শনিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জের লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩ : এলাকায় আতঙ্ক
  •   শিক্ষা খাতে নজিরবিহীন রদবদল: একযোগে চার বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওএসডি
  •   মধ্যরাতের আতঙ্ক
  •   চীনা সেনাদের ভারতের অরুণাচলে অনুপ্রবেশ: বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে
  •   আপনার টাকা কোথায় গেল?

প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০

মেয়র জুয়েলের ১০ মাস : বেতন পরিশোধ করলেন ১৭ মাসের
চাঁদপুর কণ্ঠ রিপোর্ট ॥

চাঁদপুর পৌরসভার বর্তমান মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েলের পৌর মেয়র হিসেবে মেয়াদকাল আগস্ট ২০২১ পর্যন্ত ১০ মাস পূর্ণ হয়েছে। এই ১০ মাসে তিনি পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন হালনাগাদসহ ১৭ মাসের বেতন পরিশোধ করলেন। স্বাভাবিক প্রশ্ন জাগবে-১০ মাসে ১৭ মাসের বেতন পরিশোধ হয় কীভাবে? তাহলে তিনি কি অগ্রিম সাত মাসের বেতন দিয়ে দিয়েছেন? এর জবাব হচ্ছে-না, অগ্রিম নয়, তিনি বকেয়া পরিশোধ করেছেন। জিল্লুর রহমান জুয়েল পৌর মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণকালে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাত মাসের বেতন বকেয়া হিসেবে পেয়েছেন। তাঁর এই ১০ মাস দায়িত্বকালীন তিনি চলতি মাসের বেতন তো দিয়েছেনই, একইসাথে বকেয়া সাত মাসের বেতনও ধীরে ধীরে পরিশোধ করে ফেলেছেন। আগস্ট ২০২১ মাস পর্যন্ত চাঁদপুর পৌরসভার সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন সম্পূর্ণ পরিশোধ হয়ে এখন বেতন পুরোপুরি আপডেট তথা হালনাগাদ করা হয়ে গেছে। আর এই পরিশোধিত বেতনের পরিমাণও কম নয়। মাসে ১ কোটি ২২ লাখ টাকা করে সাত মাসে আসে ৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।

এটি মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েলের অনেক বড় একটি সাফল্য বলে মনে করছেন পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। একইসাথে পৌর নাগরিকগণও এটাকে মেয়রের কৃতিত্ব হিসেবে দেখছেন। পৌরসভার অনেক পুরানো স্টাফ যাদের চাকরির বয়স ত্রিশের উপরে চলছে, তারা বলছেন, এটা আমাদের মেয়র মহোদয়ের কারিশমা। এখানেই তাঁর যোগ্যতা প্রমাণ করে যে, মাত্র ১০ মাসে তিনি রানিং মাসের বেতন চালিয়ে রাখার পাশাপাশি বকেয়া সাত মাসের বেতনও পরিশোধ করে ফেললেন, যা বিপুল পরিমাণ অর্থ। আর এই টাকা পরিশোধ করা হয়েছে সম্পূর্ণ রাজস্ব আয় থেকে। অর্থাৎ পৌরসভার নিজস্ব আয় থেকে এই বিপুল পরিমাণ বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। আর এটি সম্ভব হয়েছে আমাদের মেয়র মহোদয়ের চৌকস চিন্তা-ভাবনা থেকে।

এ বিষয়ে পৌরসভার বেশ ক’জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাথে কথা হলে তাঁরা মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েলের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে বললেন, আমরা অভিভূত, আমরা আনন্দিত। মেয়র মহোদয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। পৌরসভার কনজারভেন্সি (পরিচ্ছন্ন) শাখার প্রধান অরূপ কুমার শ্যামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি এই পৌরসভায় চাকরি করি ত্রিশ বছরের উপরে চলছে। আমার চাকরির মেয়াদকালে এই প্রথম পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন আপডেট হলো। চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন আহমেদের সময় থেকে শুরু হয়েছে বেতন বকেয়া থাকা। মাঝখানে কিছুদিনের জন্যে প্রশাসক নিয়োগ হলে তাঁর সময়ে বেতন ক্লিয়ার করা হয়েছিলো। এরপর থেকে আর কখনো বেতন ক্লিয়ার থাকতো না। দুই-চার মাসের বকেয়া থাকতই। দীর্ঘ ত্রিশ বছর আমার চাকরিকালে এই প্রথম কোনো মেয়র পেলাম, যিনি আমাদের সমুদয় বকেয়া পরিশোধ করলেন। অথচ এই বকেয়া তাঁর সময়কার নয়।

পৌরসভার সচিব আবুল কালাম ভূঁইয়া এটাকে বর্তমান মেয়রের অনেক বড় সাফল্য হিসেবে দেখছেন। এতে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেশ আনন্দিত। এখন তাদের কাছ থেকে আরো ভালো সেবা পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।

এভাবে পৌরসভার দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী যতোজনের সাথে কথা বলেছি, সবাই একবাক্যে এ কাজটিকে মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েলের বিশাল কৃতিত্ব বলে উল্লেখ করলেন। অনেকে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন। তবে এই কান্না দুঃখের নয়, আনন্দের।

জানা গেছে, চাঁদপুর পৌরসভার স্থায়ী, অস্থায়ী স্টাফসহ মোট জনবল হচ্ছে ৫৯২ জন। এর বাইরে রয়েছেন মেয়র ও কাউন্সিলর ২১ জন। এই মোট ৬১৩ জনের বেতন ভাতাদি মাসে আসে ১ কোটি ২২ লাখ টাকা। আরো জানা যায়, এই পৌরসভায় তিনটি বিভাগে স্থায়ী জনবল হচ্ছে ২৩৮ জন। তিনটি বিভাগ হচ্ছে- প্রকৌশলী বিভাগ, প্রশাসনিক বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিভাগ। এই তিনটি বিভাগে আবার ভিন্ন ভিন্ন শাখা রয়েছে। যেমন : প্রকৌশল বিভাগে রয়েছে পানি, পূর্ত, বিদ্যুৎ ও যান্ত্রিক শাখা। প্রশাসনিক বিভাগে রয়েছে সাধারণ, হিসাব, এসেসম্যান্ট, কর আদায়, লাইসেন্স, শিক্ষা ও বাজার শাখা। স্বাস্থ্য বিভাগে রয়েছে পরিচ্ছন্ন ও ইপিআই শাখা। এই তিন বিভাগে স্থায়ী জনবল হচ্ছে ২৩৮ জন। এর বাইরে মাস্টাররোলে আছে ৭১ জন এবং পরিচ্ছন্ন শাখায় রয়েছে ২৮৩ জন। তবে পরিচ্ছন্ন শাখার ২৮৩ জন কাজ করে ৪৭৫ জনের। এই সংখ্যা হিসেবেই তাদের দৈনিক হাজিরা হিসেবে বেতন হয়। সব মিলিয়ে চাঁদপুর পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারী (স্থায়ী-অস্থায়ী) এবং জনপ্রতিনিধিদের বেতন সম্মানি মাসে আসে ১ কোটি ২২ লাখ টাকা। মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল ২৪ অক্টোবর ২০২০ সালে দায়িত্ব গ্রহণকালে এই বেতন ভাতাদি বকেয়া পেয়েছেন সাত মাসের। নভেম্বর ২০২০ থেকে আগস্ট ২০২১ পর্যন্ত ১০ মাসে তিনি তাঁর সময়কার সমুদয় বেতন ভাতাদি পরিশোধ তো করেছেনই, উপরন্তু বকেয়া সাত মাসের বেতনও পরিশোধ করে সম্পূর্ণ হালনাগাদ করে ফেলেছেন। তাঁর এই কৃতিত্বপূর্ণ সাফল্যের জন্যে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি পৌর নাগরিকরাও তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়