বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০২২, ০০:০০

প্রভাবশালীদের কাছে জিম্মি ফরিদগঞ্জ উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি
এমকে মানিক পাঠান ॥

ফরিদগঞ্জ উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির সভাপতি ও সহ-সভাপতিসহ ১০টি পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রার্থীদের মধ্যে গত মঙ্গলবার প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তবে গত ১৪ মার্চ সোমবার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় নির্ধারণ করা থাকলেও কেউই প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করায় এবার জমজমাট নির্বাচন হবে বলে অনেকেই মন্তব্য করছে। চলতি মাসের ২৪ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে ১শ’ ৯৮ সমিতির মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে ১শ’ ৯৮ ভোটারই তাদের ভোট প্রয়োগ করবেন।

প্রতি ৩ বছর পর উক্ত সমিতির পরিচালনা কমিটির নির্বাচন হয়ে আসছে। দেশ স্বাধীনের পর গত ৫০ বছরে উপজেলা কেন্দ্রীয় সমিতির মোট ২৪ জন সভাপতি তাদের দায়িত্ব পালন করে গেলেও কার্যত প্রভাবশালী কয়েকজনের স্বার্থসিদ্ধি হয়েছে। অসহায় সমবায়ীদের উল্লেখযোগ্য কোনো স্বার্থ সংরক্ষণ হয়নি বলে বেশ ক’জন সমবায়ী তাদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ফরিদগঞ্জ উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি বর্তমানে নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে আছে। এক সময়ে উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির অধীনে মোট ৪শ’ ৫০টি সমিতি ছিলো। বর্তমানে ওই সংখ্যা কমে বিভিন্ন নামে মাত্র ১শ’ ৯৮টি সমিতি রয়েছে।

উক্ত সমিতির নিজস্ব জায়গায় ৩৮টি দোকানঘর থাকলেও নিয়মিত পাচ্ছে না দোকান ভাড়া। জরাজীর্ণ দোকানের সংস্কার না করায় বেশ ক’টি চলমান দোকানের ভাড়া আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না। জানা যায়, দোকান ভাড়া বকেয়া রয়েছে প্রায় ২০ লাখ টাকা। শুধু তাই নয়, গত কয়েক বছর পূর্বে উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্র ভা-ারী মহল মার্কেট সংলগ্ন ওই সমিতির জায়গায় নির্মাণ করা দোকান ভাড়ার জন্য সমিতির সাথে হয়নি কোনো যুক্তিপত্র, নেই কোনো জামানত। বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে ১শ’ ৯৮টি সমিতির প্রায় হাজার হাজার অসহায় সমবায়ী সদস্যদের স্বার্থ আদায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রয়েছে বিপাকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির সম্পূর্ণ জায়গা ভোগদখল নিয়ে রয়েছে নানা জটিলতা। সমিতির ভাড়া দেয়া দু’টি দোকানের ভাড়া আদায়কে কেন্দ্র করে আদালতে রয়েছে দু’টি মামলা। এদিকে ওই সমিতিতে কর্মরত ৬ জন অবসরে গেলে সমিতি থেকে তাদের প্রাপ্য গ্রাচ্যুয়িটির মোট ২৫ লাখ টাকা পরিশোধ করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। নিয়মিতভাবে দোকান ভাড়া না পাওয়ায় অর্থ সঙ্কট দেখিয়ে উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির কার্যক্রম বর্তমানে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে।

কাছিয়াড়া এলাকার একজন সমবায়ী হানিফ কাজী সমিতির নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নির্দিষ্ট সময় পর সমিতির নেতা নির্বাচন হয় ঠিকই। কিন্তু অসহায় সমবায়ীদের উন্নয়ন করতে দেখি না। তারা নিজেদের উন্নয়নের গুরুত্বটাই বেশি দেন। তিনি আরো বলেন, সমবায়ীদের সঞ্চিত অর্থ দিয়ে সমিতির নামে জায়গা সম্পদ হয়েছিল। কিন্তু হাতেগোণা কয়জন তাদের ক্ষমতার দাপটে সমিতির স্বার্থ বিলীন করে দিচ্ছে।

বদরপুর এলাকার আরেক সমবায়ী তছলিম ভেন্ডারও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এক সময়ে সাড়ে ৪শ’ সমিতি ছিল। কিন্তু নানা অব্যবস্থাপনার কারণে বর্তমানে মাত্র ১শ’ ৯৮টি সমিতি রয়েছে। এবারের বার্ষিক সাধারণ সভায় সমবায়ীদের স্বার্থে লিখিতভাবে বিস্তারিত দাবি তুলে সাড়ে ৩ঘণ্টা বক্তব্য দিয়েও সমবায়ীদের স্বার্থে কোনো লাভ হয়নি। এখন আপনার (এ প্রতিবেদক) কাছে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিয়ে কী আর লাভ হবে।

এ নিয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির সভাপতি আবদুছ ছালাম জুয়েল বলেন, সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে সমবায়ীদের স্বার্থ আদায়ের জন্য নিজের শ্রম, মেধা ও সমিতি থেকে আমার নামে প্রাপ্ত সম্মানীর টাকা সমবায়ীদের স্বার্থে ব্যয় করেছি। সমিতি থেকে কোনো স্বার্থ নেয়ার চিন্তা কখনোই মাথায় আনিনি।

উপজেলা পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় অফিসার মশিউর রহমান ওই সমিতির চলমান দুরবস্থার কথা স্বীকার করে বলেছেন, এখানে আমার যোগদানের পূর্বে ওই সমিতির জায়গা, দোকান ঘরের মালিকানাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত করেছে। কিন্তু এ তদন্ত রিপোর্টে কী পাওয়া গেছে তা এখনো আমি হাতে পাইনি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়