বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২২, ০০:০০

চাঁদপুর শহরে পুলিশ-স্বেচ্ছাসেবক দল সংঘর্ষ ॥  আহত অর্ধশত
গোলাম মোস্তফা ॥

চাঁদপুর শহরে পুলিশ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঝে আকস্মিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় অর্ধশত আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে পুলিশ সদস্যও রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ারসেল ও শর্টগানের গুলি নিক্ষেপ করেছে ৪০ রাউন্ড। গতকাল ৯ মার্চ বুধবার বিকেলে চাঁদপুর শহরের জেএম সেনগুপ্ত রোডস্থ মুনিরা ভবন তথা বেগম মসজিদের সামনের সড়কে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রায় ২০ মিনিট ধরে সংঘর্ষ চলে। পরে পুলিশের অ্যাকশনে বিক্ষোভকারীরা পিছু হটে।

সংঘর্ষ থামার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আসিফ মহিউদ্দিনের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের বাসভবনে প্রবেশ করে তল্লাশি চালায়। তল্লাশিকালে দুজনকে আটক করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসবাদ করে ছেড়ে দেয়া হয়।

দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল গতকাল বিকেলে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয়। চাঁদপুর শহরের জেএম সেনগুপ্ত রোডে বেগম মসজিদের সামনে একটি ট্রাকে অস্থায়ী মঞ্চ করে সমাবেশ করছিলো জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল। প্রত্যক্ষদর্শীসহ বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, দীর্ঘ সময় ধরে রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ চলতে থাকায় পুলিশ সমাবেশ সংক্ষিপ্ত করার আহ্বান জানায়। এরপরও সমাবেশ চলতে থাকায় পুলিশ বাধা প্রদান করলে সংঘর্ষ শুরু হয়।

পুলিশ জানায়, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীরা প্রথমে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকলে পুলিশ বেগম মসজিদের গেইটের ভেতরে ঢুকে আশ্রয় নেয়। তখনও বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। ইটের আঘাতে সদর মডেল থানার ওসিসহ ২০ পুলিশ সদস্য আহত হয়। এ ঘটনায় যে ট্রাকটি অস্থায়ী মঞ্চ করে সমাবেশ করছিলো সেটি পুলিশ জব্দ করে। যার নং ঢাকা মেট্রো-ন-১৩-৭৫৯৮।

জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব ইব্রাহিম কাজী জুয়েল জানান, শান্তিপূর্ণভাবে আমরা মিছিল শেষে বিক্ষোভ সমাবেশ করছিলাম। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই পুলিশ এসে নেতা-কর্মীদের ওপর অতর্কিত লাঠিচার্জ শুরু করে। পরে তারা টিয়ারসেল ও গুলি ছোড়ে। এতে আমাদের ৫০ নেতা-কর্মী আহত হয়।

এদিকে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীদের মাঝে সংঘর্ষ চলাকালে এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বন্ধ দোকানপাটের সার্টারে হামলা চালায় ও বেগম মসজিদের গ্লাসে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আসিফ মহিউদ্দিন জানান, পুলিশ যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে রাস্তা ছেড়ে দিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীদের অনুরোধ করে। এতে নেতা-কর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এ ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৩০ রাউন্ড শর্টগান ও রাবার বুলেট এবং ১০ রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। বিক্ষোভকারীদের হামলায় চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ, নতুন বাজার ফাঁড়ির ইনচার্জসহ ২০ পুলিশ সদস্য আহত হন।

তিনি আরো বলেন, ঘটনার সাথে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে এ ঘটনায় সংবাদমাধ্যমের ৩ জন কর্মী আহত হন। সব মিলিয়ে মোট পুলিশ, পথচারী ও দলীয় নেতা-কর্মীসহ অর্ধ শতাধিক আহতের খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে ঘটনার পর পরই চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনার আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তাৎক্ষণিক ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণে অভিযান শুরু করে।

এদিকে সন্ধ্যায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব ইব্রাহিম কাজী জুয়েল জানান, সন্ধ্যা ৭টার দিকে অর্ধ শতাধিক পুলিশ তার বাসা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছে। তিনি তার পরিবারকে হয়রানির অভিযোগ করেন।

সাংবাদিকদের সাথে জেলা বিএনপি নেতার অশোভন আচরণ

গোলাম মোস্তফা ॥ চাঁদপুর বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচি পালনকালে সাংবাদিকদের সাথে বারবার অসদাচরণ করে আসছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডঃ সলিম উল্লা সেলিম। গতকাল ৯ মার্চও তিনি একই আচরণ করেন। এদিন চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মসূচি পালনকালে পুলিশের সাথে নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তাতে পুলিশসহ অনেক নেতা-কর্মী আহত হন। পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে ব্যাপক পুলিশ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের বাসভবনে প্রবেশ করে তল্লাশি চালায়। পুলিশের এ তল্লাশিকালে পেশাদারিত্বের কারণে সাংবাদিকগণও পুলিশের সাথে ভেতরে প্রবেশ করে ছবি তুলতে গেলে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডঃ সলিম উল্লা সেলিম ছবি তুলতে বাধা প্রদান করে বলেন, ‘কী এমন হইছে এখানে, কী বালের ছবি তুলতে হবে’। শুধু তাই নয়, তিনি বাজে ভাষায় সাংবাদিকদের নিয়ে আজেবাজে মন্তব্য করেন। এ নেতার এমন অশ্লীল কথায় উপস্থিত সকল সাংবাদিক প্রতিবাদ করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসেন জেলা বিএনপির আরেক নেতা জসিম উদ্দিন বাবুল খান। এ সময় বাবুল খান বলেন, আমি বিষয়টি নিজ চোখে দেখেছি, আপনারা একটু শান্ত হোন।

উপস্থিত সাংবাদিকরা বলেন, শুধু আজকেই নয়, বিগত সময়ে অনেক কর্মসূচিতে তিনি সাংবাদিকদের সাথে খারাপ আচরণ করে যাচ্ছেন। আজকের এ আচরণ বিগত সময়ের সকল কিছুকে ছাড়িয়ে গেছে। আমরা এখানে আমাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে এসেছি। বাসভবনে পুলিশ প্রবেশের পর আমরা প্রবেশ করেছি, সেলিম ভাই সে সময় সাথেই ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়