শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা গণফোরামের কর্মী সমাবেশ
  •   নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিনে ফরিদগঞ্জে অবাধে ইলিশ বিক্রি
  •   পিকনিকে যাওয়া শিক্ষার্থীর মরদেহ মেঘনায় ভেসে উঠলো দুদিন পর
  •   নেতা-কর্মীদের চাঁদাবাজি না করার শপথ করিয়েছেন এমএ হান্নান
  •   বিকেলে ইলিশ জব্দ ও জরিমানা

প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ২৩:০৫

বরফ সংকটে কর্ম হারাচ্ছে শ্রমিক : হুমকিতে জিওল মাছের বেচা-বিক্রি

অনলাইন ডেস্ক
বরফ সংকটে কর্ম হারাচ্ছে শ্রমিক : হুমকিতে জিওল মাছের বেচা-বিক্রি

মা ইলিশের নিষেধাজ্ঞা চলায় ইলিশ পরিবহন, মজুদ, ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ রাখতে জেলার সকল বরফ কল চালু না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা টাস্কফোর্স। তবে এতে করেই যেনো দেশী মাছ বেচাকেনায় জড়িত শহরের বড়স্টেশন মাছঘাটের ৫ শতাধিক শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। একই সাথে দেশীয় মাছ বেচা-বিক্রি পড়ছে হুমকিতে--দাবি ব্যবসায়ীদের। ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুরে মাছঘাটে গেলে বরফ না থাকায় শ্রমিকদের অলস সময় পার করতে দেখা গেছে। শ্রমিকরা জানান, পদ্মা-মেঘনায় মা ইলিশের অভয়াশ্রমের কারণে প্রশাসন বরফ কলগুলো সব বন্ধ রেখেছে। আমরাও প্রশাসনের সাথে সব বরফ কল বন্ধের সিদ্ধান্তে একমত। কিন্তু ঘাটে আসা দেশীয় মাছগুলো বরফ সংকটে পচে নষ্টে হচ্ছে। পাইকাররা নিয়মিত বরফ না থাকায় ঘাটে আসতে চাচ্ছে না। এতে করে প্রায় ৪শ'র অধিক শ্রমিক এখন বরফ সংকটে কর্মহীন হয়ে পড়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, ধেররা, ওয়্যারলেস, বিপণীবাগ, বৌ বাজার, চৌরাস্তা, ভাটিয়ালপুরসহ আরও বেশ কয়েক স্থানে দেশীয় মাছের বেচা-বিক্রি হচ্ছে। সেখানে বরফ না থাকায় ভোররাতে নিলামে ওঠা মাছ দিনব্যাপী বিক্রি করতে গিয়ে তা ক্রেতার হাত হয়ে বাসায় পৌঁছানো পর্যন্ত নরম ও পচে যাচ্ছে। পুরাণবাজারের খাল রাস্তার প্রবীণ মাছ বিক্রেতা আব্দুল মালেক মিয়া ও মোঃ মানিক বলেন, বরফ না থাকায় মাছ পচে যাচ্ছে। জিওল মাছের জন্যে বরফ লাগবে। বিশেষ করে চিংড়ি, পুঁটি, রুই, কাতলা, তেলাপিয়া, বিগহেডসহ অন্যান্য মাছ দ্রুত নরম হয় বলে বরফ অতি জরুরি। ক্রেতারা বলছেন, বরফ না থাকায় রুই, কাতলা, পাঙ্গাস মাছকে কৃত্রিমভাবে বাঁচিয়ে রেখে আড়তে এনে মাছ বিক্রি করা হচ্ছে। যাকে অক্সিজেনের মাছ বলা হচ্ছে। এগুলো স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়াতে পারে। ঘাটের শ্রমিক মোঃ হোসেন বলেন, আমরা শুধু জিওল মাছ বিক্রি করছি। শরিয়তপুর থেকে আসা রুই, কাতল, কার্পু, মৃগেলসহ বাংলা মাছগুলো এবং খুলনা থেকে আসা চিংড়ি মাছগুলো ঘাটে নিয়ে বসে আছি। কিন্তু বরফ না থাকায় পাইকাররা মাছ নিতে আগ্রহী নয়। আর এতে করে দিনে লাখ লাখ টাকার মাছ প্রতিদিন ক্ষতির সম্মুখে রয়েছে। বড়োস্টেশনের প্রায় অর্ধশত আড়তদারও এখন বড়ো ধরনের লসের হুমকিতে রয়েছে। তাই ঘাটে অন্তত একটি বরফ কল চালুর অনুমতি প্রয়োজন। এ বিষয়ে চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ শবে বরাত সরকার বলেন, ইলিশ মাছ বেচা-বিক্রি ও সংরক্ষণে ঘাটের কেউ যদি জড়িত থাকে, তাহলে তো আমরা সবাই মিলেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। কিন্তু জিওল মাছের বাজার ধরে রাখতে অন্তত একটি বরফ কল চালু রাখার অনুমতি না দেয়া আমাদের জন্যে বড়ো ধরনের ক্ষতি। বরফ না থাকায় পাইকাররাও এখানে জিওল মাছ কিনতে আসছে না। যার কারণে এখানের প্রায় ৫শ’র অধিক শ্রমিক এখন অভাব অনটনে অলস সময় কাটাচ্ছে। তাই অন্তত একটি বরফ কল চালুর অনুমতি দিতে প্রশাসনের প্রতি আমরা অনুরোধ জানাচ্ছি। চাঁদপুর মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুল বারী জমদার মানিক বলেন, প্রশাসন যদি একটি বরফ কল চালুর অনুমতি দেয়, সেটি প্রয়োজনে নিরব পর্যবেক্ষণে রাখুক যে, এটি ইলিশের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে কিনা। তবে একটি অন্তত বরফ কল অনুমোদন দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, বরফ কল বন্ধের সিদ্ধান্ত আমার একার নয়, বরং এটি জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সর্বসম্মতি সিদ্ধান্ত। কাজেই বিচার বিশ্লেষণ করেই এবার বরফ কল বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রসঙ্গত, চাঁদপুরের হাইমচরের চরভৈরবী হতে মতলব উত্তরের ষাটনল পর্যন্ত পদ্মা মেঘনার ৭০ কিলোমিটার এরিয়ায় ইলিশ অভাশ্রমের কারণে ১৩ অক্টোবর হতে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত মা ইলিশের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২২ দিন ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা, বেচা- বিক্রিসহ পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা দেয় প্রশাসন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়