প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
দৃষ্টিকটু বিষয়ে নেতাদের কঠোরতা চাই
পর্যটন এলাকা হিসেবে খ্যাত চাঁদপুর বড়ো স্টেশন শহর রক্ষাবাঁধের মোলহেডের নিয়ন্ত্রণ নিতে এবং এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির স্থানীয় দুগ্রুপ মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সূত্র জানায়, রেলওয়ে বড়ো স্টেশনের ওই পর্যটন এলাকায় অনেক দোকানপাট ও শিশুদের বিনোদনের রাইড রয়েছে। আগে এসব স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে ছিলো। ৫ আগস্ট দেশের পটপরিবর্তনে সেখানকার শিশু রাইডগুলো চালানো বন্ধ রাখা হয়। এখন সেখানে রাইডগুলো চালানো ও দোকানপাটের নিয়ন্ত্রণ এবং চাঁদাবাজি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে যে কোনো সময় সংঘাতের আশঙ্কা করছেন এলাকার সচেতন মহল।
এমন একটি সংবাদ গতকাল মঙ্গলবার চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশের জন্যে সোমবার রাত ১০টায় প্রেসে পাঠানোর কিছুক্ষণ পর জানা গেলো, চাঁদপুর বড়ো স্টেশনে আধিপত্য বিস্তার এবং চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েই গেছে। দশজনের বেশি আহত হয়েছে। মারাত্মকভাবে আহত দুজনকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এ সম্পাদকীয় নিবন্ধটি প্রকাশের পূর্বাপর পরিস্থিতির আরো অবনতি হবার সম্ভাবনা যে নেই সেটা বলা যায় না।
হাজীগঞ্জে টোরাগড় গ্রামবাসী ও মকিমাবাদ গ্রামের একটি বাড়ির লোকজনের মধ্যকার সংঘর্ষে একজন নিরীহ পথচারী কিশোর নিহত ও অর্ধ শতাধিক লোকের আহত হবার ঘটনাটি মন থেকে মুছে যাবার আগেই চাঁদপুর শহরের বড়ো স্টেশনস্থ মোলহেড পর্যটন কেন্দ্রে আধিপত্য বজায়ে দু গ্রুপের মারামারির ঘটনাকে নিঃসন্দেহে ভীষণ দৃষ্টিকটুই মনে হচ্ছে। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও গণমাধ্যমে চাঁদাবাজি সহ কিছু অপ্রীতিকর বিষয় নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে চলে কানাঘুষা, মুখরোচক আলোচনা ও বিভ্রান্তি। এই সুযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি অংশ মানববন্ধন করে ও স্মারকলিপি দিয়ে আগুনে ঘৃতাহুতি দেয়। যে কারণে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে তড়িঘড়ি করে সংবাদ সম্মেলন পর্যন্ত করতে হয়েছে এবং পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়েছে। ক'দিনের ব্যবধানে বড়ো স্টেশনের ঘটনায় আবার নেতাদের জন্যে বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় কিনা সেটা নিয়ে ভাবার অবকাশ তৈরি হয়েছে। আমরা এমন দৃষ্টিকটু ও বিব্রতকর বিষয় এড়াতে বিএনপির জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের তাৎক্ষণিক কঠোর পদক্ষেপ প্রত্যাশা করছি। শুধু বড়ো স্টেশন নয়, অন্য আরো যেসব স্থানে এমন আধিপত্য ও চাঁদাবাজিকেন্দ্রিক ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা আছে বা ঘটনা চলছে, সেখানেও বিএনপি নেতৃবৃন্দের নজরদারি ও কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থাগ্রহণ অতীব জরুরি বলে মনে করছি। দীর্ঘদিনের কর্তৃত্ববাদী স্বৈরাচারী ক্ষমতাসীন তথা শাসক দলের লোকজনের যে চরিত্রে সাধারণ মানুষ ছিলো অতিষ্ঠ, সেটাই যদি ক্ষমতাপ্রত্যাশী দলের লোকজনের মাঝে সাধারণ মানুষ লক্ষ্য করে, তাহলে তারা হতাশা অনুভব করবে এবং এটাতে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে রক্তদানের মর্যাদার হানি ঘটার আশঙ্কায় অনেক কষ্ট পাবে।