রবিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:০০

বিএনপির কাঁধে ভর করে স্বাধীনতা বিরোধী চক্র মাথাচাড়া দিয়েছে, যা মুক্তিযোদ্ধাদের মাথাব্যথার কারণ
কামরুজ্জামান টুটুল ॥

বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদিন তালুকদার। হাজীগঞ্জের কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের নওহাটা গ্রামের তালুকদার বাড়ির মৃত মোঃ আমির উদ্দিন তালুকদারের সন্তান তিনি। ১১ সন্তানের জনক জয়নাল আবেদিনের সন্তানদের মধ্যে কেউ সরকারি চাকুরিজীবী, কেউ ব্যবসায়ী, কেউ এখনো পড়ালেখা করছে। ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ভারতের কংশ নগরে চলে যান। ভারতের হাতিমারায় ৭ দিন অবস্থান করে বিএলএফ-এর হয়ে ২৬ দিন ট্রেনিং করেছেন সিআরপি কর্নেল দিদার আলমের অধীনে। ট্রেনিং গ্রহণ করে ফিরে আসেন দেশে। দেশে এসে হাজীগঞ্জের বাকিলা ও দ্বাদশগ্রাম ইউনিয়নের বেশ ক’টি এলাকায় থেকে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে। যে যুদ্ধে নিজেও আহত হন। দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের আয়োজন ‘বিজয়ের মাস ডিসেম্বর : কেমন আছেন মুক্তিযোদ্ধাগণ’ আজকের পর্বে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বিএলএফ যোদ্ধা জয়নাল আবেদিন তালুকদার। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী একটি সুসজ্জিত সেনাবাহিনী। আমরা নিরস্ত্র বাঙালি সেই বাহিনীকে মাত্র ৯ মাসে হারিয়েছি। আরো বলেছেন অনেক না বলা কথা, যা চাঁদপুর কণ্ঠের পাঠকদের কাছে তুলে ধরা হলো :

চাঁদপুর কণ্ঠ : বছর ঘুরে আবার আসলো বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। আপনার অনুভূতি কেমন?

জয়নাল আবেদিন তালুকদার : আমরা নিরস্ত্র বাঙালি পাকিস্তানী বাহিনীকে হারিয়েছি। তারা আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। এই সেই ডিসেম্বর মাসে আমরা পাকিস্তানিদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করেছি। ডিসেম্বর মাস আসলে সেই অনুভূতি এতোটা আনন্দ আবেগে ধরা দেয়, যা বলে বোঝাতে পারবো না।

চাঁদপুর কণ্ঠ : সার্বিকভাবে আপনি কেমন আছেন ?

জয়নাল আবেদিন তালুকদার : যথেষ্ট বয়স হয়েছে, বয়সের ভারে বেশিরভাগ সময়ে অসুস্থ থাকি। সত্যি বলতে সার্বিকভাবে ভালো নেই।

চাঁদপুর কণ্ঠ : ৫২ বছর পূর্বের মুক্তিযুদ্ধের কোন্ স্মৃতি আপনার মনে এখনও জ্বলজ্বল করছে?

জয়নাল আবেদিন তালুকদার : আমরা খবর পেলাম ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর ফুলছোঁয়া গ্রামের তাঁতি বাড়িতে ৯৪ জনের পাকবাহনী দল ঢুকেছে। ততদিনে আমরা চাঁদপুর স্বাধীন করেছি। ফুলছোঁয়া গ্রামের পাক বাহিনীর সাথে আমাদের যে যুদ্ধ হয়েছে তাতে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা আহত হন। এখানে আমাদের সাথে যুদ্ধে ৪ জন পাকিস্তানি আর্মি মারা গেছে। পরে আমরা তাদেরকে মাটি দিয়েছি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : অনেক রক্তে অর্জিত প্রিয় স্বাধীন দেশের বর্তমান অবস্থায় আপনি কতোটুকু সন্তুষ্ট বা অসন্তুষ্ট?

জয়নাল আবেদিন তালুকদার : অনেক রক্তে অর্জিত স্বাধীন দেশের বর্তমান অবস্থায় আমি সন্তুষ্ট আমাদের প্রধানমন্ত্রীর জন্য। বঙ্গবন্ধুর কন্যা আওয়ামী লীগের হাল ধরেছেন, এখন আবার দেশের হাল ধরেছেন এবং আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের হাল ধরেছেন। আওয়ামী লীগের হাল ধরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দলকে ক্ষমতায় নিয়েছেন, দেশের হাল ধরে দেশের উন্নয়ন করেছেন আর আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের উন্নয়ন করেছেন। আমাদেরকে বাসা ভাড়া দিচ্ছেন, উৎসব ভাতা দিচ্ছেন, স্মার্ট কার্ড দিয়েছেন, মূল্যায়ন করেছেন।

চাঁদপুর কণ্ঠ : সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছাতেই মানুষের জন্ম/মৃত্যু। মাফ করবেন, তবুও জানার ইচ্ছা, আপনি আর কতোদিন বাঁচতে চান ?

জয়নাল আবেদিন তালুকদার : বাঁচার ইচ্ছা নিয়ে কোনো ভাবনা নেই। তবে যে ক’দিন বাঁচি আল্লাহ যেন ইমানের সাথে বাঁচিয়ে রাখেন-সেটাই কামনা করি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : বর্তমান বা পরবর্তী প্রজন্মের উদ্দেশ্যে আপনি কী কথা রেখে যেতে চান ?

জয়নাল আবেদিন তালুকদার : বিএনপির কাঁধে ভর করে দেশে যেভাবে স্বাধীনতা বিরোধী চক্র মাথা চাড়া দিয়ে উঠে আসছে, তা আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান বা পরবর্তী প্রজন্মকে বলবো, প্রয়োজনে তোমরা এ বিষয়ে চোখ কান খোলা রাখবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়