শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ৩০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাজীগঞ্জে তাল গাছ থেকে পড়ে আহত যুবকের মৃত্যু
  •   অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন চৌধুরী মারা গেছেন
  •   ছেলের মামলা-হামলায় বাড়িছাড়া বৃদ্ধা মা
  •   মতলব উত্তরে ইকবাল হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
  •   মতলবে ১০ কেজি গাঁজাসহ আটক ৩

প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:১০

মাঠটি রক্ষার দাবি না মানলে সেটি হবে অন্যায়

অনলাইন ডেস্ক
মাঠটি রক্ষার দাবি না মানলে সেটি হবে অন্যায়

গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠের প্রথম পৃষ্ঠায় 'শাহরাস্তিতে বিদ্যালয়ের মাঠ রক্ষায় ভবন নির্মাণের স্থান পরিবর্তনের দাবি' শিরোনামের একটি সংবাদ পাঠকদের বিশেষ নজর কেড়েছে। সংবাদটিতে লিখা হয়েছে মূলত মাঠ রক্ষার আকুতি। তবুও সংবাদের পূর্ণ বিবরণটাই তুলে ধরছি। বিবরণটি হচ্ছে : শাহরাস্তি উপজেলার উল্যাশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ রক্ষায় ভবন নির্মাণের স্থান পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। স্থানীয়দের ঈদগাহ, বিদ্যালয় ও পার্শ্ববর্তী মাদরাসার শিক্ষার্থী এবং এলাকার শিশুদের একমাত্র খেলার ওই মাঠ রক্ষায় ইতোমধ্যে উপজেলা প্রকৌশলী বরাবর আবেদন করেছেন স্থানীয় মো. গোলাম মোস্তফা। আবেদনের সাথে একমত হয়ে ইতোমধ্যে গণস্বাক্ষর করেছে এলাকাবাসী। জানা গেছে, ওই বিদ্যালয়ে ১ম শ্রেণি থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত ৩ শ' ৩০ জন শিক্ষার্থীর একাডেমিক কার্যক্রম চলমান। প্রতিষ্ঠাকালে ৩৩ শতাংশ ভূমি নিয়ে বিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে মাঠের উত্তর পাশে আরও ৭ শতাংশ ভূমি ক্রয় করা হয়েছে। বর্তমানে মাঠের পূর্ব পাশে একটি একাডেমিক ভবন রয়েছে। সম্প্রতি পশ্চিম পাশে থাকা পুরাতন ভবনটি ভেঙ্গে সেখানে বড়ো পরিসরে একটি নতুন ভবন নির্মাণের বরাদ্দ আসে। ভবনটি এই স্থানে নির্মাণ করা হলে বিদ্যালয়ের মাঠটি আরও সংকীর্ণ হয়ে যাবে। ফলে এলাকাবাসীর ঈদের নামাজ আদায়, বিদ্যালয় ও পার্শ্ববর্তী মাদরাসা এবং এলাকার শিশুদের খেলার একমাত্র জায়গাটি হারিয়ে বিপাকে পড়তে হবে।

এলাকার মোঃ মোশাররফ হোসেন ও এমরান হোসেন জানান, উল্যাশ্বর ও দাদিয়াপাড়া গ্রামে কোনো খেলার মাঠ নেই। স্থানীয় এলাকার শিশু-কিশোরদের একমাত্র খেলার মাঠ এটি। যেহেতু মাঠের উত্তরে বিদ্যালয়ের নিজস্ব ভূমি রয়েছে, সেহেতু ভবনটি মাঠের উত্তরে নির্মাণ করা হোক। এতে শিশুদের খেলাধুলার জায়গাটি ঠিক থাকবে। একই এলাকার বাসিন্দা মো. মনির হোসন জানান, এলাকাবাসীর ঈদের নামাজ আদায় ও কারো মৃত্যু হলে এ মাঠেই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। মাঠটি ছোট হয়ে গেলে সামাজিক অনেক কার্যক্রম পিছিয়ে যাবে। বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র মাহবুব আলম ও ৮ম শ্রেণির ছাত্রী খাদিজা আক্তার জানান, আমাদের বিদ্যালয়ের মাঠটি আরও বড়ো হলে আমরা খেলাধুলার সুযোগ পাবো।

মাঠ রক্ষায় উপজেলা প্রকৌশলী বরাবর আবেদনকারী মো. গোলাম মোস্তফা জানান, প্রস্তাবিত স্থানে নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হলে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা করার মতো কোনো মাঠ থাকবে না এবং শরীরচর্চা করানোর জায়গাও থাকবে না। প্রস্তাবিত স্থান থেকে ৪০ ফুট উত্তরে উত্তর-পশ্চিম দিকে নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হলে উক্ত খেলার মাঠ রক্ষা ও জায়গার সমস্যা লাঘব হবে।বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জামাল উদ্দিন জানান, ভবনটি প্রস্তাবিত স্থান থেকে সরিয়ে উত্তরে নির্মাণ করা হলে বিদ্যালয়ের মাঠ প্রশস্ত হবে এবং এলাকাবাসীর সুবিধা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইয়াসির আরাফাত জানান, বিষয়টি শুনেছি। সরেজমিনে পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

দুটি গ্রামের একটি মাঠ উল্যাশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ। মাঠটির রয়েছে বহুবিধ ব্যবহার। এটি বছরে দুটি ঈদের নামাজের জন্যে ঈদগাহ, জানাজাসহ সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান এবং বিদ্যালয়টির ও পাশের মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের ও এলাকার শিশুদের খেলার জন্যে নিত্য ব্যবহৃত হয়। সেজন্যে এ মাঠটির অস্তিত্ব রক্ষার অনিবার্যতা রয়েছে। এই অনিবার্যতাকে উপেক্ষা করে নিকটবর্তী জায়গা থাকা সত্ত্বেও মাঠের জায়গা দখল করে তথা মাঠকে সঙ্কুচিত করে নূতন ভবন নির্মাণ অযৌক্তিক ও অন্যায় হবে। এতে উন্নয়নের প্রাক্কালে সামাজিক প্রতিক্রিয়া যাচাইয়ের বাধ্যবাধকতাকে অস্বীকার করা হবে। সেটাও হবে আরেকটি অন্যায়। অতএব, এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাব্যক্তি হিসেবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)-এর হস্তক্ষেপ বাঞ্ছনীয়। আশা করি কল্যাণবুদ্ধ কর্মকর্তা হিসেবে ইতোমধ্যে শাহরাস্তিতে খ্যাতি অর্জনকারী ইউএনও মহোদয় উল্যাশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ রক্ষায় ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবেন। মোদ্দা কথা, তিনি মাঠও রক্ষা করবেন এবং নূতন ভবন নির্মাণের পথও সুগম করবেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়