প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০
সারাদেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে দ্রুত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণে তথা রোগীকে সঠিক সময়ে চিকিৎসা সেবা দিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছে সরকার। সম্প্রতি ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি অ্যাম্বুলেন্সটির পরিচালনায় নানামুখী অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
ফরিদগঞ্জে অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভারকে হাসপাতালে রেখে সড়কে দাফিয়ে বেড়াচ্ছে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স। মূল চালক না চালিয়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক চালককে দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালানোর বিষয়টি এখন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। মূল চালক দেলোয়ার হোসেন (৪৫) না চালিয়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক তৃতীয় ব্যক্তিকে দিয়ে সরকারি এই অ্যাম্বুলেন্সটি চালানোর কারণে অবৈধ মালামাল পরিবহনেরও অভিযোগ তুলেছেন হাসপাতালের নিকটবর্তী স্থানীয়রা।
এদিকে সম্প্রতি ‘সারাদেশে অবৈধ পণ্য সরবরাহের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স’ এমন শিরোনামের সংবাদ পত্রিকার পাতায় অহরহ দেখা মিলছে। তবে কি ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সটিতেও পরিবহন করা হচ্ছে অবৈধ মালামাল?
এদিকে প্রয়োজনীয় সময়ে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়ায় ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে চিকিৎসার জন্যে আগত রোগীদের আত্মীয়-স্বজনদের হাহাকার শোনা যায়।
সরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স অন্য কাজে ব্যস্ত রেখে রোগীদের প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে থাকেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সের নির্ধারিত চালক মোঃ দেলোয়ার হোসেন। রোগীর অভিভাবকদের এমন অভিযোগ যেন নিত্য দিনের ঘটনা। গত কয়েক বছর ধরে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স কখনও গভীর রাতে রোগী বহন না করে বেরিয়ে যায়, কোথায় যায় তার কোনো তথ্য জানে না কেউ।
স্থানীয়রা জানান, অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার দেলোয়ার হোসেন সরকারি চাকরির প্রতি গুরুত্ব না দিয়ে নিজেস্ব কিশোর গ্যাং দিয়ে সম্পত্তি দখল, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানাবিধ অনিয়মণ্ডদুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর সড়ক দিয়ে হুঁইসেল বাজিয়ে চাঁদপুরের দিকে যেতে দেখা যায় ফরিদগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সটিকে। এ সময় স্থানীয়রা গাড়িতে চালক দেলোয়ার হোসেনকে না দেখে ছাত্রদল নেতা নাহিদ হোসেনকে দেখতে পায়। খবর পেয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে অ্যাম্বুলেন্স চালক দেলোয়ার হোসেনকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাওয়া যায়। এ সময় তার কাছে ‘অ্যাম্বুলেন্স কোথায় গেছে, কে চালিয়ে নিয়ে গেছে, জানতে চাইলে চালক দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমি গভীর রাতে ঢাকা থেকে এসেছি, গাড়ি স্যারের ড্রাইভার খাজায় নিয়ে গেছে। ‘স্যারের (উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা আলী আশ্রাফ চৌধুরীর) ড্রাইভার মোস্তফা কামাল খাজা অ্যাম্বুলেন্স চালানো সঠিক কিনা’ জানতে চাইলে অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার দেলোয়ার হোসেন বলেন, সেটা স্যারে জানে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলী আশ্রাফ চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে আমরা তাকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিবো।
চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ সাহাদাৎ হোসেন জানান, এ ধরনের ঘটনা ঘটলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনো অনিয়ম সহ্য করা হবে না।