রবিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২১ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:০০

জনগণের পূর্ণ মৌলিক অধিকার দেখে মরার ইচ্ছা আছে
কামরুজ্জামান টুটুল ॥

বীর মুক্তিযোদ্ধা বিএমএ মহসিন নয়ন। হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন মকিমাবাদ গ্রামের মরহুম চেরাজুল হকের সন্তান তিনি। ব্যবসায়ী এই বীর যোদ্ধার ২ সন্তানের মধ্যে বড়জন চাকুরি করেন আর ছোটজন জাপান প্রবাসী। ছাত্র থাকাকালে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম হয়ে ১৯৭১ সালের এপ্রিলে ভারতে চলে যান ট্রেনিংয়ে। ফের চৌদ্দগ্রাম হয়ে দেশের বাড়ি তথা হাজীগঞ্জের ৭নং বড়কুল ইউনিয়নের চলে আসেন। বাড়িতে থেকে এমএফ (মিলিটারি ফোর্সের মুক্তি ফৌজে) যোগ দেন। ট্রেনিং করে নিজ এলাকা তথা বৃহত্তর হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি, ফরিদগঞ্জ, রামগঞ্জের একাংশ এলাকায় পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে বেশ ক’টি যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের আয়োজন ‘বিজয়ের মাস ডিসেম্বর : কেমন আছেন মুক্তিযোদ্ধাগণ’ আজকের পর্বে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি। তিনি জানান, দেশ স্বাধীন করেছি, কিন্তু দেশের জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়নি। জনগণের পূর্ণ মৌলিক অধিকার চাই। আরো না বলা বহু কথা বলেছেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। যার একাংশ চাঁদপুর কণ্ঠের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

চাঁদপুর কণ্ঠ : বছর ঘুরে আবার আসলো বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। আপনার অনুভূতি কেমন?

বিএমএ মহসিন (নয়ন) : অনুভূতি তো আসলে অনেক। বিশেষ করে শোষক, আমলা আর বুর্জোয়া থেকে স্বাধীনতা মিলেনি আমাদের। মূল অনুভূতি হলো যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে যুদ্ধে গিয়েছি, ৯ মাসে দেশ স্বাধীন করেছি, সেই আকাঙ্ক্ষার কিছু পাইনি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : সার্বিকভাবে আপনি কেমন আছেন?

বিএমএ মহসিন (নয়ন) : সার্বিকভাবে ভালো আছি। ৬৯ বছর বয়সে কেমন আর থাকতে পারি, তবে অন্যসব সহযোদ্ধাদের থেকে ভালো আছি, শোকরিয়া।

চাঁদপুর কণ্ঠ : ৫১ বছর পূর্বের মুক্তিযুদ্ধের কোন্ স্মৃতি আপনার মনে এখনও জ্বলজ্বল করছে?

বিএমএ মহসিন (নয়ন) : ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিবাহিনীর সাথে ফরিদগঞ্জে সাশিয়ালী গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় পাকবাহিনীর একটি সরাসরি যুদ্ধ হয়। সেই যুদ্ধে আমাদের সাথী যোদ্ধা ফরিদগঞ্জের ফারুকের কোমরে পাকিস্তান আর্মির গুলি ঢুকে মারাত্মক আহত হন। এ অবস্থায় আমরা তাকে সেখান থেকে রামগঞ্জের পানিয়ালায় আমাদের ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেই। সেখানে তাকে ভালো চিকিৎসা দিতে না পারার কারণে আহত হওয়ার ৩ দিন পর রক্তক্ষরণে ফারুক মারা যান। বর্তমানে তিনি মরণোত্তর বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত। তিনি ফরিদগঞ্জের হুগলা পাটোয়ারী বাড়ির সন্তান।

চাঁদপুর কণ্ঠ : অনেক রক্তে অর্জিত প্রিয় স্বাধীন দেশের বর্তমান অবস্থায় আপনি কতোটুকু সন্তুষ্ট বা অসন্তুষ্ট?

বিএমএ মহসিন (নয়ন) : পাকবাহিনীকে পরাস্ত করেছি সেটাতেই সন্তুষ্ট। স্বাধীন দেশের বর্তমান অবস্থার সকল কিছুতে অনিশ্চয়তা, নিয়ন্ত্রণহীন দ্রব্যমূল্য, প্রশাসনের দৌরাত্ম্য, কিছুই নিয়স্ত্রণে নেই সরকারের। তাতেই আমি অসন্তুষ্ট।

চাঁদপুর কণ্ঠ : সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছাতেই মানুষের জন্ম/মৃত্যু। মাফ করবেন, তবুও জানার ইচ্ছা, আপনি আর কতোদিন বাঁচতে চান?

বিএমএ মহসিন (নয়ন) : দেশ স্বাধীন করেছি স্বাধীন দেশের আপামর জনগণের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা এ সবের নিশ্চয়তা দানের জন্যে। এ নিশ্চয়তা প্রাপ্তি দেখে মরার ইচ্ছা আছে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : বর্তমান বা পরবর্তী প্রজন্মের উদ্দেশ্যে আপনি কী কথা রেখে যেতে চান?

বিএমএ মহসিন (নয়ন) : বর্তমান বা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এটাই প্রত্যাশা, তারা সবকিছুতে স্বাধীনতা তথা ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা আর মাদকমুক্ত দেশ চালু করুক আর তা ধরে রাখুক।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়