প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২১:৩২
শত্রুতা উদ্ধারে এ কেমন নিষ্ঠুরতা!
বিষ্ণুপুরে মাছ চাষের বাঁধ কেটে দিলো প্রতিপক্ষ।। স্রোতে ভেসে গেলো ১৭ লাখ টাকার মাছ
জমি সংক্রান্ত বিরোধে ১৭ লাখ টাকার মাছ হারালেন মুন্না হাওলাদার নামে এক মাছ চাষী। শত্রুতা উদ্ধারে এমন নিষ্ঠুরতম ঘটনা ঘটেছে চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণুপুরে। রাতের আঁধারে মাছ চাষের খামারের বাঁধ কেটে দিয়ে নিষ্ঠুরতম কাণ্ড ঘটিয়েছে প্রতিপক্ষ। মাছের খামারের বাঁধ কেটে ফেলায় পানির স্রোতের সাথে ভেসে যায় মুন্না হাওলাদারের চাষকৃত সব মাছ। চাঁদপুর সদর উপজেলার ১নং বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডস্থ পূর্ব খেরুদিয়া গ্রামের হাজরা বাড়িতে শত্রুতা উদ্ধারে এমন ঘটনায় সবাই হতবাক। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ওই গ্রামের ভুক্তভোগী মাছচাষী মুন্না হাওলাদার জানান, তিনি প্রায় দুবছর পূর্বে হাজরা বাড়ির মোঃ ইব্রাহিম হাজরার কাছ থেকে এক একর ৭২ শতাংশ জমি ১২ বছরের জন্যে পোষানি (ইজারা) নেন। তারপর তিনি ওই জমিতে বাঁধ নির্মাণ করে সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করে আসছেন। এদিকে ইব্রাহিম হাজরা এবং তাদের আত্মীয় মৃত সায়েদ আলী হাজরার ছেলে সফিক হাজরা, শরবত আলী হাজরার ছেলে ওয়াদুদ হাজরা গংয়ের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিলো প্রতিপক্ষের। তারই সূত্র ধরে ঘটনার আগের দিন সফিক হাজরা এবং ওয়াদুদ হাজরা মুন্না হাওলাদারকে ইজারা (পোষানি) নেয়া জমি ছেড়ে দেয়ার কথা বলেন। মুন্নার অভিযোগ, তারা তাকে হুমকি স্বরূপ বলেন, তুই যদি জমি না ছেড়ে দিস তাহলে কীভাবে তোর মাছ থাকে সেটি দেখবো। তার পরেরদিন সকালেই মুন্না তার শাশুড়ির ফোন পেয়ে জানতে পারেন তার মাছ চাষের বাঁধ ভেঙ্গে সমস্ত মাছ ভেসে যাচ্ছে। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, বাঁধের মাঝখানে বিশাল জায়গা জুড়ে কেটে দেয়া হয়েছে। পানির স্রোতের সাথে ভেসে যাচ্ছে তার চাষকৃত হাইব্রিড তেলাপিয়া, রুই, কাতল, কালিবাউস, পাঙ্গাসসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। এতে তার প্রায় ১৭ লাখ টাকার মাছ চলে গেছে বলে জানান তিনি। ইজারা দেয়া জমির মালিক ইব্রাহিম হাজরা ও তার পুত্র একই কথা জানিয়ে বলেন, কিছু টাকার প্রয়োজনে আমরা আমাদের এক একর ৭২ শতাংশ জমি মুন্নার কাছে পোষানি দেই। সে এখানে গত দুবছর ধরে মাছ চাষ করে আসছে। আমাদের সাথে সফিক হাজরা এবং ওয়াদুদ হাজরার জমির বিরোধ নিয়ে আদালতে মামলা রয়েছে। কিন্তু তারা আমাদের সাথে শত্রুতা নিয়ে রাতের আঁধারে মুন্নার মাছ চাষের বাঁধ কেটে দেয়। এটি খুবই দুঃখজনক। তারা আমাদের সাথে আদালতে মামলায় বুঝুক। কিন্তু একজন তৃতীয় ব্যক্তির এই ক্ষতি করাটা মানুষের কাজ হতে পারে না। কারো সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধে ব্যক্তিগত শত্রুতা উদ্ধারে এমন জঘন্যতম কাজের সুবিচার চেয়ে চাঁদপুরের প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি। এ বিষয়ে সফিক এবং ওয়াদুদ হাজরাদের বক্তব্য নেয়ার জন্যে তাদের বাড়িতে গেলে তাদেরকে পাওয়া যায়নি।