শনিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জের লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩ : এলাকায় আতঙ্ক
  •   শিক্ষা খাতে নজিরবিহীন রদবদল: একযোগে চার বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওএসডি
  •   মধ্যরাতের আতঙ্ক
  •   চীনা সেনাদের ভারতের অরুণাচলে অনুপ্রবেশ: বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে
  •   আপনার টাকা কোথায় গেল?

প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০

মানবতার দৃষ্টান্তে সমুজ্জ্বল ৮ জমিদারের নাতি হাজী মোঃ কাউছ মিয়া
স্টাফ রিপোর্টার ॥

বাংলাদেশে তাঁকে বলা হয় দানবীর। যিনি মানবতার সেবকের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। তিনি মানবিকতা দিয়ে মানুষের হৃদয় জয় করেছেন। সৎভাবে ব্যবসা করে দেশের শ্রেষ্ঠ করদাতার খ্যাতি পেয়েছেন অনেকবার। তিনি হচ্ছেন দেশসেরা করদাতা চাঁদপুরের কৃতী সন্তান, সর্বজনশ্রদ্ধেয় ব্যবসায়ী হাজী মোহাম্মদ কাউছ মিয়া।

১৯৩১ সালের ২৬ আগস্ট কাউছ মিয়া রাজরাজেশ^রে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম হাজী আব্বাস আলী মিয়া ও মাতা মরহুমা হাজী মোসাম্মৎ ফাতেমা খাতুন (জমিদার কন্যা)। তখনকার সময় ভারতবর্ষের ত্রিপুরা ডিস্ট্রিক্ট ছিল পূর্বে আগরতলা ও পশ্চিমে কলকাতা পর্যন্ত। তিনি যে বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তৎকালীন আমলের সামুগাদী চরবাহাদুর গ্রামে কাউছ মিয়ার বাবার শুধু বাড়িটিই ছিলো ৮৩৭ শতাংশ জমি নিয়ে। আর তাদের শত শত বিঘা কৃষিজমিতো ছিলোই।

৮ নানা ছিলেন জমিদার। জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হবার পর ১৯৫৬ সালে সরকার প্রত্যেক জমিদারকে ১শ’ একর করে জমি বুঝিয়ে দেয়। কাউছ মিয়ার বড় বাবা নানার পিতা আজগর দেওয়ান। তিনি ছিলেন ১৭০০ সালের প্রতাপশালী জমিদার। তার ছিল ৭ ছেলে ১ মেয়ে। ৯২ বছরে পা রাখা কাউছ মিয়ার বয়স একানব্বই পার হলেও তিনি এখনো প্রাণবন্ত। কাউছ মিয়া মনে করেন, মানুষ যদি শরীর ও মনের দিক থেকে সুস্থ থাকে, সেটি আল্লাহর নেয়ামত। আল্লাহর রহমত ছাড়া কেউ সুস্থ থাকতে পারে না।

তিনি বলেন, রাব্বুল আলামিনের কাছে শোকরিয়া, আল্লাহ আমাকে অনেক সম্মান দিয়েছেন। এখনো প্রতিদিন তিনি ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা নিজেই ব্যবসা পরিচালনা করেন। ১৯৫০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত টানা ৭১ বছর এককভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে অর্জন করেছেন স্বাধীনতার আগে এবং পরে সিআইপি মর্যাদার সর্বাধিক ১৮বার রাষ্ট্রীয় পুরস্কার। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরেও ব্যবসায়ী ক্যাটাগরিতে দেশসেরা করদাতার ১ নাম্বার মনোনীত হয়ে ট্যাক্সকার্ড ও সম্মাননা পেয়েছেন। ২০২১ সালে মুজিববর্ষের সেরা চমক ছিলেন কাউছ মিয়া। কেননা তিনি মুজিববর্ষে সারা বাংলাদেশের মাত্র একজনই দেশসেরা করদাতা নির্বাচিত হয়েছেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে কর প্রদানে সততা, আন্তরিকতা ও স্বপ্রণোদনার স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে জাতীয় রাজস্ব খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় দেশসেরা করদাতার অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কাউছ মিয়াকে নিরাপত্তার জন্য একটি রিভালবার লাইসেন্স প্রদান করেন (যার নং-১৪)। তিনি সেই রিভালবারটি বয়সের কারণে নিজের ইচ্ছায় ২০১৮ সালে পুরান ঢাকার বংশাল থানায় সরকারি নিয়ম অনুুযায়ী জমা দেন।

হাজী মোঃ কাউছ মিয়া গুলশান-বনানী, মতিঝিলের ডাকসাইটেট ব্যবসায়ীদের পেছনে ফেলে পুরাণঢাকার ঘুপচি গলির ব্যবসায়ী হয়েও প্রতি বছর সর্বোচ্চ করদাতা হন। প্রতিবারই শীর্ষ করদাতাদের তালিকায় তাঁর নাম থাকছে সবার উপরে। অবশ্য অন্য শ্রেণির ব্যবসায়ীগণ প্রতিবছর সর্বোচ্চ যে পরিমাণ টাকার কর দেন, কাউছ মিয়ার ধারে কাছেও নেই তারা। কাউছ মিয়া ৬৪ বছর ধরে কর দিয়ে আসছেন। ১৯৫৮ সালে প্রথম কর দেন তিনি। কেনো কর দেয়া শুরু করলেন, এর ব্যাখ্যাও তিনি দিয়েছেন। ২০১৯ সালে এনবিআরের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, ‘আগে টাকা-পয়সা এখানে-সেখানে রাখতাম। এতে নানা ঝামেলা ও ঝুঁকি থাকতো। ১৯৫৮ সালে প্রথম কর দিয়ে ‘ফ্রি’ হয়ে গেলাম। এরপর সব টাকা-পয়সা ব্যাংকে রাখতে শুরু করলাম। হিসাব-নিকাশ পরিষ্কার করে রাখলাম।’

১৯৬৭ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে এক নম্বর করদাতা হয়েছিলেন কাউছ মিয়া। তাঁর বাবা চাইতেন না তিনি ব্যবসা-বাণিজ্যে নামেন। বাবার ইচ্ছা ছিলো ছেলে পড়াশোনা চালিয়ে যাবে। অথচ ব্যবসায় মন পড়ে থাকা কাউছ মিয়া ১৯৪৫ সালে অষ্টম শ্রেণি পাস করে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হলে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের দামামায় আর পড়াশোনা এগোয়নি। পুরাণবাজার মধুবাবুর স্কুলে পড়েছেন তিনি। ওই স্কুলের পাশেই তাঁর নানা জমিদার মৌলভী আব্দুস সালাম সাহেবের বাড়ি। কাউছ মিয়া তাঁর বাবার অনিচ্ছা সত্ত্বেও মায়ের কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে ১৯৫০ সালে চাঁদপুরের পুরাণবাজারে স্টেশনারী ব্যবসা দেন। দেশের প্রসিদ্ধ এই বাণিজ্যিক এলাকায় তৎকালীন সময় ক্রমশ তার ৬টি দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে। এরপর ধীরে ধীরে ১৮টি ব্র্যান্ডের সিগারেট, বিস্কুট ও সাবানের এজেন্ট হন তিনি। পরের ২০ বছর তিনি চাঁদপুরেই ব্যবসা করেন। ১৯৭০ সালে নারায়ণগঞ্জে চলে আসেন এবং তামাকসহ অন্যান্য ব্যবসা শুরু করেন। ৪০ থেকে ৪২ ধরনের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত (তৎকালীনসহ বিভিন্ন সময়ে)।

একবার কাউছ মিয়া আমদানির ব্যবসায় নামতে লাইসেন্স নিয়েছিলেন। এ ব্যবসায় মন না চাওয়ার কারণে লাইসেন্স বাতিল করিয়ে নেন। নদীপথে পণ্য পরিবহনের জন্যে বেশ কিছু কার্গো জাহাজ রয়েছে ছেলেদের নামে। জাহাজগুলো তারাই দেখাশোনা করেন। ছেলেদের প্রত্যেকের নামে ইনকাম ট্যাক্সের ফাইল রয়েছে।

হাজী মোঃ কাউছ মিয়ার বড় বাবার নাম হাজী মোঃ মুসলিম মিয়া বেপারী, দাদার নাম হাজী মোঃ সবদ আলী মিয়া বেপারী (সবদ হাজী)। পিতার নাম হাজী মোঃ আব্বাস আলী মিয়া বেপারী ও মাতা জমিদার কন্যা মোসাম্মৎ ফাতেমা খাতুন। তাঁরা কেউ বেঁচে নেই। তাঁদের বাড়ির বেশ নামডাক ছিলো। এক নামে হাজী বাড়ি হিসেবে চিনত সবাই। তাঁর দাদারা ছিলেন ৬ ভাই। তাঁরা পায়ে হেঁটে পবিত্র হজ্বব্রত পালন করেছেন। তখন হজ্বে যেতে সময় লাগতো ৬ মাস, এখন সময় লাগছে ৬ ঘণ্টা।

কাউছ মিয়ার বড়বাবা অর্থাৎ নানার পিতা আজগর দেওয়ান। তিনি ছিলেন সতেরশ’ সালের ত্রিপুরা ডিস্ট্রিক্টের প্রতাপশালী জমিদার। আজগর দেওয়ানের ৭ ছেলে ও ১ মেয়ে। উত্তরাধিকার হিসেবে ছেলেমেয়ে আটজনই ছিলেন জমিদার। আজগর দেওয়ানের কনিষ্ঠ পুত্র জমিদার মৌলভী আব্দুস সালাম। ১৮৬৫ সালে তিনি কোলকাতা আলীগড় বিশ^বিদ্যালয় থেকে টাইটেল পাস করেন।

কাউছ মিয়া তাঁর ব্যবসায়িক জীবনে কখনো কোনো ব্যাংক বা ব্যক্তির নিকট হতে ঋণ গ্রহণ করেন নি। তাঁর বাপদাদারাও ব্যাংক থেকে ঋণ নেননি। এমনকি পূর্ব পুরুষদের কেউ রাজনীতি করেননি। এ জন্যে কাউছ মিয়া এবং তাঁর ছেলেরাও কোনো রাজনীতি করেন না।

একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে সবসময় নিজেকে সমাজসেবা ও মানবসেবায় নিয়োজিত রেখেছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বহু মানুষকে সহযোগিতা করেছেন। তাঁর এক চাচাতো ভাই রুস্তম আলী বেপারী বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় নারায়ণগঞ্জ আইটি স্কুলের সামনে পাক হানাদার বাহিনী তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করে।

১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেছিলেন, যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন প্রত্যককে সাড়ে তিনহাজার টাকা করে নগদ প্রদান করা হবে। তৎকালীন বঙ্গবন্ধুর ঘোষিত সেই অর্থ রুস্তম আলী বেপারীর স্ত্রীর হাতে তুলে দেয় হয়। রুস্তম আলী বেপারীর স্ত্রী এখন জীবিত নেই। এখন থেকে চার বছর আগে ৯০ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। শহীদ রুস্তম আলী বেপারীর তিন ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে। বড় মেয়েকে হাজী মোঃ কাউছ মিয়া বিয়ে দেন এবং মেয়ের জামাইকে চাকুরির ব্যবস্থাও করে দেন।

বঙ্গবন্ধুর দেয়া সেই সাড়ে তিন হাজার টাকা দিয়ে নারায়ণগঞ্জে জায়গা কেনার জন্য কাউছ মিয়া সে সময় তাঁর চাচাতো ভাই শহীদ মুক্তিযোদ্ধা রুস্তম আলীর স্ত্রীকে (তার ভাবীকে) বলেছিলেন। কিন্তু ভাবী তার কথা শুনেননি। ওই টাকা দিয়ে তৎকালীন সময়ে নারায়ণগঞ্জে চার বিঘা জমি রাখা যেত।

কাউছ মিয়া বলেন, তার কথা যদি তখন ভাবী শুনতেন, সেই জায়গার দাম এখন শত শত কোটি টাকা হত। ভাবী তার চেয়ে দুই বছরের বড় ছিলেন। এখন ভাবী বেঁচে নেই। তারপরও মুক্তিযোদ্ধা শহীদ এই পরিবারের স্ত্রী-সন্তানদের এখন পর্যন্ত তিনি সহযোগিতা করে আসছেন। তাদেরকে কাউছ মিয়া সরকারি সহযোগিতা নিতে দেননি। তিনিইতো সহযোগিতা করছেন।

কাউছ মিয়ার আরেক মামাতো ভাই মুক্তিযোদ্ধা আঃ মালেক দেওয়ান। বাড়ি তরপুরচ-ী আনন্দবাজারে। ওনি এখনো মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেয়ে আসছেন।

দেশবাসী হাজী কাউছ মিয়াকে একজন নিঃস্বার্থ সমাজসেবক ও দানবীর হিসেবেই চিনেন। তিনি তাঁর মরহুম পিতার নামে উত্তর তারাবুনিয়া আব্বাস আলী উচ্চ বিদ্যালয় এবং চাঁদপুর শহরের স্ট্র্যান্ড রোডে (কবি নজরুল সড়কে) মায়ের নামে ফাতেমা খাতুন মাদ্রাসা ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়াও তিনি চাঁদপুর গুয়াখোলা আবাসিক এলাকায় মদিনা জামে মসজিদ এবং স্ট্র্যান্ড রোডে (বর্তমান কবি নজরুল সড়কে) আল-আমিন স্কুলের পাশে বোগদাদীয়া জামে মসজিদ গড়ে দিয়েছেন। এ দুটি মসজিদের মোতওয়াল্লির দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

তিনি বলেন, আমি ১৯৫৮ সাল থেকে কর প্রদান করে আসছি। ১৯৬৭ সালে আমাকে তৎকালীন সরকার ১নং করদাতার সার্টিফিকেট প্রদান করেন। আমি ১৯৭০ সালে নারায়ণগঞ্জে চলে আসি। তখন তামাকসহ বিভিন্ন মালামাল কেনাবেচা এবং মালামাল গুদামজাত করে ব্যবসা করেন। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনো পণ্য তিনি মজুত করে ব্যবসা করেননি।

দেশসেরা এই করদাতা আরও জানান, ১৯৮৮ সালে তিনি হাকিমপুরী জর্দা তৈরি এবং বাজারজাত করেন। তখন এটি ছিলো কুটির শিল্প। তাঁর প্রতিষ্ঠানে ৪/৫ জন শ্রমিক কাজ করতো। সরকার ১৯৯৯ সালের জুন মাসে জর্দার উপর ভ্যাট আরোপ করে। তখন বছরে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা ভ্যাট দিয়েছেন। বর্তমানে সম্পূরক শুল্কসহ ট্যাক্স প্রদান করছেন প্রায় ১০/১১ কোটি টাকা। জর্দা ব্যবসা ছাড়াও আগে থেকেই তার বিভিন্ন ব্যবসা রয়েছে। যার কিছু ব্যবসা বয়সের কারণে তিনি ছেড়ে দিয়েছেন, আবার কিছু ব্যবসা রেখেও দিয়েছেন।

তাঁর ঢাকাতে অনেক বাড়ি-ঘর, জায়গা-জমি রয়েছে। তিনি ব্যবসার পাশাপাশি চাঁদপুরে তার নিজের কেনা ও ছেলেদের কেনা জমিতে কৃষিপণ্য চাষাবাদ করে ফলন করছেন। এর সাথে ৩টি বড় গরুর খামার রয়েছে। সেখানে তাঁর খরিদকৃত হাজার হাজার বিঘা জমি রয়েছে।

হাজী মোঃ কাউছ মিয়া ৮ জমিদারের নাতি। উত্তরাধিকার সূত্রে তিনি নানাদের জমিদারি সম্পত্তির অংশ পাবার নিয়ম থাকলেও সেই সম্পত্তি নেন নি এবং তাঁর পূর্ব পুরুষরাও শ^শুর বাড়ির সম্পত্তি নেয়নি এবং তাঁর ছেলেরাও নেয়নি। বাংলাদেশের শীর্ষ করদাতার সর্বাধিক পুরস্কার লাভ করায় এবং সর্বশেষ মুজিব শতবর্ষের সেরা করদাতার বিরল রেকর্ডের অধিকারী হওয়ায় চাঁদপুরবাসী তাঁকে নিয়ে গর্ববোধ করছে। একের পর এক সাফল্যে মানুষের মুখে মুখে উচ্চারিত হয় দানবীর কাউছ মিয়ার নাম। অনেকে বলেন, সত্যিই ব্যবসা জগতে তিনি এক জীবন্ত কিংবদন্তী। মানব সেবার দৃষ্টান্ত।

১৯৫৪ সাল থেকে এ যাবৎ ২২ বার দেশে বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়। দেশের যে প্রান্তেই বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদীভাঙ্গন, পাহাড়ধস হয়েছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে যখন বৈশি^ক করোনা মহামারি দেখা দেয়, তখনসহ প্রতিটি দুর্যোগে তিনি বিপদগ্রস্ত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং সামর্থ্য অনুযায়ী ত্রাণ-সাহায্য দিয়েছেন।

১৯৮৮-এর ভয়াবহ বন্যার সময় টানা একমাস, ১৯৯৮-এর বন্যার সময় প্রায় দুই মাস দেশের বিভিন্ন স্থানে পানিবন্দী মানুষের দোরগোড়ায় রান্না করা খাবার পৌঁছে দিয়ে কাউছ মিয়া দেশ-বিদেশে বেশ সুনাম অর্জন করেন। ২০২০ সালে মানুষ যখন মরণব্যাধি করোনাভাইরাসে দিশেহারা, সে সময়েও প্রায় ৭/৮ কোটি টাকার ত্রাণ সহায়তা দিয়ে মানবতার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। করোনার এই দুঃসময়ের মধ্যেও দেশে পাঁচবার বন্যা হয়েছে। সেই বন্যাকবলিত এলাকায় তিনি তার। বিশ^স্ত লোক দিয়ে ত্রাণ সহয়তা পৌঁছে দিয়েছেন।

এভাবেই চব্বিশ বছর বয়স থেকে ৬৭ বছর যাবৎ মানবসেবা করে যাচ্ছেন হাজী মোঃ কাউছ মিয়া।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়