প্রকাশ : ১৮ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০
বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক

প্রচণ্ড দাবদাহ ও অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থাগ্রহণ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় জানানো হয়েছে যে, চাঁদপুর শহরস্থ রেলওয়ে হকার্স মার্কেট ও পালবাজার রেড জোনের আওতায় রয়েছে। এ ব্যাপারে চাঁদপুর কণ্ঠে গতকাল প্রকাশিত সংবাদটি শীর্ষ সংবাদ হয়েছে। সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, প্রচণ্ড দাবদাহে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি বেড়েছে। দেশে চলমান দাবদাহে একটু অসতর্কতায় অগ্নিকাণ্ড ঘটার আশংকা প্রবল। সেজন্যে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশক্রমে চাঁদপুরে প্রচণ্ড দাবদাহ ও অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থাগ্রহণ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের সভাপ্রধানে রোববার দুপুরে তাঁর সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রশাসনের কর্মকর্তা ছাড়াও চাঁদপুর শহরের বড় বড় মার্কেট কমিটির নেতৃবৃন্দ, ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। সভার শুরুতে ফায়ার সার্ভিস, চাঁদপুর উত্তরের উপ-সহকারী পরিচালক মোঃ সাহিদুল ইসলামের কাছ থেকে চাঁদপুর শহরের বড় বড় মার্কেট ও বিপণী বিতানগুলোর অবস্থা জানতে চান জেলা প্রশাসক। ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা চাঁদপুর ও হাজীগঞ্জের কয়েকটি মার্কেটের বর্তমান অবস্থা জানান। এ সময় তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন চাঁদপুর শহরের রেলওয়ে হকার্স মার্কেট ও পালবাজারের কথা। তিনি জানান, হকার্স মার্কেট ও পালবাজার রেড জোনের মধ্যে আছে। এখানে একবার আগুন লাগলে কিছুই থাকবে না। কী কারণে রেড জোনের আওতায় সে বিষয়ে তিনি বলেন, হকার্স মার্কেটের একটি দোকানেও অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র (ফায়ার এক্সটিংগুইসার) নেই। পুরো মার্কেটের গলিপথ একটু ফাঁকাও নেই। ঘিঞ্জি পরিবেশ। বিদ্যুৎ লাইনে ত্রুটি আছে। তাছাড়া রাতে মার্কেট বন্ধ করার পর কলাপসিবল গেট তালা দেয়া থাকে, কিন্তু লোক থাকে না। রাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে ভয়াবহ পরিস্থিতি হবে। এভাবে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা পালবাজারসহ অন্যান্য মার্কেটেও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র না থাকাসহ নানা ত্রুটির কথা জানান।
জেলা প্রশাসক এ প্রসঙ্গে প্রত্যেক মার্কেটে নিজ নিজ সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকেই অধিকাংশ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে থাকে। আর এই শর্ট সার্কিট হয় নিজেদের অসতর্কতার কারণে। দেখা গেছে যে, বিদ্যুতের তার লুজ কানেকশন, জোড়াতালি দেয়া, স্কচটেপ পেঁচানো, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী চার্জে দিয়ে অতিরিক্ত সময় ফেলে রাখা ইত্যাদি কারণে বিদ্যুতের তারে আগুন ধরে যায়। এছাড়াও জ্বলন্ত কয়েল থেকেও আগুন ধরতে পারে। তাই এসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি হকার্স মার্কেট ও পালবাজার ব্যবসায়ী সমিতিকে ফায়ার সার্ভিসের সাথে বসে অতি দ্রুত তাদের পরামর্শ ও নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।
রেলওয়ে হকার্স মার্কেট ও পালবাজার শুধু চাঁদপুর শহরবাসী ও শহরতলীর লোকজনের নিকটই জনপ্রিয় নয়, পুরো জেলাবাসীর নিকট বহুল পরিচিত ও জনপ্রিয়। বিশেষভাবে বলা যায়, সর্বশ্রেণীর ক্রেতাদের নিকট অনেক পছন্দের। সে দুটি স্থানই যদি অগ্নিঝুঁকিতে রেড জোনের আওতায় থাকে, তাহলে অনেক বেশি উদ্বিগ্ন না হয়ে পারা যায় না। ইতিবাচক বিষয় হচ্ছে, রেলওয়ে হকার্স মার্কেট ও পালবাজারে বিদ্যমান ব্যবসায়ীদের কমিটি বেশ সক্রিয়। তারা অগ্নিঝুঁকি এড়াবার জন্যে ত্বরিত ব্যবস্থাগ্রহণে গড়িমসিহীন উদ্যোগগ্রহণ করবে--এটা শুধু ব্যবসায়ী ও ক্রেতারাই প্রত্যাশা করে না, অবশ্যই সচেতন প্রতিটি মানুষই প্রত্যাশা করে।