প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০২৩, ০০:০০
যথাযোগ্য মর্যাদায় আগামী ৫ আগস্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী ক শ্রেণীর দিবস হিসেবে উদযাপন, ৮ আগস্ট বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উদযাপন উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের আয়োজনে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২০ জুলাই বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপ্রধানের বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান। তিনি সভার প্রারম্ভে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবং ১৫ আগস্ট জাতির পিতাসহ তাঁর পরিবারের নিহত সকল সদস্যের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বলেন, মন্ত্রী পরিষদের সিদ্ধান্তের আলোকে যথাযোগ্য মর্যাদায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে উদযাপিত হবে আগস্ট মাসের তিনটি দিবস। তিনি বলেন, শোকাবহ আগস্ট মাস বাঙালির জীবনে একটি বেদনাদায়ক মাস। এই মাসে জন্ম হয়েছে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রাণপ্রিয় সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের। যা অত্যন্ত আনন্দের হলেও তা বেদনায় রূপ নিয়েছে পনর আগস্টের ঘটনায়। এই আগস্ট মাসেই বাঙালি জাতির অহঙ্কার, বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী। একই সাথে বঙ্গমাতা ও শেখ কামালসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের শাহাদাতবার্ষিকী। যা খুবই বেদনাদায়ক ও হৃদয়বিদারক। আমরা যথাযোগ্য মর্যাদায় বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়েই দিবসগুলো উদযাপন করব। আপনারা সকলেই গৃহিত কর্মসূচির আলোকে তা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবেন। তিনি জাতির জনক, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালের কর্মময় জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেন এবং সরকারি সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্ধারিত দিবসগুলোতে উপস্থিতি কামনা করেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বশির আহমেদ গত বছরের আগস্ট মাসে এ উপলক্ষে গৃহিত কর্মসূচির বিবরণী পাঠ করেন। সভায় বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুদীপ্ত রায়, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটোয়ারী দুলাল, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী মনোয়ার হোসেন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ ওয়াদুদ, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুন্নাহার চৌধুরী, সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ, পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডঃ রনজিত রায় চৌধুরী, স্কাউট সাধারণ সম্পাদক অজয় কুমার ভৌমিক, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বাবু, সাংস্কৃতিক সংগঠক ও সাংবাদিক শহীদ পাটোয়ারী, নাট্যকার শরীফ চৌধুরী, রফিকুল ইসলাম বাবু, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট চাঁদপুর জেলার সভাপতি তপন সরকারসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ।
বক্তারা বলেন, আর কয়েক মাস পরেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন, তাই দিবসগুলো পালন করতে গিয়ে আমাদেরকে যথেষ্ট সচেতনতার পরিচয় দিতে হবে। আগস্ট মাসকে কেন্দ্র করে স্বাধীনতাবিরোধী বা সমাজবিরোধীরা যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি করতে না পারে, সেদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যথেষ্ট নজর দিতে হবে। রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করে কোনরূপ গুজব সৃষ্টি করা বা গুজবে কান না দেয়ার ব্যাপারেও বিশেষ সতর্কতা গ্রহণ করতে হবে। তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে বলেই আজ আমরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছি। তাই জাতির পিতার আদর্শ হৃদয়ে ধারণ করেই সুখী, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।
জাতীয় শোক দিবস ১৫ আগস্ট সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়িত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা, সকাল ৯টায় চাঁদপুর সরকারি কলেজ প্রাঙ্গনে অবস্থিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমী পর্যন্ত শোক র্যালী এবং শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জীবনকীর্তির উপর আলোচনাসভা ও পুরস্কার বিতরণ, দুপুর ১২টায় হাসপাতাল, জেলখানা, এতিমখানা, সরকারি শিশু পরিবার, সরকারি বাক শ্রবণ প্রতিবন্ধি বিদ্যালয় সমূহে উন্নত খাবার পরিবেশন, সকল মসজিদ, মাদ্রাসা সমূহে সুবিধাজনক সময় মিলাদ মাহফিল, বিশেষ মোনাজাত এবং সকল মন্দির ও উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা। সুবিধাজনক সময় শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বঙ্গবন্ধুর জীবনীভিত্তিক প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন, স্থানীয় পত্রিকায় বিশেষ প্রচার প্রচারণা, জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে বিশেষ নাটক মঞ্চায়নসহ ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
এছাড়াও ৫ আগস্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী ও ৮ আগস্ট বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠান হবে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে, আর বঙ্গমাতা ফজিলাতুননেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান হবে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে।