রবিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৯ জুলাই ২০২৩, ০০:০০

হরিসভা এলাকার নিজ বাসস্থান হতে ব্যবসায়ীর গলিত লাশ উদ্ধার
বিমল চৌধুরী ॥

চাঁদপুর পুরাণবাজার হরিসভা এলাকার নিজ বাসভবন হতে ব্যবসায়ীর অর্ধ পচা গলিত লাশ উদ্ধার করে পুরাণবাজার ফাঁড়ি পুলিশ। জানা যায়, পুরাণবাজারের চাল ব্যবসায়ী সমর সাহার কনিষ্ঠপুত্র চাল ব্যবসায়ী সুজন সাহা (৩০) তারই পৈত্রিক সম্পত্তি পুরাণবাজার পূর্ণসাহার বাড়িতে পৃথকভাবে একা বসবাস করে আসছিলেন। অবিবাহিত সুজন সাহার সাথে তার পরিবারের অন্য দুই ভাই ও পিতার সাথে তেমন কোনো মিল না থাকায় সে পরিবার থেকে অনেকটাই ছিলো বিচ্ছিন্ন। তাই তার ব্যাপারে পরিবারের অন্য কেউ তেমন খোঁজ খবর রাখতেন না বলেও সরজমিনে জানা যায়।

১৮ জুলাই মঙ্গলবার সকালের দিকে তার বসতবাড়িতে থাকা অন্যান্য পরিবারের লোকজন পচা দুর্গন্ধ পেয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে থাকে এবং গন্ধের উৎস সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করে। একপর্যায়ে তারা বুঝতে পারেন সুজন সাহার ঘর থেকেই দুর্গন্ধ আসছে। সাথে সাথে বাড়ির লোকজন তার বাবাকে বিষয়টি অবহিত করলে তা পুরাণবাজার ফাঁড়ি পুলিশকে জানানো হয়। সংবাদ পেয়ে পুরাণবাজার ফাঁড়ির এসআই রাজীব শর্মা সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন এবং ঘটনা সম্পর্কে অবহিত হয়ে তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান। এক পর্যায়ে চাঁদপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইয়াসির আরাফাত ও চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুহসিন আলম ঘটনাস্থলে আসেন। পরে পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য থানায় নিয়ে আসলেও এদিন আর ময়নাতদন্ত না হওয়ায় সুজনের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। এদিকে পুলিশের উপস্থিতিতেই তার হতভাগ্য পিতা সমর কান্তি সাহা তার পুত্রের ময়নাতদন্ত অর্থাৎ কোনরূপ কাটা ছেঁড়া ছাড়াই যাতে তার মৃত পুত্রকে ধর্মীয় বিধানমতে দাহ করা যায়, সে ব্যাপারে মডেল থানার অফিসার ইনচার্জকে অনুরোধ জানান। তার পিতা পুলিশকে জানান, আমার মত সুখী কেউ নেই, আবার আমার মত দুঃখী কেউ নেই। আমি পুত্রদের সুখের জন্যে আলাদা ব্যবসা-বাণিজ্যসহ ভিন্ন পাকা বসতঘর করে দিয়েছি। সে একাই সে ঘরে থাকত। কিন্তু মরণ নেশা তার সব কেড়ে নেয়। অনেক বুঝিয়েও তারে ঘরে ফেরাতে না পেরে নিজেরাই ব্যর্থ হয়ে গেছি। অনেক চেষ্টা করেছি বিয়ে দিতে। কিন্তু তার অনিয়ন্ত্রিত চলাফেরার কারণে তা আর হয়ে উঠেনি। ছেলের মৃত্যুর ব্যাপারে কারো প্রতি কোনো অভিযোগ নেই বলেও তিনি জানান।

লাশ উদ্ধার করতে গিয়ে দেখা যায়, তার বসতঘরের লাইট, ফ্যান, এসি সবই চলমান রয়েছে, শুধু খাটের নিচে পড়ে আছে সুজনের নিথর পচা গলিত মরদেহ। প্রত্যক্ষদর্শীর ধারণা রাতে বা দিনের কোনো এক সময় সে খাট থেকে পড়ে গিয়ে আহত বা স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারে এবং ঘরে কোনো লোকজন না থাকায় ঘটনা সম্পর্কে কেউ কিছু জানতে পারেনি। তাই তার মরদেহ পচে গিয়ে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়েছে। ধারণ করা হচ্ছে ৪/৫ দিন আগেই তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।

এদিন তার মৃত্যু সংবাদ শুনে সাথে সাথে চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহ-সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায়, সহ-সভাপতি তমাল কুমার ঘোষ, পরিচালক পরেশ চন্দ্র মালাকার, গোপাল সাহা, জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাডঃ বিনয় ভূষণ মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ রনজিত রায় চৌধুরী (পিপি), উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা অজিত সাহা, সদস্য অ্যাডঃ প্রভাষ সাহা, সদর উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বাসুদেব মজুমদার, পৌর কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ ভাস্কর দাস, সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর, পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি নেপাল চন্দ্র সাহাসহ অনেকেই সে বাড়িতে যান।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়