প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২২, ০০:০০
ফরিদগঞ্জ উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের বকেয়া বিল পরিশোধের জন্যে মাইকিং করতে গিয়ে স্থানীয় ক্ষুব্ধ জনতা কর্তৃক ৫ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মারধর ও সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে মেঘনা পাড়ের এক জমিদার ও বিএনপির সাবেক নেতাসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ মামলার খবর শুনে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষার্থী ছাড়াও বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছে। মানববন্ধনে বক্তারা অবিলম্বে উক্ত মামলা ও পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএমের প্রত্যাহারের দাবি তুলেছেন।
মামলার আসামী উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও রূপসা বাজার ব্যবসায় কমিটির সভাপতি জামাই ফারুক (৪৬) ও জামাল হোসেনকে (৩৫) পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, পল্লী বিদ্যুতের বকেয়া বিলা আদায়ের জন্যে গত ২০ জুন সকাল ১১টায় জোনাল অফিসের বাবুল মিয়া ব্যাটারী চালিত অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে ওই এলাকায় মাইকিং করতে যায়। এ সময় বিদ্যুতের অব্যাহত লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে স্থানীয় ক্ষুব্ধ জনতা তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ খবর পেয়ে পল্লীবিদ্যুতের এজিএম মোঃ মহসিন ও সহকারী প্রকৌশলী আবুল কালামসহ কয়জন ঘটনাস্থলে গেলে ক্ষুব্ধ জনতা তাদের উপরও চড়াও হয়। এক পর্যায়ে নিরুপায় হয়ে পল্লী বিদ্যুতের ৫ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী ওই এলাকার জমিদার খ্যাত সৈয়দ মেহেদী হাছান চৌধুরীর উপস্থিতিতে তাঁর বসতবাড়িতে অবস্থান নেয়ার পর ক্ষুব্ধ জনতা সেখানেও তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে পল্লী বিদ্যুতের লোকজনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
মামলার প্রধান আসামী সৈয়দ মেহেদী হাছান চৌধুরী বলেন, এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের অব্যাহত লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনতা তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে আমার বসতবাড়িতে পল্লীবিদ্যুতের লোকজনকে নিরাপদে হেফাজতে রেখে বিষয়টি সমঝোতা করে আবার তাদেরকে পুলিশের উপস্থিতিতে বিনা বাধায় চলে যেতে সাহায্য করেছি। এখন দেখি ওরা চলে গিয়ে উল্টো আমাকে প্রধান আসামী করে মামলা দেয়ার বিষয়টি উদ্দেশ্যমূলক বলে আমি মনে করি।
এ নিয়ে এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান কাউছারুল আলম কামরুল ইসলাম তাৎক্ষণিক কোনো বক্তব্য দিতে রাজি নয় উল্লেখ করে এ সংবাদদাতাকে বলেন, তিনি পরে লিখিত আকারে ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে বক্তব্য দিবেন।
পল্লী বিদ্যুতের ফরিদগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম মোঃ প্রকৌশলী কামাল হোসেন জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা রয়েছে বিদ্যুতের বকেয়া বিল আদায় করতে। বিল পরিশোধ না করলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করারও সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ওই ঘোষণা বাস্তবায়ন হিসেবে গ্রাহকের বকেয়া বিল পরিশোধের অনুরোধ জানিয়ে এলাকায় মাইকিং করতে গেলে স্থানীয় জনতা পল্লী বিদ্যুতের লোকজনকে অহেতুক মারধর করা ছাড়াও কয়েক ঘন্টা তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। পরে পুলিশের সহযোগিতায় তাদেরকে উদ্ধার করা হয়েছে।
ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মোঃ শহীদ হোসেন বলেন, সরকারি কাজে বাধা দেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে সৈয়দ মেহেদী হাছান চৌধুরীকে প্রধান আসামী করে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৭/৮ জনের বিরুদ্ধে ফরিদগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।