শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২০ মহররম ১৪৪৬  |   ৩১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়

প্রকাশ : ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

দাবদাহ মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতি চাই

অনলাইন ডেস্ক
দাবদাহ মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতি চাই

গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে যে, চলতি মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পেরিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ (দাবদাহ) বয়ে যেতে পারে। একই সঙ্গে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস দিতে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি এই পূর্বাভাস দিয়েছে। সোমবার (১ এপ্রিল) আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকার ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কমিটির নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ ছাদেকুল আলম এতে সভাপতিত্ব করেন।

দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এপ্রিল মাসে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এ মাসে দেশে ৫ থেকে ৭ দিন বিক্ষিপ্তভাবে শিলাসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ হালকা বা মাঝারি ধরনের এবং এক থেকে তিন দিন তীব্র কালবৈশাখি ঝড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলেও জানানো হয়েছে পূর্বাভাস প্রতিবেদনে। এতে আরও বলা হয়, এপ্রিলে দেশে দুই থেকে চারটি মৃদু (৩৬ থেকে ৩৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা মাঝারি (৩৮ থেকে ৩৯.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং এক থেকে দুটি তীব্র (৪০ থেকে ৪১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থেকে অতি তীব্র (৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি) তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এ মাসে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি এবং রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকতে পারে। এপ্রিল মাসে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীর পানি সময়বিশেষ দ্রুত বাড়তে পারে। এতে স্বল্পমেয়াদি আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। তবে অন্যত্র, দেশের সব প্রধান নদ-নদীতে স্বাভাবিক প্রবাহ থাকতে পারে বলে দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস প্রতিবেদনে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। মার্চ মাসে সার্বিকভাবে সারাদেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হয়েছে। মার্চে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ ডিগ্রি ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম ছিল। একই সঙ্গে গড় তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম ছিল বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।

এ খবরটিকে দেশের সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে অন্য সকল নাগরিক, সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়, স্থানীয় প্রশাসন এবং সকল পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিগণকে গুরুত্বের সাথে দেখা উচিত। বিশেষ করে ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে ব্যাপক প্রচার চালিয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। যাতে দাবদাহ, ঘূর্ণিঝড়ে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সকলে যার যার অবস্থান থেকে মানসিক প্রস্তুতিসহ আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারে। কথা হলো, আমাদের দেশের আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ ও অধিদপ্তর পূর্বাভাস প্রদানে সঠিকতা রক্ষার ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময় পুরোপুরি সক্ষমতা বা সফলতার পরিচয় দিতে পারে না। সেজন্যে সাধারণ্যে এমন পূর্বাভাস ব্যাপক বিশ্বাসযোগ্যতার আওতায় থাকে না। সে কারণে সচেতন হওয়া এবং সতর্কতামূলক পন্থা অবলম্বনের ক্ষেত্রে অনেকেই উদাসীনতা, এমনকি অবহেলাও প্রদর্শন করে। সবকিছু মাথায় রেখে দাবদাহ, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় কার্যকর ব্যবস্থাগ্রহণে আগাম পদক্ষেপ নিতে হবে সংশ্লিষ্ট সকলকে। দাবদাহের কারণে বিদ্যুৎ ও পানির সঙ্কট কীভাবে নিরসন করা যায়, সম্ভাব্য রোগ-ব্যাধির ব্যাপকতা কীভাবে ঠেকানো যায়, অগ্নিঝুঁকি বা অগ্নি দুর্ঘটনা কীভাবে প্রতিরোধ করা যায় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি বা নির্দেশনা নিয়ে গুরুত্বের সাথে ভাবতে হবে সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তর ও মহলকে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিশেষ করে রেড ক্রিসেন্ট, স্কাউট সহ অন্যান্য সংস্থাকে কীভাবে কাজে লাগানো যায় সে ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনকে ভাবতে হবে পর্যাপ্ত সময় হাতে রেখে।

আমাদের অনেক বদনামের মধ্যেও দুর্যোগ মোকাবেলার সক্ষমতায় রয়েছে বিশ্বখ্যাতি। আশা করি যথাসময়ে প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করে আমরা আসন্ন দাবদাহ ও ঘূর্ণিঝড়ে সৃষ্ট সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবেলা করতে পারবো কাঙ্ক্ষিত মাত্রায়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়