প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করলেন জাহিদুল ইসলাম রোমান
উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর অপচেষ্টা
এমপির নিজ ইউনিয়ন ও নিজ কেন্দ্রে নৌকা পরাজয়ের দায় কার?
ফরিদগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে নিজ দল তথা আওয়ামী লীগের বিজিত প্রার্থীদের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান। এমন পরাজয়ে তিনি পাল্টা অভিযুক্ত করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং বিজিত প্রার্থীদের। সংবাদ সম্মেলনে দেয়া তাদের বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করে নিজেদের ব্যর্থতাকে ঢাকার জন্যে অন্যের উপর দোষ চাপানোর অপচেষ্টা উল্লেখ করে চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম রোমান বলেন, এটি উদোর পি-ি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর অপপ্রয়াস। তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং বিজিত প্রার্থীদের প্রতি পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, এমপি শফিকুর রহমান সাহেবের নিজ ইউনিয়ন এমনকি নিজ কেন্দ্রে নৌকার যে শোচনীয় পরাজয় ঘটেছে তার দায়ভার কে নেবে?
|আরো খবর
গত ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ফরিদগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ১৬ জানুয়ারি রোববার উপজেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে বিজিত ১০জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে ৮জন উপস্থিত ছিলেন। সেখানে বিজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রূপসা উত্তর ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ওমর ফারুক ফারুকী। তিনি ১০ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ তথা নৌকার প্রার্থীদের পরাজয়ের জন্যে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় সাবেক এমপি এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম রোমানের উপর দায় চাপিয়ে বলেন, নৌকার বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান এবং নৌকাকে পরাজিত করার জন্যে তাদের ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের কারণে নৌকার প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রশাসন ও উপজেলা চেয়ারম্যান ভয়ভীতি ও আতঙ্ক ছড়িয়ে দলীয় কর্মীদের এলাকা ছাড়িয়েছে। এক কথায় ফরিদগঞ্জে নৌকাকে পরাজিত করতে প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ নেতারা একাট্টা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য চাওয়া হয় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম রোমানের কাছে। তখন তিনি বলেন, সংবাদ সম্মেলনে আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ কাল্পনিক ও খুবই হাস্যকর। এটা নিজেদের অযোগ্যতা, অগ্রহণযোগ্যতা, অনিয়ম এবং দুর্নীতি অন্যের ঘাড়ে চাপানোর অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। রোমান বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমানের নিজ ইউনিয়নে নৌকা তৃতীয় হয়েছে, এমনকি তাঁর নিজ কেন্দ্রেও নৌকা পরাজিত হয়েছে। এর দায়ভার কার? এছাড়া অন্যান্য ইউনিয়নের কোনোটিতে নৌকা তৃতীয়, কোনোটিতে চতুর্থ হয়েছে। অথচ ১৩ ইউনিয়নে নৌকার মনোনয়ন এমপি শফিকুর রহমানের পছন্দ অনুযায়ীই দেয়া হয়েছে। ১০ ইউনিয়নে নৌকার এমন শোচনীয় পরাজয়ের কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমান যে কতটা জনবিচ্ছিন্ন এবং দল বিচ্ছিন্ন তা এই মনোনয়ন এবং নির্বাচনই প্রমাণ করে। মোটা অংকের টাকা নিয়ে অগ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের মনোনয়ন এনে দিয়ে নৌকার প্রার্থীদের এমন ভরাডুবি এমপি নিজেই ঘটিয়েছেন। এর জন্যে এমপি নিজেই দায়ী।
চেয়ারম্যান রোমান আরো বলেন, যে তিনজন জয়লাভ করেছেন তাদের বিজয়ের পেছনে আমার এবং দলের ভূমিকা ছিল। তারা আমাদের সাথে নির্বাচন নিয়ে নিয়মিত যোগাযোগ করেছে। তিনি বলেন, সারাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্যে দলের সর্বোচ্চ ফোরাম থেকে প্রশাসনের প্রতি নির্দেশনা ছিল। প্রশাসন তাই করেছে। ফলে নির্বাচনের ফলাফল যা হবার তাই হয়েছে। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে পেরে সন্তুষ্ট। এর ফলে সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, জনগণ ভোট না দিলে কি প্রশাসন বা উপজেলা চেয়ারম্যান ভোটের বাক্স ভরিয়ে দিবে?
তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রতি অনুরোধ করে বলেন, দলের ক্ষতি যা করেছেন আল্লাহর ওয়াস্তে আর করবেন না। দলের মধ্যে আর বিভাজন করবেন না। এখনো সময় আছে সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলের জন্যে, এলাকার উন্নয়নে কাজ করুন। দলকে নিরাপদ রাখুন। আগামী সংসদ নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আবার বিজয়ী হতে হবে সে লক্ষ্যে এলাকায় দলকে গোছান।