প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০
আবুল বাশার (৩৮) নামে কচুয়ার এক ব্যবসায়ীর বস্তাবন্দী গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত শনিবার সে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ২৪ ঘন্টা পর পুলিশ তার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে দাউদকান্দি থানা এলাকা থেকে।
নিহতের শ্যালক রবিউল জানান, নিহত আবুল বাশার পৌর বাজারে ইকরা ভ্যারাইটিজ স্টোরের স্বত্বাধিকারী। প্রতিদিনের ন্যায় আবুল বাশার ২ এপ্রিল শনিবার সকাল তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আসেন। দুপুরে বাজার থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে তার নিজ বাড়ি কোয়া চাঁদপুরের হাজী বাড়িতে দুপুরের খাবার খাওয়ার উদ্দেশ্যে দোকান থেকে বেরিয়ে যান। সন্ধ্যা পর্যন্ত দোকানে ফিরে না আসায় দোকানের কর্মচারীরা উদ্বিগ্ন হয়ে তার মোবাইলে ফোন দেন। কর্মচারীরা তাকে না পাওয়ার বিষয়টি তার স্ত্রীকে জানায়। তখন আত্মীয়-স্বজনরা তাকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। খোঁজ না পাওয়ায় শনিবার রাত ১০টায় এ ব্যাপারে আবুল বাশারের পরিবারের পক্ষ থেকে কচুয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
পুলিশ অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে খুঁজতে থাকে। পুলিশ অনুসন্ধানে জানতে পারে, বিকেলে কচুয়া বাইপাস সড়কে কড়ইয়া গ্রামের ইব্রাহিমের ছেলে মুসা (২০) নামের এক মাছের আড়ত ব্যবসায়ীর সাথে তাকে দেখা যায়। কচুয়া থানা পুলিশ সে সূত্র ধরেই শনিবার রাত ৩টায় কচুয়া বিশ্বরোডে অবস্থিত মুসার মাছের আড়তে অনুসন্ধান চালিয়ে আবুল বাশারের রক্তভেজা লুঙ্গি, গামছা ও বিছানার চাদরসহ দেয়ালের বিভিন্ন স্থানে রক্তের চিহ্ন দেখতে পায়।
পুলিশ একাধিকবার আবুল বাশারকে কচুয়া থানায় নিয়ে আসার জন্য মুসার মুঠোফোনে অনুরোধ করে। রাত ১২টার পর মুসার ফোনে আর সংযোগ পাওয়া যায়নি। সে সূত্র ধরে কচুয়া থানার পুলিশ আশপাশের সকল থানায় ব্যবসায়ী আবুল বাশারের নিখোঁজ সংবাদ ও ছবি পাঠিয়ে দেয়। এরই মধ্যে রোববার বিকেল ৩টায় কচুয়া থানা পুলিশ সংবাদ পায়, দাউদকান্দি উপজেলার রায়পুর গ্রামে একটি বস্তাবন্দী গলাকাটা লাশ পাওয়া গেছে। এ সংবাদের ভিত্তিতে কচুয়া ও দাউদকান্দি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ফিংগারফ্রিন্টের মাধ্যমে নিখোঁজ বাশারের মরদেহ শনাক্ত করে।
এদিকে নিহত বাশারের গ্রামের বাড়িতে স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে উঠে। আবুল বাশার কোয়া চাঁদপুর হাজী বাড়ির মৃত আঃ মান্নানের ছেলে। তার স্ত্রী, ১ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে স্থানীয় অধিবাসীরা বিক্ষোভ মিছিল করে।
কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মহিউদ্দিন জানান, নিখোঁজ বাশারের লাশ উদ্ধার করে দাউদকান্দি থানা পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্যে কুমিল্লার মর্গে প্রেরণ করেছে। গোয়েন্দা পুলিশের একটি ঊর্ধ্বতন টিম হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ করছে। তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মুসার আড়তের ম্যানেজার ও এক কর্মচারীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।