বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

চাঁদপুর প্রেসক্লাবের আয়োজনে ও পৌরসভার পৃষ্ঠপোষকতায় মাসব্যাপী বাঙালি সাংস্কৃতিক উৎসব ও বৈশাখী মেলা উদ্বোধন

যারা আমাদের ইতিহাস ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, তাদের রুখে দিতে হবে

----সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি

স্টাফ রিপোর্টার ॥
যারা আমাদের ইতিহাস ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, তাদের রুখে দিতে হবে

সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি বলেছেন, মঙ্গল শোভাযাত্রা, বাঘ মামা, ওই হাতি, পাখি, মাটির পুতুল সবই আমাদের লোকজ সংস্কৃতির অনুষঙ্গ। আমাদের মা যেমন আমাদের কাছে সত্য, আমাদের মাটি যেমন আমাদের কাছে সত্য, নদীর স্রোত যেমন আমাদের কাছে সত্য, এসব অনুষঙ্গও আমাদের কাছে সত্য। কাজেই যারা আজকে আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতি এবং সত্যের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। তার জন্যে বড় হাতিয়ার আমাদের সংস্কৃতি। সেজন্যে প্রয়োজন আমাদের সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণ।

১২ এপ্রিল শুক্রবার সন্ধ্যায় চাঁদপুর প্রেসক্লাবের আয়োজনে ও চাঁদপুর পৌরসভার পৃষ্ঠপোষকতায় মাসব্যাপী বাঙালি সাংস্কৃতিক উৎসব ও বৈশাখী মেলা ১৪৩১ বঙ্গাব্দ উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রেসক্লাব সংলগ্ন ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে নির্মল পরিবেশে বর্ণাঢ্য আয়োজনে এই মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণমন্ত্রী আরো বলেন, আমরা বাঙালি। আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও ইতিহাস রয়েছে। এই বাঙালি সংস্কৃতির ইতিহাসকে মুছে দেবার অপচেষ্টা করে লাভ নেই। বাঙালি সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ধর্মকে দাঁড় করাতে যারা চায় তারাই দেশের শত্রু।

তিনি বলেন, বাঙালিত্বের সাথে ধর্মের কোনো সংঘর্ষ নেই। ইসলাম ধর্মের সাথে আমাদের শাড়ি পরা, টিপ পরার কোনো সংঘর্ষ নেই। এ বিষয়গুলো অনেক আগেই মিমাংসিত হয়েছে। ওই পেঁচা, ওই বাঘমামা সবই আমাদের লোকসংস্কৃতির অনুষঙ্গ। তিনি আস্থা রেখে বলেন, আশা করি সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণ ঘটাতে এই বৈশাখী মেলা ভূমিকা রাখবে।

চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শান্তের সভাপতিত্বে ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওচমান গনি পাটোয়ারী, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বশির আহমেদ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইয়াসির আরাফাত। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রোটাঃ মাহবুবুর রহমান সুমন।

অনুষ্ঠানে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট ইকবাল-বিন-বাশার, ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী, এএইচএম আহসান উল্লাহ, পিপি অ্যাডভোকেট রঞ্জিত রায় চৌধুরী, সব্যসাচী লেখক ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়া, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বেপারী, চাঁদপুর জেলা উদীচীর সাবেক সভাপতি দুলাল চন্দ্র দাস, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের জেলা সভাপতি তপন সরকার, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান টুটুলসহ সাংবাদিক, সুধীবৃন্দ, সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের ব্যক্তিবর্গ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা পর্ব শেষে ফুলের ফিতা কেটে মাসব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসব এবং বৈশাখী মেলার আনুষ্ঠানিক শুভ উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি। পরে সমবেত কণ্ঠে 'এসো হে বৈশাখ' গানটি পরিবেশন করেন চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীবৃন্দ। সেই গানে শিল্পীদের সাথে কণ্ঠ মিলান অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি। এরপর তিনি মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন এবং পছন্দমতো কেনাকাটাও করেন।

এদিন মেলায় আগত দর্শনার্থীদের স্টল পরিদর্শন ও কেককাটার সাথে লোকজ সংস্কৃতির বিনোদনে ভিন্নমাত্রা যোগ করতে মঞ্চে মনোমুগ্ধকর গান ও নাচসহ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করা হয়।

উল্লেখ্য, মেলা নববর্ষের অন্যতম প্রধান আনন্দময় অনুষঙ্গ। দেশজুড়ে সারা বৈশাখ মাসেই অনেক মেলা বসে এবং অধিকাংশ মেলা পহেলা বৈশাখে আয়োজিত হয়। চাঁদপুরে প্রেসক্লাব ও চাঁদপুর পৌরসভা বৈশাখী মেলা করছে এবার মাসব্যাপী। এই মেলায় প্রতিদিনই থাকছে বাঙালির সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড।

মেলার সঙ্গে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কৃষ্টি ও সংস্কৃতির যোগাযোগ নিবিড়। বাঙালির এই উৎসবে ফুটে উঠে সকল ধর্মের সকল শ্রেণির মানুষের সংস্কৃতির সমন্বয়। কয়েকটি গ্রামের সংযোগস্থলে, নদী তীরে বা কোনো খোলা মাঠে মেলার আয়োজন করা হয়। চাঁদপুরের এ মেলার আয়োজনটা শহরের মধ্যে ডাকাতিয়া নদীর পাড়েই হচ্ছে, যাতে গ্রামীণ আবহ লক্ষ্য করা যায়। মেলাকে ঘিরে শহুরে জীবনে সকলের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য এসেছে। গ্রামীণ মৃৎশিল্প ও কারুপণ্যের বিকিকিনি মেলার বড়ো আকর্ষণ। এসব মৃৎশিল্পের মধ্যে শখের হাঁড়ি এবং বিভিন্ন ধরনের মাটির পুতুল বেশ জনপ্রিয়। এছাড়া অনেক কিছুই থাকছে চাঁদপুরের চমক লাগানো এ আয়োজনে। দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় প্রতিদিনই পরিলক্ষিত হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়