প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০
চাঁদপুর পৌরসভার গৌরবের ১২৫ বছরপূর্তি উপলক্ষে ১৬ দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক পক্ষের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল ২২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এ সাংস্কৃতিক পক্ষ উদ্বোধন করা হয়। চাঁদপুর পৌরসভার আয়োজনে ও সাংস্কৃতিক পক্ষ উদ্যাপন পরিষদের ব্যবস্থাপনায় জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সামনে থেকে বিকেল ৫টায় ব্যানার ও নানা রংয়ের বেলুন হাতে নিয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে এসে শেষ হয়। সন্ধ্যায় শুরু হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আলোচনা সভা।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান। তিনি বলেন, চাঁদপুরের রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, জন্ম নিয়েছে প্রচুর সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব। এই জ্ঞানী-গুণীদের শহর চাঁদপুর শহর। তিনি বলেন, মৌলিক সুবিধা নিশ্চিত করার আরেকটি জায়গা হচ্ছে পৌরসভা। পৌরসভাকে সচল রাখতে নিয়মিত হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদান করতে হবে। তাহলেই একটি সুন্দর শহর গড়া যাবে।
তিনি বলেন, সংস্কৃতি চর্চা যত হবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ততই সুদৃঢ় হবে। সংস্কৃতি চর্চাকে অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, গত ক’দিন আগে বাংলাদেশের মেয়েরা সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আমরা পরিসংখ্যানে দেখলাম বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে চাঁদপুরে প্রায় ১১৫৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্য থেকে ১৬টি দল ফাইনাল খেলায় অংশ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ও ২০১১ সালে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলেতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপের উদ্যোগ নিয়েছেন। আর সেই ফল সাফ ফুটবল টিমে মেয়েরা চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।
চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক পক্ষের উদ্বোধকের বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আবৃত্তি পরিষদ ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আহ্কাম উল্লাহ। তিনি বলেন, আমার ছোট ভাই ও বোনের শ্বশুর বাড়ি চাঁদপুর। চাঁদপুরের সাথে আমার আত্মীয়ের সম্পর্ক রয়েছে। আমি জরুরি কাজের জন্যে আসতে পারিনি। তার জন্যে দুঃখিত। তবে চাঁদপুরের ইলিশ খেতে অবশ্যই আসবো। সাংস্কৃতিক কর্মীদের দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা সকলে কাজ করবো।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) সুদীপ্ত রায়। তিনি বক্তব্যে বলেন, একটি দেশ ও একটি জাতি সংস্কৃতি ছাড়া এগিয়ে যেতে পারে না। এই চাঁদপুরে অনেক গুণীজন ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের জন্ম হয়েছে। সংস্কৃতির কোনো বিকল্প নেই। সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে চাঁদপুরকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
আনন্দধ্বনি সংগীত একাডেমীর অধ্যক্ষ রফিক আহমেদ মিন্টু ও বর্ণচোরা নাট্যগোষ্ঠির সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌধুরীর যৌথ সঞ্চালনায় সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক সংগঠক ও জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক অজয় কুমার ভৌমিক ও চাঁদপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী মাঝি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক পক্ষ উদ্যাপন পরিষদের সমন্বয়ক জিয়াউল আহসান টিটো।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলন, জেলা কালচারাল অফিসার আয়াজ মাবুদ ও বিশিষ্ট ছড়াকার ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়া।
অনুষ্ঠানে চাঁদপুর পৌরসভার সচিব আবুল কালাম ভূঁইয়া, নির্বাহী প্রকৌশলী এএইচ শামসুদ্দোহা, চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আবদুর রশিদ, চাঁদপুর পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মফিজ উদ্দিন হাওলাদার, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সৈয়দ মুশিউর রহমানসহ পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।