বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

মিজান ভাইয়ের জন্যে শোকগাথা

--------হাসান আলী--------
মিজান ভাইয়ের জন্যে শোকগাথা

চাঁদপুর কলেজে প্রথম ক্লাস শেষে যে চারজনের সাথে আমার পরিচয় হয় মিজান ভাই ছিলেন তাঁদের একজন। তিনি জাসদ সমর্থিত ছাত্রলীগের শাজাহান চোকদার-আবদুর রাজ্জাক প্যানেল থেকে ছাত্র সংসদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাঁর চাচাতো ভাই কামাল ভাইও একই প্যানেল থেকে নির্বাচিত ছিলেন। আমি তাঁর স্নেহের পাত্র ছিলাম। কলেজে দেখা হলে সিঙ্গারা-চা খাবার সুযোগ হতো। কিছুদিন আমি মিজান ভাইয়ের ছোট ভাই মাহবুবের গৃহ শিক্ষক ছিলাম। তখন প্রায় প্রতিদিনই তাঁর সাথে আড্ডা হতো। পরবর্তীতে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলে যোগাযোগ কিছুটা দুর্বল হয়ে যায়। চাঁদপুর আসলেই আমাদের দেখা হতো বেশিরভাগ সময় কালীবাড়ি মোড়ে। রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও সম্পর্কের অবনতি ঘটেনি। তিনি চাঁদপুরে আইন পেশায় যুক্ত হলে আমি ততদিনে অনিয়মিত হয়ে পড়ি। দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠে আমার লেখা পড়ে যে তিনজন প্রায় নিয়মিত আমাকে ফোনে প্রতিক্রিয়া জানাতেন তিনি ছিলেন তাদের অন্যতম। আর দুজন হলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ বিএনপির সফিউদ্দিন ভাই ও ওয়ান মিনিটের মালিক সম্পদ সাহা দাদা। মিজান ভাই ডাকসাইটে আইনজীবী কিংবা রাজনীতিবিদ ছিলেন না। ছিলেন মানবিক গুণাবলি সম্পন্ন একজন মানুষ। তাঁর আচার আচরণ, কথাবার্তায় খুব কম মানুষই কষ্ট পেয়েছেন। তাঁর হাসিভরা মুখখানি প্রাণ জুড়িয়ে দিতো। মনুষ্যত্ব অর্জন করার ক্ষেত্রে যখন ভাটার টান লেগেছে, যেনতেন করে টাকা রোজগার কিংবা ক্ষমতার ছায়ায় আশ্রয় নেবার তোড়জোড় যখন তুঙ্গে, তখন মিজান ভাইদের মতো মানুষদের প্রতি একটা টান অনুভব করি।

মিজান ভাইয়ের অকাল মৃত্যুর সংবাদ সকাল বেলা ফেসবুকে দেখে চোখ ঝাপসা হয়ে আসছিলো। আমার টাইম লাইনে মিজান ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ আমাকে ব্যথিত করেছে। কয়েক মাস আগে মাহবুবের ছেলের বিয়েতে গুলশান শুটিং ক্লাবে দেখা হয়েছিল। প্রায় পুরো সময়টাতে আমার হাত ধরে নানান রকমের আলোচনা করলেন। আমার প্রবীণ বিষয়ক কাজ এবং লেখার প্রশংসা করলেন। আমার সাথে প্রবীণ কল্যাণে কাজ করার আগ্রহ দেখিয়েছেন। কিছু দিন আগে আমি চট্টগ্রামে প্রবীণ বিষয়ে কিছু কাজ করার জন্যে গিয়েছিলাম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগে লন্ডন প্রবাসী প্রফেসর ড. হাফিজ টিএ খানের এক সেমিনারে অংশগ্রহণ করার ছবি ফেসবুকে দেখে মিজান ভাই আমাকে ফোন করলেন। বললেন, তুমি যাঁর সাথে ছবি তুলেছ তিনি আমার বন্ধু।

আমার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল বলে চাঁদপুরের যে দুজন প্রায় নিশ্চিত মিজান ভাই তাঁদের মধ্যে একজন। আরেকজন হলেন পুরাণবাজার কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক দেলোয়ার আহমেদ স্যার। মানুষের মৃত্যু একটা সময় মেনে নেয়া যায়। মিজান ভাইকে একদিন আমরা হয়ত ভুলে যাবো। যখন মানুষের মধ্যে আন্তরিকতা, সততা, সরলতার অভাব অনটন দেখা যাবে তখন মিজান ভাইদের মতো মানুষদের প্রসঙ্গ উঠবে। মিজান ভাই মানুষের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা পেয়েছেন। তাঁর মৃত্যু সম্মান-মর্যাদার!

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়