প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২১, ০০:০০
লঞ্চ চলাচল শুরুর প্রথম দিনেই জরিমানা গুণতে হলো চাঁদপুর টু ঢাকা রুটের দ্রুততম যাত্রীবাহী লঞ্চ ঈগল-৩। অতিরিক্ত যাত্রী ও ৬০ শতাংশের অধিক ভাড়া আদায় করায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চাঁদপুর লঞ্চঘাটে এ জরিমানা করেন।
ঈগল-৩ লঞ্চটি বিকেল ৪টায় ঢাকা সদরঘাট থেকে ছেড়ে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। লঞ্চের নিচতলা, দোতলায় ডেকের সকল অংশ লোকে লোকারণ্য ছিলো। যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপে ২য় ও ৩য় তলার কেবিনের আশেপাশে ফাঁকা স্থানেও মানুষ বিছানা বিছিয়ে অবস্থান নেয়। অথচ বিআইডব্লিওটিএ থেকে পূর্বেই নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেয়া হয়েছিলো কোনো ভাবেই ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী বুধবার সকালে লঞ্চঘাট পরিদর্শনের সময় জানিয়েছিলেন, নিয়ম ভঙ্গ হলেই গুণতে হবে জরিমানা।
ঈগল-৩ লঞ্চে ঢাকা থেকে চাঁদপুর আসা ফরিদগঞ্জ উপজেলার মোঃ মাঈন উদ্দিন নামের এক যাত্রী চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান, সাধারণ সময় লঞ্চের নিচতলায় চেয়ারগুলোর ভাড়া দেড়শ’ টাকা নেয়া হয়। করোনাকালীন অতিরিক্ত ৬০ শতাংশ ভাড়া যোগ করলে ২৪০ টাকা নেয়ার কথা, কিন্তু আমাদের কাছ থেকে ২৮০ টাকা আদায় করছে। এ নিয়ে আমরা লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা বলেন, ‘সব লঞ্চেই এমন। ভাড়া না থাকলে উঠেছেন কেন?’
সাধারণ ডেকের ভাড়া টিকিটে ১১৫ টাকা লেখা থাকলেও তার ওপর কালো কালি দিয়ে লেখা হচ্ছে ১৮০ টাকা। করোনাকালীন অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ভ্রমণের সময় কেবিনের ভাড়া অপরিবর্তিত থাকার কথা থাকলেও প্রতিটি সিঙ্গেল কেবিন ৮শ’ থেকে ১ হাজার টাকা করে নেওয়ারও অভিযোগ করেন যাত্রীরা।
ঈগল-৩-এর দ্বিতীয় তলার সিঙ্গেল কেবিনে করে আসা মনির হোসেন নামক অপর যাত্রী চাঁদপুর কণ্ঠকে বলেন, ৮শ’ টাকা ভাড়া দিয়ে একটি সিঙ্গেল কেবিন পেলাম। তবুও কেবিন পাওয়া যাচ্ছিলো না। আমাকে এক স্টাফ বলেছে এটা নিলে নিন, নইলে একটু পর এই টিকেটও পাবেন না।
লঞ্চের অতিরিক্ত ভাড়ার প্রতিবাদের বহু যাত্রী লঞ্চে থেকেই ফেসবুকে পোস্ট করেন। একাধিক যাত্রী জেলা প্রশাসনের হেল্প লাইনে বিষয়টি অভিযোগ করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিশেষ টিম সন্ধ্যা ৭টায় চাঁদপুর লঞ্চঘাটে অবস্থান নেয়। লঞ্চঘাটে লঞ্চ ভিড়তেই অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ ও যাত্রীদের টিকেটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের সত্যতা পেয়ে তাৎক্ষণিক শেখ ব্রাদার্স নেভীগেশন কোং-এর মালিকানাধীন লঞ্চ ঈগল-৩ কে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
জরিমানার বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট জানান, লঞ্চ কর্তৃপক্ষের এমন বিধি-নিষেধ ভঙ্গসহ বেশি ভাড়া আদায়ে বিষয়টি থামাতে যাত্রীদেরই এগিয়ে আসতে হবে। যাত্রীরা যখন দেখবেন, লঞ্চের যাত্রী ৫০ শতাংশ হয়ে গেছে, তখন তারা নেমে অন্য লঞ্চে উঠবেন। আমাদের অবহিত বা অভিযোগ করলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থাগ্রহণ করবো। আগামীতেও চাঁদপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া বা চাঁদপুরে আসা যে সকল লঞ্চ নিয়মবহির্ভূত কাজ করবে তাদেরকে জরিমানা গুনতে হবে।