প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীকে খুনের অভিযোগ
ফরিদগঞ্জে দাফনের ১৩ দিন পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন
ফরিদগঞ্জে সেলিম শেখ নামে এক ব্যক্তির দাফনের ১৩দিন পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জাকারিয়া হোসেনের উপস্থিতিতে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ ৫ মার্চ শুক্রবার বিকেলে মৃত ব্যক্তির বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান থেকে এই লাশ উত্তোলন করে। সেলিম শেখ উপজেলার গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নের ধানুয়া গ্রামের শেখ বাড়ির মৃত আব্দুল সাত্তার শেখের ছেলে।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নের ধানুয়া গ্রামের শেখ বাড়ির সেলিম শেখের সাথে স্ত্রী লিপি বেগমের পরিবারিক বিষয়ে ঝগড়া-বিবাদ চলছিল। গত ২৩ মার্চ রাতেও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। ওই রাতেই আনুমানিক ৩টার দিকে হঠাৎ চিৎকারের শব্দ শুনে পাশের ঘরের লোকজন এসে দেখেন সেলিম শেখ বসতঘরের মেঝেতে পড়ে আছেন। দ্রুত স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসক আসলে তিনি সেলিমকে মৃত ঘোষণা করেন। পরদিন ২৪ মার্চ সকালে পরিবারের লোকজন দ্রুত তাকে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করে ফেলে।
এরপরই শুরু হয় তার মৃত্যু নিয়ে নানা গুঞ্জন। মৃত সেলিম শেখের মাথার মধ্যস্থান, কানের কাছে ও চোখের নিচে আঘাতের চিহ্ন ছিলো বলে স্থানীয়দের মধ্যে তার মৃত্যু নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। এমনকি স্থানীয় লোকজন জানাজার সময় লাশের মাথা থেকে রক্ত পরতেও দেখেন। এলাকার বিভিন্নজনের কাছে এরকম কথা শুনে সেলিম শেখের বোন ফাতেমা বেগম বাদী হয়ে গত ২৭ মার্চ চাঁদপুর আমলি আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে ফরিদগঞ্জ থানাকে নির্দেশ দেয়। ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাটি তদন্তপূর্বক এটি এফআইআর হিসেবে রেকর্ড করে। এরপর মামলার বাদী ফাতেমা বেগম আদালতে লাশ উত্তোলনপূর্বক ময়না তদন্তের জন্য আবেদন করলে আদালত কবর থেকে লাশ উত্তোলনের অনুমতি দেয়। সে অনুযায়ী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জাকারিয়া হোসেনের উপস্থিতিতে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ ৫ মার্চ শুক্রবার বিকেলে মৃত ব্যক্তির বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান থেকে এই লাশ উত্তোলন করে।
এদিকে সেলিম শেখের স্ত্রী লিপি বেগম আদালতে মামলা দায়েরের পর থেকে পলাতক রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মামলার কথা শুনে গ্রেফতার এড়াতে লিপি বেগম মৃত সেলিম শেখের গোয়ালঘরে থাকা ৪টি বড় গরু বিক্রি করে পালিয়েছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জসিম বলেন, আমরা লোকমুখে শুনেছি তাকে হত্যা করা হয়েছে। সেলিম শেখের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। রক্ত টপটপ করে পরতে দেখেছি। ঘটনা সত্য হলে যেই অপরাধ করে থাকুক তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
লাশের গোসলদানকারী আইউব আলী বলেন, আমি বহু বছর ধরে এই গ্রামের কোনো লোক মারা গেলে গোসল করিয়ে থাকি। সেলিমের গোসল করাতে গিয়ে দেখি তার মাথার মধ্যস্থান বরাবর, মাথার পাশে ও চোখের নিচে আঘাতের চিহ্ন ছিলো। রক্ত পরতে দেখে তারা আমাকে মাথা সেলাই করতে বলেছিল। আমি নিষেধ করে দিয়েছি।