প্রকাশ : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
ধানুয়া মাদ্রাসার কাগজপত্র জালিয়াতির দায়ে উপাধ্যক্ষ কারাগারে
জালিয়াতির দায়ে হাবিবুন্নবী মোঃ মহিউদ্দিন নামে এক মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষকে জেলে পাঠিয়েছে আদালত। রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) চাঁদপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রট আদালতের বিচারক মোঃ মোরশেদুল আলম এ আদেশ দেন। তার বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারায় সুনির্দিষ্ট অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার শ্রীপুর ইসলামিয়া কামিল (এম. এ.) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, এইচ.এম. মহিউদ্দিন ফরিদগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া ছালেহিয়া ফাজিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। নৈতিক স্খলনসহ মাদ্রাসার শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে ৫/২/২০২৩ তারিখে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং মাদ্রাসা কমিটি তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনাল চট্টগ্রামে ৬৬০/২০২৩ মামলা দায়ের করেন। এই অবস্থায় এইচ. এম. মহিউদ্দিন মাদ্রাসার স্বার্থ ও শৃঙ্খলা বিরোধী কাজে পুনরায় লিপ্ত হলে মাদ্রাসা কমিটি ১/১/২০২৪ তারিখে তাকে স্থায়ী বহিষ্কারের সুপারিশ করে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, বসিলা, ঢাকা বরাবর আবেদন করে। এরপর গত ৬/২/২০২৪ তারিখে তিন দিনের একটি ছুটির আবেদন (৬/২/২০২৪ হতে ৮/২/২০২৪ পর্যন্ত) মাদ্রাসায় রেখে গিয়ে আর কর্মস্থলে যোগ দেননি তিনি।
সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে এরই মধ্যে তথ্যগোপন করে তিনি শ্রীপুর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা, বুড়িচং, কুমিল্লায় অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেছেন। যা নিয়ে গত ১৩ মার্চ, ২০২৪ তারিখে জাতীয় এবং স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এক পর্যায়ে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুল মান্নান ফোন করে ধানুয়া ছালেহিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ হারুনুর রশিদের কাছে এইচ. এম. মহিউদ্দিনকে প্রদত্ত ছাড়পত্র সম্পর্কে জানতে চান৷ কোনো ছাড়পত্র তাকে দেওয়া হয়নি নিশ্চিত করলে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান হোয়াটসঅ্যাপে ধানুয়া ছালেহিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদের কাছে একটি ছাড়পত্র প্রেরণ করলে এইচ. এম. মহিউদ্দিনের জালিয়াতির বিষয়টি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ হারুনুর রশিদ বাদী হয়ে এইচ. এম. মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে চাঁদপুর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং সি.আর. ১৭৮/২৪। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ প্রদান করে। তদন্ত শেষে পিবিআই এইচ. এম. মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতি, অবৈধ সীল মোহর তৈরি, জাল ছাড়পত্র প্রস্তুত ও সংরক্ষণ করায় পেনাল কোডের ৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারায় সুনির্দিষ্ট অপরাধে প্রমাণ পেয়েছে বলে প্রতিবেদন দাখিল করে। গত ২২/৯/২০২৪ তারিখে আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন।