রবিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:০০

পঁচাত্তরের পর মুক্তিযোদ্ধা ছিলামণ্ডভয়ে সেটাই বলতে পারিনি
কামরুজ্জামান টুটুল ॥

বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদিন। হাজীগঞ্জের ৩নং কালচোঁ উত্তর ইউনিয়নের মাড়কি গ্রামের মৃত আলতাফ আলী মিয়াজীর ছেলে। পেশায় দলিল লিখক জয়নাল আবেদিন স্ত্রী আর ৬ সন্তান নিয়ে বেশ আছেন। ১৯৭১ আগস্টের শেষের দিকে নৌকায় করে কুমিল্লার সালদা নদী পার হয়ে আসামের কংগ্রেস ভবনে উঠেন। সেখানে হোল্ডিং ক্যাম্পে যান, তারপর অম্পি নগরে ক্যাপ্টেন একে শর্মার অধীনে ২২ দিন ট্রেনিং করেন। ট্রেনিং শেষে সেখান থেকে অস্ত্র নিয়ে কুমিল্লা হতে নৌকা আর পায়ে হেঁটে কচুয়ার রঘুনাথপুর বাজারে পৌঁছেন। মাত্র দুদিনের জন্য সবাই সবার বাড়িতে গিয়ে বিশ্রাম নেন। এরপর হাজীগঞ্জের ফিরোজপুর মজুমদার বাড়ি ক্যাম্প, নোয়াপাড়া ভূঁইয়া বাড়ি ক্যাম্পে আবস্থান নেন অন্য মুক্তি বাহিনীর সাথে। ফিরোজপুর হাই স্কুল মাঠে কিছু লোককে ট্রেনিং করান নিজেদের অস্ত্র দিয়ে। একই বছরের অক্টোরর মাসের শেষের দিকে ৬-৭ জনের মুক্তিবাহিনীর একটি দল হাজীগঞ্জের লাকমারা যুদ্ধে অংশ নেন। এরপরে ১০ ডিসেম্বর ফুলছোঁয়া যুদ্ধে অংশ নেন। দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের আয়োজন ‘বিজয়ের মাস ডিসেম্বর : কেমন আছেন মুক্তিযোদ্ধাগণ’ আজকের পর্বে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জয়নাল আবেদিন। তিনি জানান, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন সেটাই ভয়ে বলতে পারেননি। বাড়ি ছাড়া থাকেন বেশ ক’মাস। আমাদের অনেক মুক্তিযোদ্ধা সে সময় মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন। পাকবাহিনীকে ভয় পাননি, যতোটা ভয়ে পেয়েছেন বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর। এভাবে অনেক কথা বলেছেন এই বীর। যার একাংশ চাঁদপুর কণ্ঠের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো :-

চাঁদপুর কণ্ঠ : বছর ঘুরে আবার আসলো বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। আপনার অনুভূতি কেমন?

জয়নাল আবেদিন : গৌরবের মাস ডিসেম্বর। এ মাসে আমরা স্বাধীনতা লাভ করেছি। সরকার আমাদের মূল্যায়ন করছে, কিছুদিন আগে স্মার্টকার্ড ও ডিজিটাল সনদ দিয়েছে। তাতে এক ভিন্ন অনুভূতি লাগে মনে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : সার্বিকভাবে আপনি কেমন আছেন?

জয়নাল আবেদিন : বয়সের কারণে অসুস্থ আছি। এছাড়া ভালো আছি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : ৫১ বছর পূর্বের মুক্তিযুদ্ধের কোন্ স্মৃতি আপনার মনে এখনও জ্বলজ্বল করছে?

জয়নাল আবেদিন : ১৯৭১ সালে আমি তখন দশম শ্রেণিতে পড়ি। স্কুল বন্ধ থাকায় বাকিলা ও বাবুরহাটে গিয়ে কিছু ব্যবসা করতাম। তখন বিভিন্ন বাজারে যাওয়া আসার পথে পাক বাহিনী ব্যাগ চেক করার নামে বেশ হয়রানি আর বাজে আচরণ করতো। তখনই সিদ্ধান্ত নেই পাকিদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। সে কারণেই মূলত আমি ভারতে যাই আগস্টে। স্বাধীনতার পর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের কারণে আমাদের অবমূল্যায়ন হয়েছে। পরে সব স্বাভাবিক হইছে এরশাদের সময়।

চাঁদপুর কণ্ঠ : অনেক রক্তে অর্জিত প্রিয় স্বাধীন দেশের বর্তমান অবস্থায় আপনি কতোটুকু সন্তুষ্ট বা অসন্তুষ্ট?

জয়নাল আবেদিন : বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাগণকে যেভাবে সম্মান দিয়েছেন তাতে আমি সন্তুষ্ট। আর যখন দেশ বিরোধী কিছু লোক এখনোা দেখি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আস্ফালন দেখায় তখন অসন্তুষ্ট হই।

চাঁদপুর কণ্ঠ : সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছাতেই মানুষের জন্ম/মৃত্যু। মাফ করবেন, তবুও জানার ইচ্ছা, আপনি আর কতোদিন বাঁচতে চান?

জয়নাল আবেদিন : যারা আমাদের সাথে যুদ্ধে গিয়ে মারা গেছেন তাদের কথা ভাবতে গিয়ে বলি, আমি তো অনেকদিন বেঁচে আছি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : বর্তমান বা পরবর্তী প্রজন্মের উদ্দেশ্যে আপনি কী কথা রেখে যেতে চান?

জয়নাল আবেদিন : মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়