প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০
চাঁদপুর-৩ আসনের সদস্য শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির আন্তরিক প্রচেষ্টায় অন্ধকারে নিমজ্জিত উপজেলা হাইমচরের সর্বত্রে এখন বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত। কুপি, হারিকেন ও মোমবাতির আলো সরিয়ে প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর অন্তর্ভুক্ত হাইমচর সাব জোনাল অফিস। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাইমচরে আগমন উপলক্ষে ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’-এর আওতায় উপজেলার ৮০ শতাংশ ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছানো হয়। পরে ১ এপ্রিল ৬ষ্ঠ জাতীয় কমডেকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষমতায় আসার পর আমাদের প্রধান চেষ্টা ছিলো রাস্তাঘাটের উন্নয়ন ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা। শুধু বাতি জ্বেলে বসে থাকা নয়, বিদ্যুৎ থাকলে কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে আমরা এ পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পেরেছি। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও গ্রাহক বাড়িয়েছি।
এছাড়াও তিনি বলেন, ‘মুজিববর্ষে ২০২০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে আমরা সব ঘরে আলো জ্বালবো। ২০৪১ সালের মধ্যে দেশে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নেয়া হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তারই ধারাবাহিকতায় হাইমচর উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনা হয়েছে।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর হাইমচরের চিত্র পাল্টে যায়। রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্টসহ সর্বত্রে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগে নতুনভাবে। বিদ্যুৎবিভ্রাট কমিয়ে আনতে ও সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সার্ভিস দেয়ার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে হাইমচরে ১০ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর অধীনে সাব জোনাল অফিস দেয়া হয়েছে। যার ফলস্বরূপ কোনো প্রকার ভোগান্তি বা হয়রানি ছাড়াই বিদ্যুৎ সম্পর্কিত সকল সেবা স্বল্প সময়ের মধ্যে পেয়ে যাচ্ছে হাইমচরবাসী।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সুবিধাভোগী মোঃ আনোয়ার হোসেন মৈশাল বলেন, কয়েক বছর আগেও দিনের বেলা গরমে ছিলো জনজীবন অতিষ্ঠ আর রাতে অমানিশার অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকতো পুরো গ্রাম। ভয়ে আতঙ্কিত থাকতো গ্রামবাসী। সন্ধ্যা নেমে আসার সাথে সাথে হারিকেন, কুপি বা দিয়াশলাই খুঁজতে হতো। বিদ্যুৎ চলে আসায় এখন আর কেরোসিন তেল-দিয়াশলাই খুঁজতে হয় না। সন্তানদের পড়ালেখাসহ নানা কাজে আলোর অভাব হয় না। অন্ধকারে ভূতুড়ে অবস্থা দূর হয়ে গেছে। গ্রাম এখন শহরের মতো লাগছে।
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ হাইমচর সাব জোনাল অফিসের এজিএম হাফিজুর রহমান বলেন, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেয়ার আগে বিদ্যুতের উৎপাদনক্ষমতা ছিলো ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর বিগত ১২ বছরে এই ক্ষমতা বাড়াতে ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ ২৫ হাজার ২৩৫ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে।
তিনি বলেন, হাইমচরে উপকেন্দ্র হওয়ার পূর্বে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিন্তু ৬ এপ্রিল ২০২১ হাইমচরে ৩৩/১১ কেভি ইনডোর উপকেন্দ্র উদ্বোধন হওয়ার পর থেকে সুনির্দিষ্ট কারণ ব্যতীত ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। বিদ্যুৎ বিভাগের এ অভূতপূর্ব উন্নয়ন চলমান সরকারের শাসনামলে হাইমচরবাসীর অনেক বড় প্রাপ্তি।