সোমবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর : মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ভাবনা-১৭

মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মন ও মননের গভীরে প্র্রোথিত করতে হবে

-----মোহাম্মদ জাকির হোসেন

মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ॥
মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মন ও মননের গভীরে প্র্রোথিত করতে হবে

আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আনন্দ ও গর্ববোধ করি। কেননা মুক্তিযোদ্ধারা হলো সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান। আমার বাবা ভারতে ট্রেনিং শেষে দেশে এসে সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেন। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থেকে পাকবাহিনীর সাথে লড়েছেন সরাসরি যুদ্ধে। দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের আয়োজনে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ভাবনা’ শিরোনামে আজকের পর্বে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন কচুয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোঃ আব্দুল মবিনের ছেলে মোহাম্মদ জাকির হোসেন।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার বাবা (যিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা)-এর নাম ও সংক্ষপ্তি পরচিয় কী? তিনি কোথায় যুদ্ধ করেছেন?

মোহাম্মদ জাকির হোসেন : আমার পিতা মোঃ আব্দুল মবিন। তিনি ভূইয়ারা গ্রামের মৃত আবুল হাশেম ও আম্বিয়া খাতুনের ছেলে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রদত্ত ডিজিটাল সনদপত্র ও এমআইএস নং : ০১১৩০০০১০৯১, লাল বার্তা নং ২০৫০৪০০৫, বেসামরিক গেজেট নং : ১৪৪৯। যুদ্ধকালে মতলব ডিগ্রি কলেজের এইচএসসির ছাত্র ছিলেন। ১৯৭১ সালের জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে মা-বাবাকে না জানিয়ে দেশের স্বাধীনতার জন্যে ভারতে গমন করেন। ভারতের বাগমারা ট্রেনিং সেন্টারে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। সেখান থেকে সেপ্টেম্বর মাসের ২১ তারিখ দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে কচুয়ায় এসে যুদ্ধে অংশ নেন। শাহরাস্তির নাওড়ার যুদ্ধ, মেহেরে ঠাকুরবাজারের পশ্চিম পাশে ডাকাতিয়া নদীর পাড়ের যুদ্ধ, এছাড়া ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কালীকৃষ্ণ নগরের সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন। সেক্টর কমান্ডার-২ মেজর হায়দার (বীর উত্তম)-এর অধীনে ছিলেন তিনি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আপনার অনুভূতি কী?

মোহাম্মদ জাকির হোসেন : আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আনন্দ ও গর্ববোধ করি। কেননা মুক্তিযোদ্ধারা হলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান। আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে পরিচয় দিতে পারি মাথা উঁচু করে। সেই সাথে একজন মুক্তিযোদ্ধার উত্তরসূরি হিসেবে প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমিকে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার আন্দোলনে নিজেকে একজন কর্মীযোদ্ধা মনে করি। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় যে কোনো চক্রান্ত প্রতিরোধে নিজেকে দায়বদ্ধ মনে করি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সঞ্চারে আপনার করণীয় কী?

মোহাম্মদ জাকির হোসেন : মুক্তিযুদ্ধ বাঙালির পরিচয়ের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তরুণ প্রজন্মকে বাঙালি হিসেবে তাদের আত্মপরিচয় বলীয়ান করে দেশপ্রেমিক নাগরিক সম্পদে গড়ে তুলতে হবে। যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে এদেশ স্বাধীন করেছে তা যেনো বাস্তবায়ন করা যায় সেজন্যে দেশের গঠনমূলক সকল কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করবো। বর্তমানে যারা জীবিত আছেন প্রত্যেকের যুদ্ধকালীন সময়ের ঘটনাগুলোর স্মৃতি পাণ্ডুলিপির মাধ্যমে ও বিভিন্নভাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করবো। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে ধর্মণ্ডবর্ণ নির্বিশেষে সকলের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবো। তাদের নিকট মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরে স্বাধীনতা বিরোধী যে কোনো চক্রান্ত প্রতিরোধে সচেতন থাকবো। বিভিন্ন দিবস ও অনুষ্ঠান উপলক্ষে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মন ও মননের গভীরে প্র্রোথিত করতে হবে। সর্বোপরি, নিজে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রাত্যহিক জীবনে অনুসরণ ও চর্চার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের নিকট উদাহরণ হিসেবে পেশ করতে হবে।

উল্লেখ্য, মোহাম্মদ জাকির হোসেন, সিনিয়র শিক্ষক (গণিত), কচুয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও সভাপতি, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ কমান্ড।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়