প্রকাশ : ২৭ জুন ২০২১, ০০:০০
কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত প্রাচীন সংবাদপত্র 'সাপ্তাহিক আমোদে'র উপদেষ্টা সম্পাদক শামসুন্নাহার রাব্বী মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারনে আমেরিকাতে ইন্তেকাল করিয়াছেন (ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্নাইলাহে রাজেউন)। শুক্রবার (২৫ জুন) বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
শামসুন্নাহার রাব্বীর একমাত্র ছেলে আমোদ সম্পাদক বাকীন রাব্বী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বুধবার (২৩ জুন) বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৩টার দিকে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সি রাজ্যের নেপচুন শহরের জার্জিশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শামসুন্নাহার রাব্বির মরদেহ দেশে আনা হবে না। তাকে যুক্তরাষ্ট্রে দাফন করা হবে। এক ছেলে, তিন মেয়ে, দুই নাতনি ও সাত নাতিসহ স্বজনরা তার আত্মার মাগফিরাতের জন্য সকলের দোয়া চেয়েছেন।
শামসুন্নাহার রাব্বী পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে কুমিল্লায় সাংবাদিকতার পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছিলেন। তিনি কুমিল্লায় বিভিন্ন সামাজিক কাজের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। তার একাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৫৫ সালের ৫ মে শামসুন্নাহারের স্বামী মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী কুমিল্লা থেকে আমোদ পত্রিকার প্রকাশনা শুরু করেন। প্রকাশনার ৬৭ বছরেও নিরবচ্ছিন্নভাবে পত্রিকাটি প্রকাশিত হচ্ছে। আমোদ ছিল পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম ক্রীড়া সাপ্তাহিক। পরে তা সাধারণ সংবাদপত্রে পরিণত হয়। প্রথম সংখ্যাটির মূল্য ছিল এক আনা। বয়সের দিক দিয়ে সংবাদ, ইত্তেফাক ও অবজারভারের পরেই আমোদের অবস্থান। ১৯৯৪ সালের ২৮ নভেম্বর মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী মৃত্যুবরণ করেন। এরপর আমোদ প্রকাশনার দায়িত্ব নেন তাঁর সহধর্মিণী শামসুন্নাহার রাব্বী ও ছেলে বাকীন রাব্বী। বৃহত্তর কুমিল্লা তথা ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর এবং তার আশপাশের এলাকায় এখন যে সংবাদপত্রের বিকাশ দেখা যায় তার উৎস ‘আমোদ’।
আমোদ সম্পাদক বাকীন রাব্বী বলেন, এ অঞ্চলে যারা সাহিত্যসেবী হিসেবে সুপরিচিত তারাও আমোদে লিখে হাত পাকিয়েছেন। প্রথম দিকে বৃহত্তর নোয়াখালী ও সিলেটে আমোদের সার্কুলেশন ছিল। আঞ্চলিক সংবাদপত্র হিসেবে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখার কারণে আমোদ তার যোগ্য স্বীকৃতিও পেয়েছে। জাতিসংঘের অঙ্গ সংগঠন ইউনেস্কো এশিয়ার পাঁচটি সেরা আঞ্চলিক পত্রিকার মধ্যে আমোদকে স্বীকৃতি দেয়।
শামসুন্নাহার রাব্বীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের সম্পাদক ও প্রকাশক রোটারিয়ান আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট মোঃ ইকবাল-বিন-বাশার পিএইচএফ ও প্রধান সম্পাদক রোটারিয়ান কাজী শাহাদাত, পিএইচএফ।