রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

সংসদ সদস্য প্রার্থীদের চোখে ফরিদগঞ্জ

ফরিদগঞ্জকে শিল্পনগরী, পর্যটনকেন্দ্র ও আধুনিক শিক্ষায় পরিপূর্ণ করাই আমার লক্ষ্য

--------------ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া

অনলাইন ডেস্ক
ফরিদগঞ্জকে শিল্পনগরী, পর্যটনকেন্দ্র ও আধুনিক শিক্ষায় পরিপূর্ণ করাই আমার লক্ষ্য

আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। যে দলগুলো এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে, ইতোমধ্যে তারা তাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক পাওয়ার পর প্রার্থীরা মাঠে জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন। চাঁদপুর ৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনে মোট ৮জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম)-এর মহাসচিব ড. মোঃ শাহজাহান, ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টি (এনপিপি) থেকে আব্দুল গনি, তৃণমূল বিএনপি থেকে আব্দুল কাদির তালুকদার, তরিকত ফেডারেশন থেকে বাকীবিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী এবং স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করছেন সাবেক সংসদ সদস্য ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া ও জালাল আহমদে।

আগামী ৫ বছর ফরিদগঞ্জকে নিয়ে কী পরিকল্পনা করছেন এবং জাতীয় সংসদে গিয়ে কী ভূমিকা পালন করবেন তা জানালেন ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া। যিনি দীর্ঘ এক যুগ চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন দক্ষতা এবং সফলতার সাথে। ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন তিনি। দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি নূরুল ইসলাম ফরহাদের সাথে মুখোমুখি হয়েছেন ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কেমন আছেন?

ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া : ভালো আছি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি কি মনে করেন সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আপনি বিজয়ী হবেন?

ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া : আমি এবং আমার ভোটাররা এটা প্রত্যাশা করে এবং আমরা আশাবাদী।

চাঁদপুর কণ্ঠ : জনগণ কেন আপনাকে ভোট দিবে?

ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া : আমি দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। ১৯৬২ সালে ছাত্রলীগে যোগ দিই। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের সাথে আছি। একাধিকবার আওয়ামী লীগের নমিনেশন চেয়েছি। একবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলাম প্রায় ১ যুগ। আমি যখন সংসদ সদস্য ছিলাম তখন ফরিদগঞ্জে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। সেটা মূল্যায়ন করলেই জনগণ আমাকে ভোট দিবে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি দলীয় প্রার্থীর বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এই চ্যালেঞ্জ কেন নিলেন?

ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া : এবার কোনো দলীয় প্রার্থী নেই। এবার যারা দাঁড়িয়েছেন, আওয়ামীলীগের নেতারা সবাই দলীয় প্রার্থী। এটা নেত্রী একাধিকবার ঘোষণা দিয়েছেন। একাধিকবার বলেছেন।

চাঁদপুর কণ্ঠ : দলের প্রার্থীর বিপরীতে দলের অন্য কেউ প্রার্থী হলে তাকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে দল থেকে বহিষ্কার করা হতো। এবার তা শিথিল হলো কেন?

ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া : এবার তো বিদ্রোহী প্রার্থী নাই। নেত্রীর আশীর্বাদপুষ্ট যারা তারাই স্বতন্ত্র প্রার্থী। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে এটাকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। শিথিলতা আমি বলব না। এতে জনগণের মতামত যাচাই করার একটা সুযোগ দিয়েছেন তিনি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : স্বাধীনতার ৫২ বছর পর বাংলাদেশের রাজনীতির গুণগতমান কতটুকু পরিবর্তন হয়েছে?

ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া : অনেক পরিবর্তন হয়েছে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : রাজনীতিতে এখন আর ভালো মানুষরা আসতে চায় না কেন?

ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া : এটা ঠিক নয়। ভালো মানুষরা আসতে চায় না, এটা ঠিক নয়। ধানের সাথে কিছু চিটা থাকে, এটা অনেকটা সেরকম।

চাঁদপুর কণ্ঠ : বাংলাদেশের নির্বাচনের একটি স্থায়ী ব্যবস্থা দরকার আছে বলে কি আপনি মনে করেন?

ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া : স্থায়ী ব্যবস্থা তো আছেই। বাংলাদেশের যে সংবিধান সেখানে তো স্থায়ী ব্যবস্থাই আছে। পৃথিবীর বহু গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচনী সরকার নিয়ে আলাদা ঝামেলা করে না কেউ। বাংলাদেশে আস্থা-অনাস্থার কারণে দুই-একবার হয়েছিল। সেটা থেকে বর্তমানে অনেক উন্নত ব্যবস্থা রয়েছে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : রাজনীতিতে আপনার শেষ লক্ষ্য কী?

ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া : জনগণের সেবা করা এবং এই সেবাকে ইবাদত হিসেবে গ্রহণ করা।

চাঁদপুর কণ্ঠ : বাংলাদেশের গণতন্ত্র পিছিয়ে থাকার অন্যতম কারণ রাজনীতিবিদদের রাজনীতি চর্চার অভাব। আপনি কি তা মনে করেন?

ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া : গণতন্ত্র পিছিয়ে নেই, বরং আগানো আছে। যারা প্রকৃত রাজনীতিবিদ তারা রাজনীতি চর্চাই করে। তবে এর মধ্যে ব্যতিক্রম কিছু লোক আছে, যারা রাজনীতির জন্যে বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়ায়।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি কি ক্ষমতার জন্যে, না-কি জনগণের জন্যে রাজনীতি করেন?

ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া : ক্ষমতা আমার দরকার কী? আমি জীবনে অনেক ক্ষমতা উপভোগ করেছি। এখন জনগণের জন্য বিশেষ করে ফরিদগঞ্জের মানুষের যে দুরবস্থা, গত পাঁচ বছর উন্নয়নবিহীন; গত পাঁচ বছরে কোনো নেতা-কর্মী সম্মান পায়নি, সেটার অবসান ঘটাতে চাই।

চাঁদপুর কণ্ঠ : জনগণকে নিয়ে কাজ করতে গিয়ে কোনো প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছেন?

ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া : নাহ্, কখনোই কোনো প্রতিবন্ধকতার শিকার হইনি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : শিল্প উন্নয়ন বলতে ফরিদগঞ্জে তেমন কিছুই নেই। আপনি বিজয়ী হলে শিল্প উন্নয়নে কাজ করার পরিকল্পনা আছে কি না?

ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া : এই পরিকল্পনা আগেই প্রকাশ করেছি। আমি একবার ট্যুরিস্ট সেন্টার স্থাপনের জন্যে সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছি। আমাদের যে মরা ডাকাতিয়া নদী রয়েছে, বিশেষ করে স্লুইচ গেইট থেকে হাজীমারা পর্যন্ত এই অঞ্চলটাকে হাতিরঝিলের আদলে বা আরো উন্নত প্রক্রিয়ায় একটা বিরাট পর্যটনশিল্প হিসেবে গড়ার জন্যে প্রস্তাব দিয়েছি এবং সেটা প্রক্রিয়াধীন আছে। আমার স্বল্প সময়ের কারণে সেটা আর বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। আমি গত আমলে জাতীয় সংসদে এই এলাকায় একটা শিল্পনগরী স্থাপন করার জন্যে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। সে শিল্পনগরী স্থাপনের সাথে যুক্ত হবে পরিবহন। শিল্পনগরী স্থাপনের পূর্ব শর্তের অন্যতম হলো উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। তাই আমি প্রস্তাব করেছিলাম ফরিদগঞ্জের উপর দিয়ে চট্টগ্রাম এবং ঢাকার সাথে রেল যোগাযোগ স্থাপনের। ফরিদগঞ্জে নদীবন্দর বা সমুদ্রবন্দর নাই, সেজন্যে এই প্রস্তাব দিয়েছিলাম। সেটা প্রক্রিয়াধীন আছে। আমি যদি নির্বাচিত হই, এই উদ্যোগগুলো পূরণে আমি আবার সচেষ্ট হবো।

চাঁদপুর কণ্ঠ : ভৌগোলিক দিক থেকে ফরিদগঞ্জ গুরুত্বপূর্ণ হলেও এখানে রেল যোগাযোগ নেই, নেই গ্যাস। যা শিল্প উন্নয়নের পূর্বশর্ত। এ বিষয়ে আপনি কী বলবেন?

ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া : হ্যাঁ, ঠিক বলেছেন। গ্যাসের জন্যে আমি দীর্ঘদিন য্দ্ধু করেছি। সংসদে আমি প্রস্তাব করেছি। আমি বলেছিলাম, আপনারা গ্যাস দিন, গ্যাসের যে টাকা লাগে সে টাকার ব্যবস্থাও আমরা করব। সংসদে তার রেকর্ড আছে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : সমাজে প্রচলিত আছে- জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচনের পর জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভুলে যায়, এ কথা কতটুকু সত্য?

ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া : এটা ভুলে যাব কীভাবে? জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতির এমন কোনো কিছু নেই যা আমি আমার আমলে পূরণ করিনি। মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রকল্প দিয়েছি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : সময় দেওয়ার জন্যে আপনাকে ধন্যবাদ।

ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া : আপনাকেও ধন্যবাদ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়