প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
ফরিদগঞ্জে বিদ্যুতের মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ে অসহনীয় জনজীবন
চৈত্রের গরমের উত্তাপের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। ফলে অসহনীয় হয়ে উঠেছে জনজীবন। ফরিদগঞ্জের পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহকদের অভিযোগ, সারাদিনে মাত্র কয়েক ঘণ্টা এলাকায় বিদ্যুৎ থাকছে। সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বিদ্যুতের লোডশেডিং নিয়ে সরব। তবে স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দাবি, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়ায় বাধ্য হয়ে লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
জানা যায়, চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর আওতায় ফরিদগঞ্জ জোনাল অফিস ও কামতা জোনাল অফিসে মোট গ্রাহকের সংখ্যা ১ লাখ ৪৭ হাজার। বিদ্যুতের চাহিদা মোট ২৯ মেগাওয়াট। কিন্তু তাদের দাবি অনুযায়ী তাদের ৩৫/৪০ ভাগ সরবরাহ কম বললেও গ্রাহকদের অভিযোগ ভিন্ন। তাদের দাবি গড়ে তারা দিনে রাতে ৪/৫ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না।
পশ্চিম রূপসা গ্রামের গ্রাহক আবুল কালাম বলেন, গরমে আমরা অতিষ্ঠ। রাতের বেশির ভাগ সময় তো বিদ্যুৎ থাকে না। এখন এমন অবস্থা যে, বিদ্যুৎ থাকা না থাকা সমান কথা। গাব্দেরগাঁও গ্রামের ইয়াকুব হোসেন বলেন, রাতে অন্তত ৭-৮ বার বিদ্যুৎ যায়। গোবিন্দপুর এলাকার আব্দুল কুদ্দুস, ধানুয়া এলাকার সেলিম মিয়া, সাহাপুর গ্রামের কামাল হোসেনসহ অনেকেই জানান, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন। গরমে শিশু-বৃদ্ধরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় তাদের। ইফতার, তারাবিহ ও সাহরির সময়ও তারা লোডশেডিংয়ের আওতায় থাকেন।
ফরিদগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী মোঃ অহিদুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, একে তো গরমে শেষ হইলাম। এরপরে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না থাকায় ব্যবসার অবস্থা খুব খারাপ। এভাবে চললে ঈদে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা খুব কষ্ট হবে ব্যবসায়ীদের জন্যে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কামতা শাখার এজিএম ইমতেসার ইমন বলেন, ফরিদগঞ্জ উপজেলাধীন কামতা জোনাল অফিসের আওতায় আমার ৫২ হাজার গ্রাহকের জন্যে ৯ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে আমরা ৪ থেকে সাড়ে ৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বরাদ্দ পাই। যার কারণে কিছুটা লোডশেডিং হয়ে থাকে।
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ফরিদগঞ্জ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, আমার অফিসের আওতায় ৯৫ হাজার গ্রাহকের জন্যে ২২ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে আমরা কখনো ১৫ আবার কখনো ১৬ বা ১৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বরাদ্দ পাই। গ্রাহকদের চাহিদানুপাতে সেবা দিতে আমরা আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছি। একদিকে প্রচণ্ড দাবদাহ অপরদিকে রমজান মাস হওয়াতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে চাহিদা বেশ বেড়ে গেছে। এছাড়া চাহিদার সংকুলান না হওয়ায় জাতীয় গ্রিড থেকেও মাঝে মধ্যে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারী বলেন, বৃহস্পতিবার আমি নিজে ফরিদগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে কথা বলেছি। আমি সেখানে থেকেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আমার উপজেলার জন্যে সর্বোচ্চ পরিমাণ বিদ্যুৎ সরবাহের জন্যে বলেছি।