প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৩:২২
চাঁদপুরে ছুরিকাঘাতে নিহত মুক্তিযোদ্ধার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন
বাদ যোহর নিজ বাড়ি প্রাঙ্গনে জানাজা
চাঁদপুর শহরের নিজ বাসায় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোঃ রফিকুল্লাহ কোম্পানির (৭০) এর ময়নাতদন্ত রোববার সকালে চাঁদপুর মর্গে সম্পন্ন হয়েছে।পরে স্বজনদের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়।
|আরো খবর
শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার পর যে কোন সময় শহরের নতুনবাজার লন্ডনঘাট এলাকায় সফিনা আবাসিক হোটেলের পিছনে নিজ বাসায় বিশ্রাম নেয়ার সময় অজ্ঞাত দৃর্বৃত্ত ঘরে ঢুকে একাধিক ছুরিকাঘাত করে নিশংস ভাবে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনা ঘটে। চাঁদপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুদীপ্ত রায় জানান, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে জেলা পুলিশের সঙ্গে সিআইডি ও পিবিআই যৌথভাবে কাজ করছে। এরইমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত রফিকুল্লাহ'র বাসার কেয়ারটেকার মিরাজ হোসেনকে থানায় নেয়া হয়েছে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, পিঠে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে তাকে হত্যা করেছে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা। ধারনা করা হচ্ছে, এসময় বাসায় তিনি একা ছিলেন। এর আগে সন্ধ্যায় রফিকউল্লাহর তিনতলার বাসার দরজা খোলা দেখে ভেতরে প্রবেশ করেন তার বড় ভাইয়ের ছেলে তন্ময়। তিনি দেখতে পান, রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছেন তার চাচা। তবে কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এরইমধ্যে হত্যার কারণ খুঁজতে পুলিশের কয়েকটি দল তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে।
এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল্লাহ নিহতের সংবাদ পেয়ে দলীয় সতীর্থ ও স্বজনরা তার বাসা ও হাসপাতালে ভিড় করেন।
এলাকাবাসী ও তার রাজনৈতিক সতীর্থরা জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল্লাহ একজন সহজ সরল প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। তার বড় ভাই চাঁদপুরের মুক্তিযুদ্ধে প্রথম শহীদ জাবেদের ছোট ভাই। তাঁর কোনো শত্রু থাকতে পারে না। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসির উদ্দীন আহমদ বলেন, রফিক ভাইকে যারা এভাবে হত্যা করেছে তারা কতটা নিষ্ঠুর তা না দেখলে বুঝতাম না। সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম দুলাল বলেন, নির্মম এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের এখনই খুঁজে বের করতে হবে।
অন্যদিকে হত্যাকাণ্ডের সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশের একাধিক সংস্থা। এরইমধ্যে তারা আলামত সংগ্রহ করে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে।
চাঁদপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুদীপ্ত রায় জানান, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে জেলা পুলিশের সঙ্গে সিআইডি ও পিবিআই যৌথভাবে কাজ করছে। এরইমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রফিকউল্লাহর কেয়ারটেকার মিরাজ হোসেনকে আটক করা হয়েছে। আরও কয়েকজনের প্রতিও নজরদারি রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, ব্যক্তিজীবনে বেশ সৌখিন ও অমায়িক স্বভাবের মানুষ ছিলেন রফিকুল্লাহ। তিনি অবিবাহিত ছিলেন। চাঁদপুর শহরের লন্ডনঘাট এলাকায় তাদের পারিবারিক ব্যবসা সফিনা আবাসিক হোটেলের পাশে ২য় তলার একটি কক্ষে একাই বসবাস করতেন। রফিকুল্লাহ একটি বরফ কলের মালিক ছিলেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে তার বড় ভাই জাবেদ হোসেন শত্রুবাহিনীর হাতে শহীদ হন।