প্রকাশ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:২০
সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ নয়, চাঁদপুরে বিএনপির জনসমুদ্রে আউয়াল মিন্টুর হুঁশিয়ারি

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন, "সংস্কারের জন্য যৌক্তিক সময়ের কথা বলে দীর্ঘ সময় নেওয়া ঠিক হবে না। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা চাই, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হোক এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা হোক। কোনো ষড়যন্ত্র কাজ করবে না; যে দল ষড়যন্ত্র করবে, জনগণ তাদের সমুচিত জবাব দেবে।"
|আরো খবর
সোমবার বিকেলে চাঁদপুর শহরের হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে চাঁদপুর জেলা বিএনপির আয়োজিত স্মরণকালের অন্যতম বৃহৎ জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি
আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, "আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু সরকারের কাছ থেকে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ চাই। যৌক্তিক সময়ের নামে দীর্ঘসূত্রতা গ্রহণযোগ্য নয়। সরকার কী করতে চায়, কতদিন সময় নেবে, কী কী সংস্কার হবে—এসব বিষয়ে আমরা স্পষ্ট ধারণা চাই।"
তিনি আরও বলেন, "সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রতিটি প্রজন্ম তার পূর্বসূরিদের চেয়ে বেশি দূরদর্শী। ভবিষ্যতে নতুন নতুন সংস্কারের প্রয়োজন হবে। তবে অতিরিক্ত সংস্কার করে লাভ নেই; জনগণের নির্বাচিত সরকার দ্বারা পাস না হলে কোনো সংস্কারই টেকসই হবে না। তাই জরুরি সংস্কার করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে আমরা বলতে পারি আমাদের দেশে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার রয়েছে।"
বিএনপি নেতাকর্মীদের ঐক্যের আহ্বান
চাঁদপুর জেলা বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, "নিজেদের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে হবে। অতীতের ভুলে যেতে হবে। দল যাকে মনোনয়ন দেবে, তার বিজয় নিশ্চিত করতে হবে। বিভক্তির মাধ্যমে সমাধান হবে না। যারা অন্যায় করেছে, তাদের অবশ্যই বিচার হতে হবে। তবে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না।"
আওয়ামী লীগের তীব্র সমালোচনা
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আরও বলেন, "আওয়ামী লীগ সবসময় অন্যায় ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছে। কিন্তু তাদের এসব অপকর্মের ব্যাপারে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে, তখনই দেশ দুর্বৃত্তায়ন ও অপরাধের দিকে ধাবিত হয়েছে। আমরা চাই, তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনা হোক। আওয়ামী লীগ ভোটে অংশগ্রহণ করতে পারবে কি না, তা জনগণই নির্ধারণ করবে।"
স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসভা, নেতৃত্বে শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক
এই জনসভায় ব্যাপক জনসমাগম প্রমাণ করেছে যে চাঁদপুর বিএনপির ঘাঁটি, আর শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের নেতৃত্বের কোনো বিকল্প নেই। চাঁদপুরের প্রতিটি উপজেলা ও ওয়ার্ড থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই জনসভায় অংশ নেন। মিছিলে মুখরিত হয়ে ওঠে শহরের প্রতিটি সড়ক।
চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক-এর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এই জনসভা বিএনপির ইতিহাসে এক অনন্য মাইলফলক। তার নেতৃত্বে চাঁদপুর বিএনপি আজ সুসংগঠিত, শক্তিশালী এবং রাজপথে দৃঢ়ভাবে অবস্থান করছে। এই জনসভা প্রমাণ করেছে, চাঁদপুরের রাজনীতিতে শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের নেতৃত্বই চূড়ান্ত ও অবিসংবাদিত।
জনতার ঢল: চাঁদপুরে বিএনপির ঐতিহাসিক জাগরণ
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা এবং ফ্যাসিবাদের নানা ষড়যন্ত্র মোকাবিলার দাবিতে বিএনপি ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ দিনে ৬৪ জেলায় সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
চাঁদপুরের এই জনসভা ছিল সেই কর্মসূচিরই অংশ। কিন্তু স্বতঃস্ফূর্ত জনস্রোত এটিকে সাধারণ সমাবেশ থেকে বিশাল গণজাগরণে পরিণত করেছে। মিছিল, স্লোগান ও হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণে চাঁদপুরের রাজপথ প্রমাণ করেছে যে বিএনপি এখানেই সবচেয়ে শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তি।
চাঁদপুর বিএনপির নেতৃত্বে শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের কোনো বিকল্প নেই—এই ঐতিহাসিক জনসভা সেটাই আরও একবার প্রতিষ্ঠিত করলো।
প্রতিবেদন: মো. জাকির হোসেন,তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, চাঁদপুর জেলা বিএনপি।
ডিসিকে/এমজেডএইচ