মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০

চাঁদপুর জেলা কারাগারে দুই গুণ বন্দি

চাঁদপুর জেলা কারাগারে দুই গুণ বন্দি
মিজানুর রহমান ॥

মাদকবিরোধী ও ইলিশ প্রজনন ক্ষেত্র রক্ষার অভিযানসহ বিএনপি-জামায়াতের চলমান আন্দোলনকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধরপাকড়ে চাঁদপুর জেলা কারাগারে চাপ বেড়েছে বন্দিদের। ধারণ ক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ বন্দি রয়েছে এখন এই জেলা কারাগারে।

তবে আসন সঙ্কুলান নিয়ে কোনো সমস্যা হচ্ছে না বলে দাবি কারা কর্তৃপক্ষের। জামিনে বেরিয়ে আসা আসামিদের ভাষ্য, বন্দিদের খুব কষ্ট হচ্ছে। ঘুমানো, গোসলসহ বিভিন্ন কাজে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন তারা।

সম্প্রতি জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত চাঁদপুর জেলার প্রতিটি থানায় নাশকতা ও পুলিশের কাজে বাধাসহ রাজনৈতিক একাধিক মামলা হয়েছে। ওই মামলায় অসংখ্য নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। প্রতিদিনই রাজনৈতিক নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হচ্ছেন পুলিশের হাতে। যারা সবাই চাঁদপুর জেলা কারাগারে বন্দী।

এছাড়া মাদক মামলায় আটকতো আছেই। প্রতিদিনই কারাগারে ঢুকছে মাদক পাচার, বিক্রয় ও সেবনকারী। অপরদিকে গত ২ নভেম্বর থেকে উঠে গেছে নদীতে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান। গত ১২ অক্টোবর থেকে ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞায় চাঁদপুরে প্রায় ৩৭১ জন জেলে আটক হয়ে কারাগারে গেছেন। জেলেদের অনেকেই এখন জামিনে বের হচ্ছেন।

চাঁদপুর জেলা কারাগারের জেলার মুহাম্মদ মুনীর হোসাইন জানান, চাঁদপুর জেলা কারাগারটি ৪৫৪ জন পুরুষ ও ২১ জন নারী বন্দি (হাজতি ও কয়েদি) মিলে মোট ৪৭৫ জনের ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন হলেও এখানে এখন পর্যন্ত মোট আসামি ও কয়েদি মিলে বন্দি আছেন ৯৭৬ জন। এর মধ্যে নারী বন্দি আছেন ৪৪ জন। এই ৯৭৬ বন্দির ভেতরে সাজাপ্রাপ্ত কয়েদির মধ্যে সশ্রম কারাদণ্ড প্রাপ্ত ১৯৯ জনের মধ্যে ২০জন নারী। বিনাশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ১৬৮ জনের ৪ জন নারী কয়েদি রয়েছে। মোট ৯৭৬ জন আসামি ও কয়েদির মধ্যে ৬০৯ জন নারী-পুরুষ হাজতি আছেন। যারা বিভিন্ন মামলায় কারাগারে আছেন। যা হিসেব করলে দেখা যায় ধারণ ক্ষমতার (ধারণ ক্ষমতা ৪৭৫ জন) চেয়ে বন্দির (বন্দি আছেন ৯৭৬ জন) সংখ্যা প্রায় দুই গুণ।

কারাগার সূত্রে জানা যায়, জেলা কারাগারে বন্দিদের জন্যে মোট পাঁচটি ভবন রয়েছে। এর মধ্যে দুটি ৪তলা ভবন, দুটি দোতলা ভবন ও একটি একতলা ভবন রয়েছে। এতে ২৮টি ওয়ার্ড রয়েছে। এর মধ্যে ৩টি নারী ওয়ার্ড। এ ভবনগুলোতে বন্দিরা থাকছেন।

জেলার মুহাম্মদ মুনীর হোসাইন বলেন, বর্তমানে জেলা কারাগারে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে দুইগুণ বন্দি আছেন। তারা সবাই ওয়ারেন্টের প্রেক্ষিতে বা কোনো না কোনো মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে এসেছেন। সাধারণভাবে এক হাজার বন্দি এ কারাগারে থাকতে পারে। আসামি খুব বেশি হয়ে গেলে আমরা ওয়ার্ডের বারান্দাগুলো খুলে দেই। সেখানে তারা থাকতে পারে। আমাদের বন্দিদের সাথে স্বজনদের সাক্ষাৎকারের রুমটি আকারে কিছুটা ছোট। তাই বন্দির সংখ্যা বেশি হলে তাদের স্বজনেরা সাক্ষাৎ করতে আসলে কিছুটা চাপ পড়ে। আমরা চাইলেও এই রুমটি বড় করতে পারবো না। বর্তমানে আমাদের জনবলের ঘাটতি আছে। আমরা তারপরও চেষ্টা করি তাদের সেবা দেয়ার। আমাদের কাজ হলো, যারা এখানে আসবেন তাদের দেখাশোনা করা। ভালো রাখা ও ভালো পথে আনার চেষ্টা করা।

জেলা কারাগারের সুপার মোহাম্মদ ফোরকান ওয়াহিদ জানান, জেলা কারাগারে সমসময় ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত বন্দি থাকে। এখানে বন্দিদের থাকার জন্যে যে রুমগুলো ব্যবহার করা হয়, সেগুলো অনেক বড়। এজন্যে তাদের থাকতে খুব একটা সমস্যা হয় না। এখন পর্যন্ত আমরা অতিরিক্ত বন্দি নিয়ে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হইনি। তাদের খাবার আনুপাতিক হারে বিতরণ করা হয়। অর্থাৎ বন্দি যতজন থাকবেন ততজনের ওপরে নিয়মানুযায়ী যে যতটুকু খাবার পান তার প্রেক্ষিতে গুণ করে খাবার দেয়া হয়। যে ক’জন বন্দি থাকবেন তারা একেকজন সরকারি নিয়মানুযায়ী যে খাবার পাওয়ার কথা সেই অনুযায়ীই যতজনই থাক ততজনেরই খাবার রান্না হয় এবং প্রত্যেকে সঠিক ও সমান খাবার পান। ফলে বন্দি বাড়লেও খাবারে কোনো সমস্যা নেই। তাদের ম্যানেজে অবকাঠামোগত কিছুটা সমস্যা দেখা দেয়। যেমন বিশেষ করে ওয়াশ রুমে সমস্যা হয়। এ কারাগারে অতিরিক্ত বন্দি হলে আমাদের স্টাফদের কিছুটা চাপ নিতে হয়।

তিনি বলেন, যে সকল বন্দি পড়ালেখা জানে না, তাদের নিরক্ষরতা দূর করার জন্য অক্ষর জ্ঞান দেয়া হয়। তিনি জানান, মা ইলিশ রক্ষা অভিযানে অনেক জেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযান শেষে ইতিমধ্যে তাদের অনেকেই জামিনে চলে গেছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়