শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার ॥

দেশের অন্যতম নদীবন্দর চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে অসংখ্য ডুবোচরের কারণে নাব্যতা সংকট চলছে। এতে একদিকে যেমন শুষ্ক মৌসুমে নদীতে ভারি নৌযান চলাচল ব্যাহত হয়, অন্যদিকে ইলিশসহ গভীর পানির বিভিন্ন প্রজাতির মাছের বিচরণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বেশ কয়েক বছর ধরে এ অবস্থা চলে আসলেও সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নেই পর্যাপ্ত ড্রেজিং ব্যবস্থা। এ অবস্থায় নদীর নাব্যতা বাড়াতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে পরিকল্পিতভাবে নদীতে ব্যাপকহারে ড্রেজিংয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন ভুক্তভোগী ও সংশ্লিষ্টরা।

ঢাকাসহ দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে দেশের দক্ষিণাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল তথা বঙ্গোপাসারে নৌ-যাতায়াতের প্রধান রূট চাঁদপুর। জেলার মতলব উত্তরের ষাটনল থেকে হাইমচরের চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নৌপথে পদ্মা ও মেঘনা নদী বহমান। চাঁদপুরের নৌ-পথে প্রতিদিন ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের শ’ শ’ নৌযান চলাচল করে থাকে। এর মধ্যে যাত্রীবাহী লঞ্চ, পণ্যবাহী জাহাজ, কার্গো ও ইঞ্জিনচালিত ট্রলার অন্যতম। অথচ নাব্যতা সংকটের কারণে অনেক এলাকায় নৌযান চলাচল করতে পারে না। সে ক্ষেত্রে বাড়তি দীর্ঘ পথ ঘুরে চলাচল করতে গিয়ে সময় ও অর্থের অপচয় হয়ে থাকে।

চাঁদপুরের রাজরাজেশ^র ও মধ্যচর এলাকার বেশ কয়েকজন জেলে বলেন, আমাদের এলাকার নদীতে অনেক ডুবোচর জেগে আছে। এ কারণে নদীর গভীরতা কমে গেছে। আগের মতো এখন আর মাছ পাওয়া যাচ্ছে না নদীতে। বিশেষ করে ইলিশসহ গভীর নদীর মাছ পাওয়া যাচ্ছে কম। নদীতে ব্যাপক হারে ড্রেজিং করলে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। নইলে আগামীতে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে।

চাঁদপুরের নদীতে চলাচলকারী বিভিন্ন নৌযানের চালক ও শ্রমিকরা জানান, নদীতে অনেক ডুবোচর জেগে ওঠায় এবং বিভিন্ন এলাকায় গভীরতা কমে যাওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে ওইসব এলাকা হয়ে ভারি নৌযান চলাচল করা সম্ভব হয় না। তখন অনেক পথ ঘুরে যাতায়াত করতে হয় আমাদের। এতে সময় বেশি লাগছে, ব্যয়ও বাড়ছে। মাঝে মাঝে ডুবোচরে আটকা পড়ে নৌযান। এসব এলাকা চিহ্নিত করে পর্যাপ্ত পরিমাণে ড্রেজিং করা হলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।

বিআইডব্লিউটিএ’র চাঁদপুরস্থ উপ-পরিচালক ও বন্দর কর্মকর্তা কায়সারুল ইসলাম বলেন, চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীর বিভিন্ন অংশে অনেক ডুবোচর আছে। এছাড়া কিছু এলাকার নদীতে নাব্যতা (গভীরতা) কম। এ কারণে শুষ্ক মৌসুমে ওইসব এলাকা দিয়ে নৌযান চলাচল করতে যেয়ে আটকে যায়। এ কারণে অনেক নৌযান দূরবর্তী এলাকা হয়ে চলাচল করে। চাঁদপুরের নদ-নদীর বর্তমান যে অবস্থা তাতে ডুবোচর জেগে ওঠা স্থান ও গভীরতা কম থাকা এলাকায় ড্রেজিং করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে এ বছরও আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পত্র দিয়েছি। তবে প্রতিবছর সরকারি পর্যায়ে কিছু কিছু এলাকায় ড্র্রেজিং হয়। বর্তমানেও আলুর বাজার এলাকায় নদীতে ড্রেজিং চলছে। সারা বছর নৌপথ সচল ও স্বাভাবিক রাখতে আরো ড্রেজিং প্রয়োজন। চাঁদপুর শহরের মাদ্রাসা রোডস্থ বিকল্প লঞ্চঘাটের সামনে জেগে ওঠা ডুবোচরের কারণে গত কয়েক বছর ধরে শুষ্ক মৌসুমে ভাটার সময় লঞ্চ আসা-যাওয়া করতে সমস্যা হয়। ইতিমধ্যে এখানে কিছু ড্রেজিং হয়েছে। আরো ড্রেজিং প্রয়োজন।

এদিকে দেশের অন্যতম ইলিশ গবেষক ড. আনিসুর রহমান চাঁদপুরের নদীতে ইলিশের বিচরণ ও আহরণ প্রত্যাশার চেয়ে কম হওয়ার পেছনে ডুবোচর জেগে ওঠা এবং নদীর নাব্যতা কমে যাওয়াকে দায়ী করেছেন। এ নিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই গণমাধ্যম ও বিভিন্ন সভা-সেমিনারে পরিকল্পিতভাবে ব্যাপক হারে ড্রেজিং করে নৌ-চ্যানেল স্বাভাবিক রাখার প্রস্তাব করে আসছেন তিনি। এমনকি রাষ্ট্রীয়ভাবে নদী এলাকায় নাব্যতা নিরসনে সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে ড্রেজিং করে নাব্যতা নিরসনের লক্ষ্যে নৌযান চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্যে বলা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়