প্রকাশ : ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
ব্রীজের নিচেই ফেলতে হবে আবর্জনা?

আমাদের দেশে অধিকাংশ পৌরসভায় নেই সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। বহুবিধ উন্নয়নে দেশি-বিদেশি অর্থায়নে ব্যাপক কাজ হলেও নিজস্ব অর্থায়নে ময়লা-আবর্জনা তথা বর্জ্য ফেলার জন্যে নির্দিষ্ট স্থান তথা ডাম্পিং স্টেশন করতে জায়গা ক্রয় করে পরিকল্পিত কিছু করার চিন্তাই করা হয় না। এমতাবস্থায় পৌর এলাকার কোনো ব্রীজকে টার্গেট করা হয়। আর পথচারী ও যানবাহনের যাত্রীসহ আশেপাশে অবস্থানকারী সকলকে দুর্গন্ধ হজম করতে হয়। এটা যে একটা শহর/পৌর এলাকার জন্যে সৌন্দর্যহানিকর ও আভিজাত্য হরণকারী সেটা প্রথম শ্রেণির পৌরসভা দাবিদার অনেক পৌর পরিষদের কর্তাব্যক্তিরাও বোঝেন না। কথা হলো, বর্জ্য ফেলার জন্যে ব্রীজের পাশ ও খালকে বেছে নিতে হবে কেন? সেটা কি বর্জ্য ফেলার যানবাহন নিয়ে সহজ যাতায়াতে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের সুবিধার্থে? বর্জ্য নিয়ে অব্যবস্থাপনায় ভোগা এমন পৌরসভা চাঁদপুর জেলায় ৪-৫টি রয়েছে। সেজন্যে প্রায়শই গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। যেমনটি হয়েছে গত বৃহস্পতিবার চাঁদপুর কণ্ঠে।
‘কচুয়ায় ব্রীজের নিচে আবর্জনার স্তূপ ॥ জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে’ শিরোনামের সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, কচুয়া পৌরসভার কাঠবাজার সংলগ্ন ব্রীজের নিচে ময়লা আবর্জনার স্তূপ হয়ে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন বস্তায় বস্তায় মুরগীর বিষ্ঠা ও বাজারের ময়লা ফেলে খাল ভরে দুর্গন্ধময় হয়ে পড়ছে ওই এলাকা। এ এলাকায় মসজিদ ও সাব রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখকগণ দাপ্তরিক কাজ করে থাকেন। তাছাড়া কচুয়া বাজারের দোকান রয়েছে এ এলাকায়। প্রতিদিন বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীগণ ওই সড়ক দিয়ে চলাফেরা করে থাকে। ময়লার দুর্গন্ধে পরিবেশ দূষিত হয়ে পড়ছে। ওই সড়কে চলাচলকারীরা জানান, ময়লার দুর্গন্ধে নাক চেপে চলাচল করতে হয়। ফলে ক্রমেই জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে। প্রতিদিন ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে প্রবহমান খালটি ভরাট হয়ে গেছে। স্থানীয়রা খালের কচুরিপানা ও ময়লা পরিষ্কার করে এলাকাটিকে বসবাসের উপযোগী করতে পৌর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তারা আরো জানান, খালের দুপাশের ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের ময়লা-আবর্জনা ফেলার স্থান হয়েছে খালটি। বদ্ধ খালের পানির সঙ্গে ময়লা-আবর্জনা মিশে পচা পানি থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা কচুয়া বাজারে আসতে চান না। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, খালের পচা পানির কারণে বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এছাড়া প্রতিদিন ভোরে খালপাড়ের দুপাশ দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ হাঁটাহাঁটি করেন। তাদের নাক চেপে ধরে চলাচল করতে হয়। কচুয়া পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাসুদ আলম জানান, বাজার ব্যবসায়ীদের ওই স্থানে ময়লা ফেলতে বারণ করা হয়েছে। ময়লা আবর্জনা অপসারণ করার জন্যে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হচ্ছে।
আমরা কচুয়া পৌরসভাসহ যে সকল পৌরসভায় বর্জ্য ফেলার নির্দিষ্ট স্থান তথা ডাম্পিং স্টেশন নেই, সে সকল পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে এই অভাবটি পূরণে উদ্যোগগ্রহণের অনুরোধ জানাতে চাই। আমরা প্রতিটি পৌরসভায় বর্জ্য শোধন করে সেটিকে নানা কাজে লাগাতে গারবেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট করার ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট নীতি নির্ধারকদের ভেবে দেখা উচিত বলে মনে করি। কারণ পরিবেশবান্ধব পরিচ্ছন্ন শহর গড়ার জন্যে এমন প্লান্ট অন্যতম কার্যকর উপাদান হতে পারে বলে আমাদের বিশ্বাস।