর্যন্ত কোনো প্রকার সমস্যা দেখা দেয়নি। এতে কর্মরত প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে দেখা যায়।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইঞ্জিঃ আশেকুর রহমান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর ঘরগুলো ডিজাইন মোতাবেক বাস্তবায়ন করা হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের যারা ঘর পেয়েছে তারা এখন সুন্দরভাবে বসবাস করতে পারছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপায়ন দাস শুভ বলেন, যথাযথভাবে যাছাই-বাছাই করে এক লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয়ে সেমিপাকা ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। উপজেলা টাস্কফোর্সের সমন্বয়ের মাধ্যমে এসব ঘরের অধিবাসীদের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। সর্বোচ্চ সতর্কতা ও সঠিক তদারকির মাধ্যমে এসব গৃহ নির্মাণ করা হয়। এখন পর্যন্ত কোনো প্রকার অভিযোগ পাননি বলে তিনি জানান।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়