রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫  |   ৩১ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের ঢল

প্রকাশ : ১৮ মে ২০২৫, ০৯:৩৯

চাঁদপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ তরপুরচণ্ডী এলাকায়

পাওয়ার অব অ্যাটর্নির নামে পূর্বে বিক্রিত জমি পুনরায় বিক্রির অভিযোগ!

পাওয়ার অব অ্যাটর্নির নামে পূর্বে বিক্রিত জমি পুনরায় বিক্রির অভিযোগ!
অনলাইন ডেস্ক

চাঁদপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ তরপুরচণ্ডী এলাকায় অবৈধ উপায়ে জমির পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ ফারুক গাজী গং অন্যের পৈত্রিক জমি ক্রয়-বিক্রয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উক্ত জমির বৈধ ওয়ারিশগণ তাদের পৈত্রিক জমির অধিকার রক্ষায় চাঁদপুরের আদালতে মামলা করেছেন। সিআর মামলা নং ১১১০(ক)/২০২৪ (সদর), ধারা পেনাল কোড তৎসহ ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩-এর ৪/৭ ধারা। স্মারক নং ৩১৯, তারিখ ১০/১১/২০২৪ খ্রি.। ইতোমধ্যে এ মামলায় চাঁদপুর বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে ফারুক হোসেন গাজীকে আটক করে গত ১৪ মে ২০২৫ (বুধবার) জেল হাজতেও প্রেরণ করা হয়।

ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, চাঁদপুর সদর উপজেলাধীন সাবেক ২৬ হালে ৪৪নং তরপুরচণ্ডী মৌজার সিএস ১২৬, ৪৩২, ৬৩১ এসএ ১০৬, ৩৯১, ৫৭২, বিএস ১৮৩ খতিয়ানভুক্ত হালে ৫৬৪০, ৫৬৪১, ৫৮৫১, ৫৮৭০, ৫৮৮৫, ৫৮৮৯, ৫৮৯০, ৫৯০১, ৫০৯২ দাগে একুনে .৩২৯৫ একর ভূমির মালিক বাদীর পূর্ববর্তী মৃত কাশেম আলী দেওয়ান। কাশেম আলী দেওয়ান মৃত্যুকালে ৫ পুত্র ও ২ কন্যা রেখে মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু জনৈক ফারুক গাজী কাশেম আলী দেওয়ানের ওয়ারিশগণের মধ্যে যারা পূর্বে তাদের ওয়ারিশের জমি বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে গেছেন তাদের কয়েকজনের কাছ থেকে পাওয়ার দলিল বানিয়ে সে পাওয়ার অব অ্যাটর্নী নেন। এ ঘটনায় মো. ফারুক হোসেন, পিতা মৃত মোতালেব হোসেন, মো. মনছুর দেওয়ান, পিতা মৃত আউয়াল দেওয়ান, মো. মিলন দেওয়ান, পিতা মৃত. আউয়াল দেওয়ানকে বিবাদী করে মামলা দায়ের করেন বাদী মো. আফজাল হোসেন। সে মামলার শুনানি শেষে আদালত পিবিআইকে তদন্ত করার জন্যে নির্দেশনা দেয়। নির্দেশনার আলোকে পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সৈয়দ মো. শাহজাহান কবির বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করেন।

তদন্ত রিপোর্টের আলোকে জানা গেছে, অত্র মামলার অভিযোগে বর্ণিত বিবাদী ১। মো. ফারুক হোসেন গাজী (৫১)-এর বিরুদ্ধে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩-এর ৪(২)/৭(৩) তৎসহ পেনাল কোডের ৫০৬(২) ধারায় অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে এবং অত্র মামলার অভিযোগ বহির্ভূত বিবাদী ২। মো. মনছুর দেওয়ান (৫০), বিবাদী ৩। মো. মিলন দেওয়ান (৩৩)-এর বিরুদ্ধে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০১৩-এর ৪(২) ধারার অপরাধ প্রাথমিক ভাবে প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু অত্র মামলার বিবাদীদের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৪৬৮/৪৭১ ধারার অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।

মামলার বাদী আফজাল হোসেন জানান, বি.এস. ১৮৩নং খতিয়ানে মো. সলেমান দেওয়ান, মনোয়ারা বেগম ও সুফিয়া বেগম ১৭/০৩/২০০২ সালে ১২৮৪ ও ১৭/০৩/২০০২ সালে ১২৮৫নং সাফ কবলা দলিলে বিক্রি করে নিঃস্ব হবার পর পুনরায় ৪/০৫/২০১৪ সালে ৪৩০৫ নং দলিলে ফারুক হোসেনের নিকট পাওয়া অব অ্যাটর্নি দেয়, যা সম্পূর্ণ অবৈধ। পিবিআইয়ের তদন্তেও বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে বাদীর জেঠা মৃত আউয়াল দেওয়ানের ওয়ারিশ বিবাদী মুনছুর দেওয়ান, মিলন দেওয়ান, বিল্লাল দেওয়ানের আর কোনো সম্পত্তি নেই জেনেও লোভের বশীভূত হয়ে বিবাদী ফারুক গাজীর নিকট আমমোক্তারনামা দলিল নং ৩৩১০ মূলে ক্রয় করে।

বাদী আফজাল হোসেন আরো জানান, এল.এ. কেইস নং-০৩/২০১৯-২০ ফারুক হোসেনের ৪৩০৫, ৩৩১০, ৮০৬৩, ৫৩৮৫, ৬০৬১ এই ৫টি দলিলের বিষয়েও আমরা জেলা প্রশাসক মহোদয়কে প্রমাণসহ অভিযোগ দিয়েছি। সে দলিলগুলোর পূর্ব মালিকপক্ষও বিক্রি করে নিঃস্ব হয়েছেন। বিবাদী ফারুক গাজী তার এসব আমমোক্তারনামা দলিল মূলে জেলা প্রশাসকের অধিগ্রহণ শাখা থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, বাকি টাকা নেওয়ার জন্যও পাঁয়তারা চালিয়ে আসছে। অথচ জমির প্রকৃত মালিকগণ এখন পর্যন্ত জমি অধিগ্রহণের কোনো টাকা পায়নি বলে জানান। বর্তমানে বাদী আফজাল হোসেন ও তার ওয়ারিশরা এবং অন্য শরিকগণ তাদের পৈত্রিক বৈধ জমির অধিকার পাওয়ার জন্যে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে এবং মাননীয় জেলা প্রশাসকের সুদৃষ্টি কামনা করেন। একই সাথে যারা অন্যায়ভাবে জমি-ক্রয় বিক্রয় করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে, তাদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন ভুত্তভোগীরা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়