রবিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২৩, ০০:০০

আমার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর এমন বিরল সম্মান অর্জনে আমি গর্বিত
বিমল চৌধুরী ॥

চত্বারিংশ জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলন ১৪২৯-এর রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রতিযোগিতায় জাতীয়ভাবে অনন্য মানপ্রাপ্ত পূরবী দে সিমন্তিকে সংবর্ধনা দিলো তারই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শুদ্ধ সঙ্গীত চর্চার ধারক ও বাহক চাঁদপুরের প্রাচীন সংগীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চাঁদপুর সংগীত নিকেতন।

গত ১৫ জুলাই সন্ধ্যায় সংগীত নিকেতনের নিজস্ব কার্যালয়ের চন্দ্রকান্ত সাহা মিলনায়তনে পূরবী দের হাতে সংবর্ধনা পদক তুলে দেন জেলা প্রশাসক ও প্রতিষ্ঠানের সভাপতি কামরুল হাসান।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ, শিল্পী কলাকুশলী, বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সুধীজনদের ব্যাপক উপস্থিতিতে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর এমন বিরল সম্মান অর্জনে আমি গর্বিত। পূরবী দে সিমন্তির এমন অসামান্য প্রাপ্তি প্রমাণ করে সংগীত নিকেতন শুদ্ধ সংগীত চর্চার মাধ্যমে ভালো মানের শিল্পী গড়ে তুলতে আন্তরিকভাবে শিক্ষা দিয়ে থাকে। সংগীত নিকেতনের শিক্ষকদের আন্তরিকতা আর সিমন্তির প্রচেষ্টার কারণেই সে এই বিরল সম্মান অর্জন করতে পেরেছে। আমি তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি। সে একদিন জাতীয় মানের শিল্পীর মর্যাদা লাভ করবে। তিনি বলেন, রবীন্দ্র সংগীত ও নজরুল সংগীতের মধ্য দিয়ে শেকড়ের সন্ধান খুঁজে পাওয়া যায়। আমি গান শুনতে ভীষণ ভালোবাসি, তবে আমি যে গান শুনি তা এই প্রজন্মের অনেকের পছন্দের নয়। আজকাল রবীন্দ্র, নজরুল সংগীতের অনুষ্ঠান হলে অনুষ্ঠানে দর্শক-শ্রোতা হবে কিনা তা নিয়ে আয়োজকদের চিন্তা করতে হয়। অথচ এই সকল গানের মাঝেই শেকড়ের সন্ধান পাওয়া যায়, পাওয়া যায় দেশের প্রতি, মানুষের প্রতি মমত্ববোধ ও ভালোবাসার অনুভূতি। তিনি আরো বলেন, আমাদেরকে শুদ্ধ সংগীত চর্চা করতে হবে, ভালো মানের শিল্পী তৈরিতে উৎসাহ দিতে হবে। ভালো মানের শিল্পী দেশ ও জাতির গর্ব। আজকাল কোনো বাবা-মাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় যে, আপনার সন্তানকে আপনি কী বানাতে চান, তাহলে তারা কোনো চিন্তা না করেই নিঃসন্দেহে বলে দেয় ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার বানাবার কথা। অথচ কেউ তার সন্তানকে সংগীত শিল্পী বানাবার কথা বলেন না। তিনি বাচ্চাদেরকে অপ্রয়োজনে মোবাইল ফোন না দেয়ার জন্যে অনুরোধ জানান এবং তাদেরকে বাংলা শেখানোরও পরামর্শ দেন। তিনি পূরবী দে সিমন্তির মত এমন শিক্ষার্থী তৈরিতে সংগীত নিকতন অবদান রাখায় সংগীত নিকেতনের সকলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, আমার কর্মস্থল, সর্বোপরি আমার সহকর্মীর সন্তানের অনন্য মান প্রাপ্তিতে আমি সত্যিকারভাবেই গৌরবান্বিত বোধ করছি। তিনি সংগীত নিকেতনের সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল পৌরবাসীর পক্ষ থেকে সিমন্তিকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, সিমন্তি শুধু বাবা, মা বা সংগীত নিকেতনের গর্ব নয়, সে জেলাবাসীর গর্ব। জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত প্রতিযোগিতায় এই প্রথম চাঁদপুরের কোনো শিল্পী অনন্য মান অর্জন করায় পৌর মেয়র হিসেবে আমি অত্যন্ত খুশি। যে কোনো প্রয়োজনে চাঁদপুর পৌরসভা তার পাশে থাকবে। তিনি সিমন্তির উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বশির আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগীত নিকেতনের অধ্যক্ষ বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী স্বপন সেনগুপ্ত। সংগীত নিকেতনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক ফারুক আহম্মদের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী, জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, আনন্দধ্বনি সংগীত শিক্ষায়তনের অধ্যক্ষ রফিক আহমেদ মিন্টু, বিশিষ্ট সংগঠক সেলিম মাহমুদ, রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদ মতলব উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক দুলাল পোদ্দার, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা কল্পনা সরকার প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে একক রবীন্দ্র সঙ্গীত পরিবেশন করেন পূরবী দে সিমন্তি। তাকে তবলায় সহযোগিতা করেন দীপক চক্রবর্ত্তী ও মন্দিরায় সহযোগিতা করেন সিমন্তির বাবা বিমল চন্দ্র দে। জেলা প্রশাসক, পৌর মেয়রসহ সুধীজন অধীর আগ্রহ নিয়ে একক সংগীত সন্ধ্যা উপভোগ করেন। পুরো অনুষ্ঠান জুড়েই ছিল সুশৃঙ্খল পরিবেশ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়