সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   প্রাইভেটকারের ধাক্কায় বুয়েট শিক্ষার্থী নিহত: ডোপ টেস্টে ধরা পড়ল মাদকাসক্তি
  •   সাতক্ষীরায় ব্যবসায়ীর ২৩ লাখ টাকা ছিনতাই: স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ
  •   চাকা পাংচার হওয়ায় এনজিও কর্মকর্তার মৃত্যু
  •   বরগুনায় টিকটক নিয়ে পারিবারিক কলহ: স্ত্রীকে হত্যা, স্বামী আত্মহত্যার চেষ্টা
  •   মানব পাচারের চক্রের বিরুদ্ধে বিজিবির সফল অভিযান: কিশোরী উদ্ধার, তিন আটক

প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১:০৯

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত

মতলবের দ্বীন ইসলামের পরিবারের দীনহীন অবস্থা

সংবাদদাতা
মতলবের দ্বীন ইসলামের পরিবারের দীনহীন অবস্থা

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহত মতলব উত্তর উপজেলার ফতেপুর পূর্ব ইউনিয়নের মধ্য ঠেঁটালিয়া গ্রামের দ্বীন ইসলামের পরিবারের অবস্থা বর্তমানে শোচনীয় অবস্থায় পৌঁছেছে। পরিবারের একমাত্র সন্তান মাদ্রাসা পড়ুয়া দ্বীন ইসলামই (২২) ছিলো পরিবারের আয়- রোজগারের একমাত্র ব্যক্তি। বছর কয়েক আগে দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ব বরণ করা বাবা শাহআলমকে (৫০) পড়ালেখার পাশাপাশি চায়ের দোকানের কাজে সাহায্য করতেন দ্বীন ইসলাম। তার মৃত্যুতে পুরো পরিবার এখন অসহায় হয়ে পড়েছে।

সরজমিনে গিয়ে জানা গেছে, নিহত দ্বীন ইসলামের দাদা মরহুম ইদ্রিস মিয়ার জীবদ্দশায় আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো ছিলো না। দুই শতক জায়গার মধ্যে তাদের ছোট্ট একটা দোচালা ঘর। ঘরের চারদিকে বেড়া ও ছাউনি পাটখড়ির। ভিটেবাড়ির এই দুই শতক জায়গা তাও আবার অধিগ্রহণ করে নিয়ে গেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। এরপর ধার-দেনা করে ইদ্রিস মিয়া তার স্ত্রী, দুই ছেলে শাহআলম আর শাহজাহান এবং দুই নাতি দ্বীন ইসলাম ও সামিউলকে নিয়ে বাঁধের ভেতর একটু জায়গা ক্রয় করে কোনোরকমে বসবাস করে আসছিলেন। কিন্তু ইদ্রিস মিয়া মারা যাবার পর দ্বীন ইসলামের দাদী লতিফা বেগম দ্বীন ইসলামের ভাই সামিউল, বাবা শাহআলম ও মাতা শিল্পী বেগমকে পরের বাসায় আয়ার কাজ করে লালন পালন করতেন। যখন এলাকায় করার মতো কোনো কাজ ছিল না, তখন অসহায় হয়ে পড়ে দ্বীন ইসলামের বাবা শাহআলম। তিনি তার দুই ছেলে দ্বীন ইসলাম ও সামিউল এবং তার স্ত্রী শিল্পী বেগমকে নিয়ে ঢাকার যাত্রাবাড়ি থানা সংলগ্ন ফুটপাতে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতে থাকেন। ফুটপাতেই একটি ছোট্ট চায়ের দোকান দিয়ে কোনোরকম জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন । এই চায়ের দোকান দিয়ে রোজগার করে শাহআলম তার বড়ো ছেলে দ্বীন ইসলামকে কোরআনে হাফেজ বানিয়েছেন। দ্বীন ইসলাম মাদ্রাসায় লেখাপড়ার পাশাপাশি তার বাবার দোকানে এসে সহযোগিতা করতেন। দ্বীন ইসলাম দোকানে কাজ করে দেশের বাড়িতে থাকা তার দাদীর জন্যে টাকা পাঠাতেন।

জুলাই-আগস্ট মাসে শুরু হওয়া আওয়ামী লীগ সরকার পতনের ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন দ্বীন ইসলাম। গত ৫ আগস্ট ছাত্র- জনতার আন্দোলনে যাত্রাবাড়িতে যোগ দেন। আন্দোলনে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। ওইদিন পুলিশের গুলিতে যাত্রাবাড়ি থানা সংলগ্ন গেইটে নিহত হন তিনি। তার নিথর দেহ পড়ে থাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। পরে লাশ এনে তার নিজ এলাকায় দাফন করা হয়।

নিহত দ্বীন ইসলামের পরিবারের অবস্থা এখন খুবই করুণ। তার বাবা এক সময় দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ববরণ করায় এবং তিনি অকাল মৃত্যুবরণ করায় তার পরিবারটি অর্থাভাবসহ নানা সঙ্কটে হতাশার সমুদ্রে ভাসছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়