শনিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জের লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩ : এলাকায় আতঙ্ক
  •   শিক্ষা খাতে নজিরবিহীন রদবদল: একযোগে চার বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওএসডি
  •   মধ্যরাতের আতঙ্ক
  •   চীনা সেনাদের ভারতের অরুণাচলে অনুপ্রবেশ: বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে
  •   আপনার টাকা কোথায় গেল?

প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০

প্রতীক প্রাপ্তির প্রত্যাশায় প্রার্থীদের ঘুম হারাম
কামরুজ্জামান টুটুল ॥

দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন মানে অনেকটাই নিশ্চিত পাস। সেই ধ্যান-জ্ঞান থেকে প্রতীক প্রাপ্তির প্রত্যাশা নিয়ে প্রার্থীদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। বিশেষ করে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল তথা আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে প্রতীক আনার ক্ষেত্রে এক যুদ্ধ, আবার প্রতীক নিশ্চিত হওয়ার পর ভোটযুদ্ধ নামের আরেক যুদ্ধে অংশ নিতে হয় প্রার্থীদের। আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগের প্রতীক প্রাপ্তির প্রত্যাশিত প্রার্থীর সংখ্যা কয়েক গুণ বেশি। হাজীগঞ্জে অনুষ্ঠিত ১১টি ইউপি নির্বাচনে সর্বসাকূল্যে মূল লড়াই হবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি তথা নৌকা ও ধানের শীষের মধ্যে। আবার দলীয় প্রতীক প্রত্যাশীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ ঘরণার প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপও কয়েক গুণ বেশি। প্রতীক প্রাপ্তি হোক বা না হোক প্রতিযোগিতা থেকে সরে নেই কোনো প্রার্থী। হাজীগঞ্জে ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ১১টি পরিষদ নির্বাচন আসছে তফসিলে অনুষ্ঠিত হবে। নির্দিষ্ট কার্যকাল পূর্ণ না হওয়ায় আসছে নির্বাচনে উপজেলার দ্বাদশগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হচ্ছে না। ১২ ইউনিয়নের মধ্যে আওয়ামী লীগের দখলে ১১টি ইউনিয়ন আর বাকি একটি বিএনপির দখলে।

জানা যায়, হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপিতে স্পষ্ট দুই ভাগ থাকায় নিজ নিজ গ্রুপের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের কাছে প্রতীক পেতে প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে ধর্ণা দিচ্ছে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। তবে কেন্দ্রীয় বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিঃ মমিনুল হকের নিজস্ব পছন্দে ও বিগত সময় মামলায় নির্যাতিত এমন যোগ্যত্যসম্পন্ন প্রার্থীকে সকল ইউনিয়নে ধানের শীষ প্রতীক দেয়ার প্রাথমিক চিন্তা অনেকখানি এগিয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।

উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ড. আলমগীর কবির পাটোয়ারী বিএনপির অপর একটি অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন। যদি তিনিও অনুসারীদের মাঝে ধানের শীষ প্রতীক কিংবা অন্য প্রতীকে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী দিয়েই দেন তাহলে সর্বসাকূল্যে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর জন্যে লেজেগোবরে অবস্থা হয়ে যাবে। অন্য একটি সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্রীয়ভাবে ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও প্রত্যেক ইউনিয়নে ভিন্ন প্রতীকে বিএনপির প্রার্থী থাকবে এটা অনেকটাই নিশ্চিত।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকার জন্যে ইতিমধ্যে প্রতিটি ইউনিয়নে একাধিক প্রার্থীকে বেশ জোরেশোরে প্রচার-প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে। কেউ কেউ মোটরসাইকেল শোডাউন ও নানা আয়োজনে কার্যক্রম চালানোসহ প্রার্থিতা জানান দিচ্ছেন। এর মধ্যে কেউ দলের সাংগঠনিক যোগ্যতায় নৌকা চান, কেউ এলাকার মানুষের জন্যে কাজ করে নৌকা চান। কেউ আবার দলীয় হাইকমান্ডের একাধিক নেতার নাম বিক্রি করে নৌকা প্রতীক প্রত্যাশী, কেউ আবার গাছে গাছে ব্যানার-ফেস্টুন টানিয়ে প্রার্থিতা জানান দিচ্ছেন। তবে যারাই নৌকা প্রতীক প্রত্যাশা করেন না কেনো মূল প্রতীক পাবেন দলীয় পরীক্ষিত কিংবা সাংগঠনিকভাবে দক্ষ কেউ। স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম প্রার্থী যাচাইয়ে অতীতে যে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন সেই একই দক্ষতায় এবারও নৌকা প্রতীক দিবেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

সরেজমিনে বিভিন্ন ইউনিয়নে দেখা গেছে, দল দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে পয়সাওয়ালা কয়েকজন হাইব্রিড তৈরি হয়েছে হাজীগঞ্জে। এই হাইব্রিডের অনেকে আবার আওয়ামী লীগ আগে থেকেই করতেন ঠিকই কিন্তু দলের দুর্দিনে তাদের দেখা যায়নি। এ জাতীয় প্রার্থীর সংখ্যা নেহাত কম নয়। মূল দলের প্রার্থীদের কাছে এরাই অনেকটা মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরাই মূলত দলের নেতাদের একাংশের নামে মিথ্যে প্রচারণা ছড়াচ্ছে।

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে আসছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সংখ্যা কম করে হলেও ২৪ জন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক পদে থাকা প্রার্থীসহ একাধিক ইউনিয়নের উন্নয়ন কমিটির একাধিক প্রার্থী নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী। এদের মধ্যে অনেকের কর্মী পর্যায়ে বা ভোটের মাঠে কোনো গ্রহণযোগ্যতাই নেই। অবশ্য মনোনয়ন প্রত্যাশী অধিকাংশ প্রার্থীকে কোভিডের সময় মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়নি। এবারের নির্বাচনে হাজীগঞ্জের সকল ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যানগণ আসছে ইউপি নির্বাচনে নৌকা মনোনয়ন প্রত্যাশী। ২/১টি ইউনিয়ন ছাড়া বাকি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা দলীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। নৌকা প্রতীক ফের পাওয়ার সম্ভাবনা তাদের প্রবল।

জানা যায়, আওয়ামী লীগের সুদিনে নৌকার বহু নতুন কা-ারী দেখা যাচ্ছে। তারা ইতিমধ্যে নিজ নিজ এলাকায় কিছু সুবিধাভোগী নেতা-কর্মী নিয়ে মাঠে সরব রয়েছে। কেউ কেউ উপজেলা আওয়ামী লীগের কিংবা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন নৌকা প্রতীকের জন্যে। উড়ে এসে জুড়ে বসার মতো হঠাৎ করে এসে কারো কারো আশীর্বাদে নৌকা প্রতীক নিয়ে মাঠে নামলেও তাদের জন্যে ফল আনা অনেকটাই কঠিন হবে। কারণ সাংগঠনিক ব্যক্তিত্বসম্পন্ন নেতারা নৌকা না পেলে হয়তোবা তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন-এমনটাই শোনা যাচ্ছে কিছু কিছু ইউনিয়নের ক্ষেত্রে।

এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা জানান, দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষার বিকল্প নেই। যিনি নৌকা প্রতীক পাবেন তার পক্ষে সবাই কাজ করতে হবে। সাংগঠনিক সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ গেলে আমরা তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবো।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়