প্রকাশ : ০৯ জুন ২০২৩, ০০:০০
![জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন শুধু সময়ের দাবি নয়, মুখ্য দাবিতে পরিণত হয়েছে](/assets/news_photos/2023/06/09/image-34077.jpg)
সাবেক ছাত্রনেতা, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান চাঁদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফেরদৌস মোর্শেদ জুয়েল বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করাটা জরুরি হয়ে পড়েছে। সম্মেলন আয়োজন করাটা এখন শুধু সময়ের দাবি নয়, একেবারে মুখ্য দাবিতে পরিণত হয়েছে।
তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে ভাবনা বিষয়ে চাঁদপুর কণ্ঠকে প্রদত্ত সাক্ষাৎকারে তার সুস্পষ্ট অভিমত ব্যক্ত করেন। নিচে প্রশ্নোত্তর আকারে তার সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারটি হুবহু তুলে ধরা হলো :
চাঁদপুর কণ্ঠ : কেন্দ্র থেকে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন আগামী ১৭ জুন হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে, এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কী?
ফেরদৌস মোর্শেদ জুয়েল : আমি মনে করি, এটি রাজনৈতিক দলের একটি গতানুগতিক প্রক্রিয়া। তবে সম্মেলন আরো আগে হওয়া উচিত ছিলো। বিলম্ব হলেও ঘোষণা করায় কেন্দ্রকে অভিনন্দন। সম্মেলনের আগাম সফলতা কামনা করছি।
এ বিষয়ে আমার সুস্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে, আমরা যারা আওয়ামী পরিবারের সন্তান, আমাদের একমাত্র অভিভাবক আমাদের নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত দিবেন সেটিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। আর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের সিদ্ধান্ত অবশ্যই নেত্রীর নির্দেশ। সে মোতাবেক জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন বিষয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ চিঠি দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। এতে আমরা তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা অনেকটা উজ্জীবিত। কিন্তু যখন আবার শুনি, জেলা আওয়ামী লীগ সম্মেলন করার বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেনি, এ বিষয়ে কোনো প্রস্তুতি গ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছে না, তাতে আমরা তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা হতাশায় ভুগি। যা আদৌ কাম্য নয়। আমার ব্যক্তিগত অভিমত, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্মেলন করা হলে দল সুসংগঠিত হবে। আর সম্মেলন না করা হলে সেটা দলের জন্যে কতোটুকু মঙ্গলজনক হবে সেটা শুধু নেতৃবৃন্দই ভালো বলতে পারবেন।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি কি মনে করেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এবং বিএনপি-জামাতের আন্দোলন মোকাবেলা করতে সম্মেলনের মাধ্যমে দলকে ঢেলে সাজানো এখন সময়ের দাবি?
ফেরদৌস মোর্শেদ জুয়েল : আমি পূর্বেই বলেছি, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে তৃণমূল পর্যায়ে ঢেলে সাজানো উচিত। দলকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগের বিষয়ে বর্তমানে যে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে, আমি মনে করি, এই মতপার্থক্য দূর করতে অনতিবিলম্বে জেলা সম্মেলন হওয়া উচিত। কারণ, আগামী দিনগুলো আমাদের জন্যে বড় চ্যালেঞ্জিং। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং বিএনপি-জামাত সহ সকল অপশক্তির নানা ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হলে এখনই দলকে তৃণমূল পর্যায় থেকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন। তাছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করতে হলেও সম্মেলনের মধ্য দিয়ে দলের সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করে সরকারের সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে জনগণের কাছে পৌঁছে দিয়ে আমাদের লক্ষ্য পূরণ করার বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সাথে ভাবা উচিত। সেজন্যে সম্মেলনের বিকল্প নেই। সে আলোকে বলতেই হয়, জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন এখন সময়ের দাবিই শুধু নয়, মুখ্য দাবিতে পরিণত হয়েছে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি কি জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের পরিবর্তন চান? চাইলে কী ধরনের পরিবর্তন চান?
ফেরদৌস মোর্শেদ জুয়েল : সম্মেলন হলে উপস্থিত কাউন্সিলরদের মতামতকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত হবে। সেক্ষেত্রে যদি নেতৃত্বের পরিবর্তন হয়, তাহলে হবে। তাতে সমস্যা নেই। কিন্তু আমরা চাই স্মার্ট নেতৃত্ব। যার মাধ্যমে সৃষ্টি হবে স্মার্ট আওয়ামী লীগ। যে নেতৃত্ব দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীসহ সকলের সাথে সুসম্পর্ক রাখবে--এমন নেতৃত্ব চাই। আমরা এমন নেতৃত্ব চাই না, যে নেতৃত্ব শুধু নিজেদের স্বার্থ দেখবে, নিজেদের আখের গোছাবে, নেতা-কর্মীদের চিনবে না।
চাঁদপুর কণ্ঠ : উপরোক্ত প্রশ্নমালার বাইরে আপনার কোনো বক্তব্য থাকলে বলুন।
ফেরদৌস মোর্শেদ জুয়েল : আমরা চাই, আমাদের মধ্যে সকল ভেদাভেদ ভুলে আমরা আওয়ামী পরিবারের সকল সদস্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে এই বাংলাদেশের মধ্যে এমন কোনো শক্তি নেই, যারা আমাদের সামনে দাঁড়ানোর সাহস পাবে।
আমি দলের একজন নগণ্য কর্মী হিসেবে বলতে পারি, আমাদের দল একটি বৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠন। আমাদের দলে একই পদে একাধিক যোগ্য প্রার্থী রয়েছে। আমাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকবে, কিন্তু প্রতিহিংসা থাকবে না। পাশাপাশি দলের বৃহৎ স্বার্থে আগামীতে আমাদের সম্মুখের চ্যালেঞ্জ এবং পুনরায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করতে সকলের সমন্বয়ে সম্মেলনের মধ্য দিয়ে একটি সুন্দর জেলা কমিটি হবে--এই প্রত্যাশা করছি।