শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ৩১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

জীবনের গতিটা আধুনিকতার কারণে আমরা নষ্ট করে ফেলছি
স্টাফ রিপোর্টার ॥

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য ও কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নিয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বিষয়ক প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সহযোগিতায় প্রশিক্ষণটি অনুষ্ঠিত হয়।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ব স্বাস্থ্য) কাজী জেবুন্নেছা বেগম। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ ৫৫ হাজার বর্গমাইলের দেশ। তাই দেশকে বাঁচাতে হবে। সরকার কাউকে বাদ দিয়ে কিছু করবে না। সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা রাখার দায়িত্ব সরকারের। সরকার ২০০৫ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে আইন করেছে। ২০১৩ ও ২০২২ সালে আইন সংশোধন করেছে। প্রধানমন্ত্রী তামাকজাত পণ্যের কারণে কারো যেন মৃত্যু না হয় সে কথাটি বলেছেন। বিশ্বের আর অন্য কোনো রাষ্ট্রের প্রধান এখন পর্যন্ত তা বলেননি। তিনি সবসময় দেশের মানুষের কথা ভাবেন ও চিন্তা করেন।

তিনি বলেন, করোনার কারণে কার্যক্রম কিছুটা ক্ষতি হয়েছে, তবে আমরা বসে ছিলাম না। তামাকের কারণে আমাদের স্বাস্থ্যের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। এটা জীবন-মরণের সাথে সম্পর্ক। তা আগে আমাদের বুঝতে হবে। একজন চিকিৎসকের কাছে আমরা আসি জীবনের শেষ প্রান্তে। তখন আর করার কিছুই থাকে না। জীবনের গতিটা আধুনিকতার কারণে আমরা নষ্ট করে ফেলছি। মাদক ও তামাক ছেলেমেয়েরা ফ্যাশন হিসেবে গ্রহণ করছে। পরে তারা আসক্ত হয়ে পড়ছে। তাদেরকে মাদকের কুফল সম্পর্কে জানাতে ও বুঝাতে হবে। তবে আমাদের সকলের মনে রাখতে হবে বিষ তো বিষই। পোকা মাকড় এর কাছে যায় না। আর মানুষ বিষ জেনেও তা গ্রহণ করে।

অতিরিক্ত সচিব বলেন, আমাদের সুষম খাবার গ্রহণ না করার ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে হচ্ছে। আমরা জাঙ্ক ফুড গ্রহণ করছি। আগে খেলার মাঠ ছিলো, পার্কে ছিলো বসার স্থান ছিল, এখন সেখানে বসে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাচ্ছে ছেলেমেয়েরা। আইন কঠিন আছে, তবে তা আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। সিগারেটের সিঙ্গেল শলাকা বিক্রয় করা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। সিগারেট পরিবেশের সবচেয়ে বড় ক্ষতি করে থাকে। সবাই হাতে হাত মিলে কাজ করলে সকল কাজই সম্ভব। মোবাইল কোর্টের কার্যক্রম বাড়াতে হবে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় স্কুল-কলেজে অনেক শিক্ষার্থী ধূমপায়ী হচ্ছে। এদেরকে এর কুফল সম্পর্কে জানাতে হবে। রাষ্ট্রের সকল অপশক্তিকে দমন করতে হবে। ভাত না খেলে মানুষ মারা যায় না, তবে সিগারেট বেশি খেলে মৃত্যু অনিবার্য।

জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব সাজেদুল ইসলাম, সির্ভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ সাহাদাৎ হোসেন, চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ ইয়াছির আরাফাত, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ ইমতিয়াজ হোসেনের পরিচালনায় উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হুমায়ুন রশিদ, হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম, জেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম, চাঁদপুর ফায়ার সার্ভিস (উত্তর)-এর উপ-পরিচালক সাহিদুল ইসলাম, জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ ইমদাদুল ইসলাম, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ বেলায়েত হোসেন।

প্রশিক্ষণে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এএসএম মোসা, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ, মতলব দক্ষিণ নির্বাহী কর্মকর্তা রেনু, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আল ইমরান শোভন, জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রজত সুভ্র সরকার, জেলা ক্রীড়া অফিসার তরিকুল ইসলামসহ তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে জেলা টাস্ক ফোর্স কমিটির সদস্য ও কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।

প্রশিক্ষণের শুরুতেই চাঁদপুর সির্ভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডাঃ হুমায়ন ইসলাম সাকিব তামাক নিয়ন্ত্রণে ভিডিও ডকুমেন্টারী প্রর্দশন করেন।

বক্তারা বলেন, জর্দা, গুল, সিগারেট সবই তামাকজাত পণ্য। যারা তামাক সেবনের ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণাকারী তাদেরকেও আইনের আওতায় আনত হবে। একজন ধূমপায়ীর কারণে গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হয়। সকল পণ্যের গুণাগুণ আছে, কিন্তু তামাকের ক্ষতি ছাড়া কোনো গুণ নেই। প্রতিটি অফিস আদালতকে ধূমপান মুক্ত ঘোষণা করতে হবে। তাহলে অন্যরা উৎসাহী হবেন। লাইসেন্স ছাড়া কেউ তামাকজাত পণ্য বিক্রয় করতে পারবে না। আমরা নিজেরা ধূমপান করবো না, অন্যকে ধূমপান না করতে নিরুৎসাহী করবো। তাহলেই আমাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়