প্রকাশ : ৩১ মে ২০২৩, ০০:০০
![দলকে চাঙ্গা রাখতে সম্মেলনের বিকল্প নেই](/assets/news_photos/2023/05/31/image-33687.jpeg)
ঐতিহ্যবাহী পরিবারের সন্তান এস এম সালাহ উদ্দীন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র হাতে লড়েছেন। ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতির মাঠে থেকে প্রগতিশীল সকল আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ নিয়েছেন। সম্প্রতি চাঁদপুর জেলা আওযামী লীগের সম্মেলন উপলক্ষে কথা হয় তাঁর সাথে। জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা হিসেবে সম্মেলন উপলক্ষে তিনি জানিয়েছেন তাঁর অনুভূতির কথা। সোহাঈদ খান জিয়ার গ্রহণ করা সাক্ষাৎকারটি আজ প্রকাশিত হলো।
চাঁদপুর কণ্ঠ : চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হতে যাচ্ছে ১৭ জুন ২০২৩, আপনার প্রতিক্রিয়া কী?
এসএম সালাহ্ উদ্দীন : এই সংবাদটি নিঃসন্দেহে আনন্দের, সম্মেলন হবে শুনে ভালো লাগছে। অনেকেই আমার সাথে যোগাযোগ করছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার স্বাক্ষরিত চিঠি দেখে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী পরিবারের নেতা-কর্মীগণ খুবই উৎসাহিত হয়েছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন এখন সময়ের দাবি। সম্মেলন সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সফল হোক, সার্থক হোক এই প্রত্যাশাই করি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : সম্মেলনে বর্তমান নেতৃত্ব বহাল চান, নাকি কোনো পরিবর্তন চান?
এস এম সালাহ্ উদ্দীন : আওয়ামী লীগ বাংলার স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী সুসংগঠিত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। মেয়াদোত্তীর্ণ এই জেলা কমিটি দীর্ঘদিন যাবৎ নেতৃত্বে আছেন। ইতিমধ্যে একাধিকবার জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করার দাবি উঠেছে। দুর্ভাগ্যবশত সম্মেলন হয়নি। অন্যদিকে সামনে জাতীয় নির্বাচন। দলকে চাঙ্গা রাখতে সম্মেলনের বিকল্প নেই। সম্মানিত কাউন্সিলরগণ তাদের মূল্যবান মতামতের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত দিবেন।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি কি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসতে চান? চাইলে সেটা কোন পদ?
এস এম সালাহ্ উদ্দীন : জি হ্যাঁ। আমি আমার বাবার ওয়ারিশসূত্রে আওয়ামী লীগ করি। দীর্ঘ ১৯ বছর যাবৎ আমি চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সম্মানিত সভানেত্রী, দেশরত্ন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ও আওয়ামী পরিবার যে পদ আমাকে দিবেন আমি বিশ্বস্ততার সাথে আমার দায়িত্ব পালন করবো।
চাঁদপুর কণ্ঠ : উপরের প্রশ্ন সমূহের বাইরে কোনো বক্তব্য থাকলে তুলে ধরুন।
এস এম সালাহ্ উদ্দীন : সংগঠনের কল্যাণে, দেশের ভবিষ্যৎ চিন্তায় সৎ, সাহসী ও পরীক্ষিত কর্মীরাই নেতৃত্বে আসবেন বলে আমি আশাবাদ ব্যক্ত করছি।
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম সালাহ্ উদ্দীন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য। তাঁর পিতা সিকদার আব্দুছ ছামাদ ভাষাবীর, মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও হাইমচর অঞ্চলের সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ছিলেন। তাঁর বাবা পূর্ব পাকিস্তানের এটর্নি জেনারেল অ্যাডঃ নুরুল হুদা সাহেবের আইনজীবী সহকারী ছিলেন। এই সুবাদে ঢাকা হাইকোর্টে বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্যে যাওয়ার সুযোগ হয় এবং বঙ্গবন্ধুর মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতার সুযোগ পান। জাতীয় নেতাগণও তাঁর বাবাকে জানতেন ও স্নেহ করতেন। আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনের তীব্রতার কারণে এক পর্যায়ে ডেপুটি এটর্নি জেনারেল এডভোকেট নুরুল হুদা তাঁর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়ে লন্ডনে চলে যান। তাঁর বাবা তখন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর, সিনিয়র অ্যাডঃ সিরাজুল হকের সহকারী হয়ে (মাননীয় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাহেবের বাবা) যোগদান করেন এবং তাদের মোহাম্মদপুর বাড়িতে থাকেন। তাঁর বাবা কোর্টের কাজের ফাঁকে ফাঁকে ঐতিহাসিক ৬ দফা মেনোফেস্ট্রো হাইকোর্ট এলাকায় বিলি করতেন। সিকদার সাহেব আওয়ামী লীগের জন্মলগ্ন থেকে আওয়ামী লীগ করতেন। তিনি চাঁদপুর থানা আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন। চাঁদপুরের কৃতী সন্তান, জাতীয় নেতা মিজানুর রহমান চৌধুরী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে তাঁর সুসম্পর্ক ছিল। তাঁর মা বেগম ফিরোজা ছামাদ মুক্তিযোদ্ধাদের রাতভর রান্না করে খাওয়াতেন। এসএম শাহজাহান, সিকদার মোঃ মেজবাহ উদ্দীন ও এস এম সালাহ্ উদ্দীন তাঁরা তিন ভাই-ই বীর মুক্তিযোদ্ধা। এসএম সালাহ্ উদ্দীন ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির মধ্য দিয়েই রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন।
’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০-এর নির্বাচন আর তাঁর বাবার হাত ধরেই মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি যুদ্ধ শেষে চাঁদপুর থানা কমান্ডার সৈয়দ অবেদ মুনছুরের নেতৃত্বে চাঁদপুর থেকে লঞ্চ বোঝাই করে অস্ত্র নিয়ে ঢাকা সদরঘাট যান এবং সদরঘাট হতে মিছিল করে ঢাকায় স্টেডিয়ামে যান ও জাতির পিতার হাতে অস্ত্র জমা দেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে চাঁদপুর ফিরে এসে চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়ায় মনোযোগ দেন। তিনি স্কুলের ছাত্র বন্ধুদের নিয়ে ১৯৭২ সালে স্কুল প্রাঙ্গণে স্বাধীন বাংলাদেশে শহিদ মিনার বানিয়ে প্রথম ভাষা দিবস পালন করেন। তিনি ২০০৪ সাল থেকে অদ্যাবধি চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।