প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:০০
চাঁদপুরের কৃতী সন্তান অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। চাঁদপুর ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদ আরটি-পিসিআর ল্যাব স্থাপনে তাঁর সহযোগিতা ছিলো উল্লেখ করার মতো। তাঁর নেতৃত্বে একটি চৌকষ টিম ল্যাবটি চালু করে এবং টানা একমাস তাঁরা এই ল্যাবে দায়িত্ব পালন করেন।
গৌতম বুদ্ধ দাশ ১৯৬৩ সালে চাঁদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম স্বদেশ রঞ্জন দাশ এবং মায়ের নাম সাবিত্রী রাণী দাশ। ১৯৮৫ সালে তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি বিষয়ে ¯œাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৬ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোল্ট্রি নিউট্রিশন বিষয়ে ¯œাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৮ সালে তিনি হিউম্যান রিসোর্চ ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি এবং ২০১২ সালে পোল্ট্রি নিউট্রিশন বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি ২০০০ সালে সিভাসুতে প্রফেসর হিসেবে যোগ দেন। ১ম মেয়াদে ২০১৮ সালের ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি সিভাসুর উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ২০১৮ সালের ৯ ডিসেম্বর থেকে দ্বিতীয় মেয়াদে চার বছরের জন্যে তাঁকে পুনরায় নিয়োগ দেন। তিনি সিভাসুর ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের অ্যানিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড নিউট্রিশন বিভাগের অধ্যাপক। বিশ্ববিদ্যালয়টির আরেকটি অনুষদ খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান অনুষদের ডীন হিসেবে তিনি দুই বছর দায়িত্ব পালন করেন। অ্যানিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড নিউট্রিশন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে ৯ বছর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এছাড়াও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির সিন্ডিকেট এবং একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য।
বাংলা একাডেমি থেকে ২০০৫ সালে ‘পোল্ট্রি উৎপাদন’ শিরোনামে তাঁর একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। এছাড়াও বিভিন্ন জার্নালে তাঁর ২৫টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
যাঁরা একুশে পদক পাচ্ছেন
বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশের ২৪ বিশিষ্ট নাগরিককে ২০২২ সালের একুশে পদক দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ভাষা আন্দোলনে পেয়েছেন মোস্তফা এমএ মতিন (মরণোত্তর) ও মির্জা তোফাজ্জল হোসেন (মুকুল) (মরণোত্তর)। শিল্পকলার নৃত্যে জিনাত বরকতউল্লাহ, সংগীতে নজরুল ইসলাম বাবু (মরণোত্তর), ইকবাল আহমেদ ও মাহমুদুর রহমান বেণু, অভিনয়ে খালেদ মাহমুদ খান (মরণোত্তর), আফজাল হোসেন ও মাসুম আজিজ।
মুক্তিযুদ্ধে একুশে পদক পাচ্ছেন চারজন। তাঁরা হলেন : বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব অধ্যক্ষ মোঃ মতিউর রহমান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী (মরণোত্তর), কিউএবিএম রহমান ও আমজাদ আলী খন্দকার।
সাংবাদিকতায় পাচ্ছেন এমএ মালেক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মোঃ আনোয়ার হোসেন, শিক্ষায় অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ, সমাজসেবায় এসএম আব্রাহাম লিংকন ও সংঘরাজ জ্ঞানশ্রী মহাথের।
ভাষা ও সাহিত্যে কবি কামাল চৌধুরী ও ঝর্ণা দাশ পুরকায়স্থ।
এছাড়া গবেষণায় ড. মোঃ আবদুস সাত্তার ম-ল, দলগতভাবে ড. মোঃ এনামুল হক (দলনেতা), ড. সাহানাজ সুলতানা এবং ড. জান্নাতুল ফেরদৌস একুশে পদক পাচ্ছেন।
নীতিমালা অনুযায়ী নির্বাচিত প্রত্যেককে এককালীন নগদ ৪ লাখ টাকাসহ ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেয়া হয়। ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে চালু করা একুশে পদক সরকার প্রতি বছর বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে দিয়ে থাকে।
বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাহিত্যিক, শিল্পী, শিক্ষাবিদ, ভাষাসৈনিক, ভাষাবিদ, গবেষক, সাংবাদিক, অর্থনীতিবিদ, দারিদ্র্য বিমোচনে অবদানকারী, সামাজিক ব্যক্তিত্ব ও প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় পর্যায়ে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৬ সাল থেকে একুশে পদক দেয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গতবছর একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন চাঁদপুরের আরেক কৃতী ড. সমীর কুমার সাহা।