প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৪, ০০:০০
ফরিদগঞ্জে আজব ডাক্তারের ভৌতিক প্রেসক্রিপশন
কৃমিনাশক ঔষধের ডোজ দিনে তিনবার তিন মাস
কৃমিনাশক ঔষধের ডোজ দিনে তিনবার করে তিন মাস খেতে হবে। এমন কথা সাধারণ যে কেউ বিশ্বাস করবে না। কিন্তু এমন কথা যদি কোনো ডাক্তার লিখিত আকারে প্রেসক্রিপশনের মাধ্যমে বলেন তাহলে কেমন হবে....! সাধারণত ডাক্তাররা লিখিত আকারে কিংবা মৌখিকভাবে যা বলে তা রোগী পালন করতে চেষ্টা করে। এদিকে কৃমিনাশক ঔষধ কোনো এমবিবিএস চিকিৎসক যদি প্রতিদিন একটি করে তিনবার তিন মাস খেতে নির্দেশনা দেয়, সেক্ষেত্রে ডাক্তারের বৈধতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন আশা স্বাভাবিক।
এমবিবিএস ডাক্তার কর্তৃক এমনই প্রেসক্রিপশন দেয়া হয়েছে রোগীকে। এই আজব চিকিৎসক হলেন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে পাস করা বলে নিজেকে চিকিৎসক দাবি করা ডাঃ সুমাইয়া আজাদ প্রাপ্তির। তার প্রচারপত্রে লেখা রংপুর মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস সিএমইউ আল্ট্রা এবং বিএমডিসি (রেজিঃ এ-১৩০৩৮৮) নিবন্ধনকৃত। বর্তমানে তিনি ফরিদগঞ্জ উপজেলার মজিদিয়া ট্রাস্টের আইডিয়াল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে স্ত্রী, প্রসূতি, গাইনি ও মেডিসিন রোগের অভিজ্ঞ এবং সনোলজিস্ট পরিচয়ে নিয়মিত রোগী দেখে থাকেন। তবে নিজের এমন ভুল স্বীকার করতে নারাজ তিনি। বলেছেন এটি কলমের ভুল (স্লিপ অব পেন) কলমের ভুলেই নাকি এমনটা হয়েছে। তার দেয়া এক ভিডিও বক্তব্যে ডাঃ সুমাইয়া আজাদ প্রাপ্তি নিজের ভুল স্বীকার করেছেন। এমন ভুলে যে মানুষের জীবন হুমকির মুখে দাঁড়ায় তা হয়ত তিনি জানেনই না। ভিডিও বক্তব্যে তিনি দাবি করেন, ক্যালসিয়ামের ঔষধ এলজেনটা ডিএস লিখতে চেয়েছেন, সেটা কলমের ভুলে এলবেন ডিএস হয়ে গেছে। এমনই একটি প্রেসক্রিপশন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ডাঃ সুমাইয়া আজাদ প্রাপ্তির চিকিৎসা সেবা দেয়ার বিষয়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিন্দার ঝড় উঠে। প্রশ্ন ওঠে পেশাদারিত্বের এবং প্রশ্ন উঠে তার সার্টিফিকেটের বৈধতা নিয়েও। নাম পরিচয় গোপন রাখার শর্তে একাধিক ফার্মেসীর পরিচালক এই প্রতিবেদককে জানান, এমন ভুল তিনি পূর্বেও একাধিকবার করেছেন। কখনও ট্যাবলেট ক্যাপসুলের ফরমেটে সিরাপ, আবার সিরাপের ফরমেটে ট্যাবলেট লিখেছেন। শিশু রোগীর প্রেসক্রিপশনে লিখেছেন সার্জেল সিরাপ। অথচ এই নামের কোনো সিরাপই নেই।
এ বিষয়ে মজিদিয়া ট্রাস্ট্র আইডিয়াল ডায়গনস্টিক সেন্টারের পরিচালক মাহবুবুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।